নিজ মাতৃভূমি ছাড়ার কথা ভাবছেন পাকিস্তানের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও কণ্ঠশিল্পী আয়েশা ওমর। তিনি দেশটির বর্তমান অর্থনৈতিক দুরবস্থা এবং নারীদের নিরাপত্তার শঙ্কায় এমন সিদ্ধান্তের কথা জানান। দেশটির বর্তমান অর্থনৈতিক দুরবস্থা এবং নারীদের নিরাপত্তা শঙ্কায় দেশ ছাড়ার কথা ভাবছেন তিনি। আদনান ফয়সাল সঞ্চালিত একটি পডকাস্টে হাজির হয়ে সম্প্রতি এই ঘোষণা দেন তিনি।
আয়েশা ওমর বলেন, এখানে আমি নিরাপদ বোধ করছি না। খোলা বাতাসে হাঁটতে পারা একজন মানুষের মৌলিক চাহিদা। আমি রাস্তায় হাঁটতে চাই, তাজা বাতাস উপভোগ করতে চাই, সাইকেল চালাতে চাই, কিন্তু পারি না। আমি করাচিতে নিরাপদ বোধ করি না আর আমার মতো আরও অনেক নারীই এটি মনে করেন বলে আমার ধারণা।
ভিন্ন দেশের উদাহরণ টেনে ৪২ বছর বয়সী এই অভিনেত্রী বলেন, পাকিস্তানি মহিলারা কী নিয়ে বেড়ে ওঠে, পাকিস্তানি পুরুষরা এটা বুঝতে পারে না, আপনি যতই চেষ্টা করুন না কেন। এ দেশে একজন নারী যে ভয়ের মুখোমুখি হন তা একজন পুরুষ বুঝতে পারে না। কেন পুরুষরা বুঝতে পারে না যে পাকিস্তানি নারীরাও তাদের সঙ্গে সমান তালে এগিয়ে যেতে পারে। অপহরণ, ধর্ষণ বা ছিনতাইয়ের ভয় ছাড়া স্বাধীনভাবে রাস্তায় হাঁটতে পারি না। এমনকি, হেনস্তা ছাড়া এখানকার কোনো পার্কেও যেতে পারি না।
আয়েশা ওমরের ভাষ্য, যখন লাহোরে কলেজে পড়তেন, সেসময় করাচির চেয়ে সেখানে অনেক বেশি নিরাপদ বোধ করতেন এবং বাসে ভ্রমণ করতে পারতেন। করাচিতে দুইবার ছিনতাইয়ের সম্মুখীন হয়েছেন তিনি।
তিনি বলেছেন, ধর্ষণ, অপহৃত, ছিনতাইয়ের ভয় ছাড়া পাকিস্তানে অবাধে হাঁটতে পারেন না। আসলে স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা মানুষের মৌলিক চাহিদা, যেটি এখানে নেই। পৃথিবীর সব দেশেই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটে। কিন্তু সেখানকার মানুষ তো অন্তত নিরাপদে রাস্তায় চলতে পারেন। রাস্তায় চলতে গেলে ছেলেরা টিজ করবে, না হয় শরীরে স্পর্শ করবে, এটা কী!
আয়েশা আক্ষেপ করে বলেন, আপনার বাড়িতেও আপনি নিরাপদ না। এমনকি হয়রানি ছাড়া পাকিস্তানের পার্কেও যেতে পারি না।
পাকিস্তানকে ভালোবাসেন উল্লেখ্য করে তিনি বলেন, আমি দেশকে ভালোবাসি এবং আমার যদি বসবাসের জন্য বিশ্বের যে কোনো জায়গা থেকে বেছে নেয়ার সুযোগ থাকে, তাহলে আমি পাকিস্তানকেই বেছে নেব।
জানা গেছে, আয়েশার ভাই ডেনমার্কে থাকেন এবং তার মাও দেশ ছেড়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]