ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধিভুক্ত সাত কলেজ সংকটের স্থায়ী সমাধানে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
মঙ্গলবার দুপুরে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর নেতৃত্বে এ স্মারকলিপি দেয়া হয়।
উপাচার্য দেশের বাহিরে থাকায় উপ উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ এ স্মারকলিপি গ্রহণ করেন।
স্মারকলিপি প্রদানের আগে চলমান আন্দোলন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে ছাত্রলীগ।
সমাবেশে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অক্সফোর্ড, ক্যামব্রিজের মত কিছু কলেজকে অধিভুক্ত করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের বাস্তবতায় আমাদের প্রশাসনিক লোকবল ও কাঠামো দিয়ে এতোগুলো শিক্ষার্থীর দায়িত্ব নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। আর এ সমস্যা সমাধানের জন্যে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বদ্ধপরিকর। ছাত্রলীগ সবসময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে আছে।
ঢাবি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমরা যারা ঢাবি শিক্ষার্থী আমাদের দেখতে হবে নিজেদের শিক্ষার মান উন্নয়ন হচ্ছে কিনা। কে আমাদের সাথে আছে, কে নেই সেটা দেখার বিষয় না। যেকোনো সঙ্কট আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, গত দশ বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সেশনজটে পড়েনি। এখন যদি চলমান আন্দোলনের কারণে পড়ে তার দায়ভার কে নিবে?
রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী রয়েছেন। তিনি চলমান আন্দোলনের বিষয়টি দেখবেন। আমরাও তার সাথে এ বিষয়ে কথা বলবো।
সমাবেশে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর জিএস গোলাম রাব্বানী বলেন, শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের যৌক্তিকতা রয়েছে। আমরা এ সঙ্কট সমাধানে কাজ করছি। সাত কলেজ সমস্যা সমাধানের জন্যে আমরা শিক্ষামন্ত্রীর সাথে কথা বলেছি। শিক্ষামন্ত্রীও এ সংকট সম্পর্কে অবহিত আছেন বলে আমাদের জানিয়েছেন। খুব দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করা হবে বলে শিক্ষামন্ত্রী আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আগস্টের প্রথম সপ্তাহের এ সমস্যার সমাধান করা হবে। আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। এর মধ্যে সমাধান না হলে আমরা ছাত্রলীগও মাঠে নামবো।
তিনি আরো বলেন, চলমান আন্দোলনকে ঘিরে অনেকে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়। শিক্ষার্থীদের এ ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে কোনো কিছুর সমাধান হতে পারে না। কাল থেকে সবাইকে ক্লাস-পরীক্ষায় ফেরার আহবান জানাচ্ছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসেন বলেন, সাত কলেজের অধিভুক্তি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে আনহ্যাপি ম্যারিজ। তাই এর পিচফুল ডিভোর্স দরকার।
তিনি বলেন, অনতিবিলম্বে সাত কলেজ অধিভুক্তির সমস্যা সমাধান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেই করতে হবে। এর বাইরে যারা এই আন্দোলনকে পুঁজি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি নষ্ট করতে চায় তাদের ব্যাপারে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। কাল থেকে সবাই ক্লাসে ফিরবেন। আর যারা ক্লাসে ফিরতে বাধা দিবে তাদের দাঁতভাঙ্গা জবাব দিবেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধিভুক্তি থেকে সরকারি সাত কলেজকে বাদ দেয়ার দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবনে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন করেছেন শিক্ষার্থীরা। পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী এদিনও ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি পালন করেছেন তারা।
বিবার্তা/রাসেল/তাওহীদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]