
প্রতিবছর রমজান মাসে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় রেমিট্যান্স তথা প্রবাসী আয় বাড়ে। এ বছর রোজার শুরুতে বেড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহ। মার্চ মাসের ২৪ তারিখ পর্যন্ত বৈধ বা ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রায় ১৬০ কোটি ডলার সমপরিমাণ অর্থ দেশে এসেছে। এ হিসাবে দৈনিক গড়ে এসেছে ৬ কোটি ৬৬ লাখ ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, চলতি মাসের প্রথম ২৪ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১৫৯ কোটি ৭৫ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার। তার মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১৯ কোটি ৫৬ লাখ ৭০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৩ কোটি ৫৪ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১৩৬ কোটি ১৫ লাখ ৪০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৪৮ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।
গত বছরের মার্চে দৈনিক গড়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ৬ কোটি ডলারের মতো। চলমান ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি মাসের শেষে রেমিট্যান্স ২ বিলিয়ন ডলার ছাড়াবে। সোমবার (২৭ মার্চ) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত হালনাগাদ পরিসংখ্যানে এ তথ্য জানা গেছে।
সোমবার বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, দীর্ঘদিন প্রবাসী আয়ে নেতিবাচক ধারা ছিল, এখন ইতিবাচক ধারা দেখা যাচ্ছে। তবে যে হারে জনশক্তি রপ্তানি হচ্ছে সেই হারে রেমিট্যান্স দেশে আসছে না। কেন আসছে না এ বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার।
তিনি জানান, এখন আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। প্রণোদনায় খুব একটা সুফল আসেনি। তাই এই প্রণোদনা কতদিন থাকবে, নাকি তুলে নেওয়া হবে এটা এখন ভাবতে হবে।
রেমিট্যান্স বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে বিভিন্নভাবে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সর্বশেষ সেবার বিনিময়ে দেশে রেমিট্যান্স আয় আনতে ফরম সি পূরণ করার শর্ত শিথিল করেছে। পাশাপাশি সেবা খাতের উদ্যোক্তা ও রপ্তানিকারকদের ঘোষণা ছাড়াই ২০ হাজার মার্কিন ডলার বা সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আনার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
রেমিট্যান্স বাড়াতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সেগুলোর মধ্যে আছে বৈধ উপায়ে ওয়েজ আর্নার্স রেমিট্যান্সের বিপরীতে আড়াই শতাংশ নগদ প্রণোদনা, রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদের সিআইপি সম্মাননা দেওয়া, রেমিট্যান্স বিতরণ প্রক্রিয়া সম্প্রসারণ ও সহজ করার পাশাপাশি অনিবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বিনিয়োগ ও গৃহায়ন অর্থায়ন সুবিধা দেওয়া, ফিনটেক পদ্ধতির আওতায় আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার অপারেটরকে বাংলাদেশের ব্যাংকের সঙ্গে ড্রয়িং ব্যবস্থা স্থাপনে উদ্বুদ্ধ করা এবং রেমিট্যান্স পাঠাতে ব্যাংক বা এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর চার্জ ফি মওকুফ করা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ফেব্রুয়ারিতে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৫৬ কোটি ১২ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার। ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসে (জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত) মোট রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৪০১ কোটি ৩৩ লাখ মার্কিন ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১ হাজার ৩৪৩ কেটি ৮৫ লাখ মার্কিন ডলার। আলোচ্য সময়ে ৫৭ কোটি ৪৮ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স বেশি এসেছে।
বিবার্তা/এমএ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
পদ্মা লাইফ টাওয়ার (লেভেল -১১)
১১৫, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ,
বাংলামোটর, ঢাকা- ১০০০
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]