শিরোনাম
সবজিতে অস্বস্তি, মাছ-মাংসেও ধরা
প্রকাশ : ১৬ জুন ২০২৩, ১৩:৩৯
সবজিতে অস্বস্তি, মাছ-মাংসেও ধরা
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের মাত্রাতিরিক্ত দামে নাভিশ্বাস উঠেছে সীমিত আয়ের মানুষের। অনেকে প্রয়োজনের তুলনায় কম কিনে ফিরছেন ঘরে। তবে গত কয়েক সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি অস্থিরতা দেখা দিয়েছে মাছের বাজারে। সস্তা দরের তেলাপিয়া-পাঙাশের কেজিও ২০০ টাকা ছাড়িয়েছে। যা এখন অনেকাংশে দরিদ্র ও নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষের ক্রয়ক্ষমতার নাগালে নেই।


মাছের সাথে দামে কম যায় না মাংসের বাজারও। মুরগি, গরু ও খাসিসহ সব ধরনের মাংসের দাম মাসখানেক ধরেই চড়া। দেড় মাস আগেও ব্রয়লার মুরগির কেজি ছিল ১৪০-১৫০ টাকা, যা এখন ২২০ টাকার বেশি। আর গত রমজানের পর থেকে গরুর মাংসের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ১০০ টাকা। বর্তমানে যা বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ টাকা দরে। খাসির মাংসের দাম ১২৫০ টাকায় উঠেছে।


মাংসের অতিরিক্ত দামের কারণে সীমিত আয়ের মানুষেরা তেলাপিয়া বা পাঙাশের মতো সস্তা দামের মাছের দিকে ঝুঁকছিলেন। ঠিক তখন থেকেই মাছের দামও বাড়তে শুরু করে। এরই মধ্যে তেলাপিয়া ও পাঙাসের দামও কেজিপ্রতি ৪০ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর ভালো চাহিদার মাছের দাম বেড়েছে কেজিতে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত।


শুক্রবার (১৬ জুন) খিলগাঁও, মালিবাগ, রামপুরা ও মধ্যবাড্ডা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে তেলাপিয়া ও পাঙাশ মাছের দাম এখন প্রতি কেজি ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা। এক সপ্তাহ আগেও যা ছিল ২২০ থেকে ২৩০ টাকার মধ্যে। অন্য মাছের মধ্যে মাঝারি ও বড় আকারের চাষের রুই, কাতলা ও মৃগেল মাছের দাম প্রতি কেজি ৩৪০ থেকে ৪০০ টাকা। এসব মাছের দামও সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর উন্মুক্ত জলাশয়ের (নদ-নদীর) মাছ কিনতে ক্রেতাকে কেজিপ্রতি গুনতে হচ্ছে আরও ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেশি।


বাজারে পাবদা, টেংরা, কই, বোয়াল, চিতল, আইড় ও ইলিশ মাছের যে দাম, তা নিম্নবিত্ত তো বটেই, মধ্যবিত্তেরও নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে এসব মাছের দামও কেজিতে ৫০ থেকে ২০০ পর্যন্ত টাকা বেড়েছে।


মালিবাগ বাজারের মাছ বিক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, পাইকারি বাজারে মাছের টান। খুব চড়া দাম। আমরা মাছ পাচ্ছি না। পেলেও অনেক বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে। তাই বিক্রিও করতে হচ্ছে বেশি দামে।


আবুল হোসেনের কথার সূত্র ধরে মোবাইল ফোনে কথা হয় কারওয়ান বাজার মৎস্য আরতদার সমিতির সভাপতি কামাল হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, নদীতে একদম মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। গত দুই সপ্তাহ হলো ইলিশের মৌসুম শুরু হয়েছে। মাছ ধরা পড়ছে না। সার্বিকভাবে বাজারে সরবরাহ একদম কম।


তিনি বলেন, সামনে কোরবানির ঈদ হওয়ায় ও মাংসের বাড়তি দামের কারণে সাধারণ মানুষ মাছের দিকে বেশি ঝুঁকছেন। কিন্তু চাহিদার তুলনায় জোগান একেবারে কম। এ কারণে দামও বাড়তি। ইলিশের সরবরাহ বাড়লে স্বাভাবিকভাবে অন্য মাছের দাম কমে যাবে। এছাড়া কোরবানির ঈদের পর মাছের চাহিদা কমবে। তখন দামও কমে আসবে।


চড়া দামের বাজারে মাছ-মাংস বাদ দিয়ে যারা সবজির দিকে ঝুঁকছেন, তাদের জন্যও কোনো সুখবর নেই। টানা অস্থিতিশীল সবজির দাম গত সপ্তাহে কিছুটা কমলেও তা আবার বেড়েছে। ৫০ টাকার মধ্যে শুধু গ্রীষ্মকালীন পটল-ঢেঁড়স মিলছে। অন্য সব বারোমাসি সবজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে।


সবজি বিক্রেতা হাসান মিয়া জানান, টানা বেশি থাকার পরে সবজির দাম কিছুটা কমেছিল। এ সপ্তাহে আবার অল্প অল্প করে বাড়ছে। কয়েকদিন বৃষ্টির কারণে সবজির সরবরাহ কমায় দাম বাড়তি।


তিনি বলেন, সবজির দাম এবার মৌসুমজুড়েই বেশি ছিল। এখনো কমেনি। নতুন যেসব সবজি আসছে, সেগুলোর দাম সামান্য কম।


বিবার্তা/মাসুম

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com