আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঢাকার ২১টি কোরবানির পশুর হাটে স্বাস্থ্যসম্মত ও প্রতারামুক্ত পশু বিক্রয় নিশ্চিত করতে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) অ্যানিম্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের ১০২ জন শিক্ষার্থী মাঠ পর্যায়ে সেবা প্রদান করবেন।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৮টি ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৩টি হাটসহ মোট ২১টি হাটে এই শিক্ষার্থীরা ভেটেরিনারি মেডিকেল টিমের অংশ হিসেবে কাজ করবেন। প্রতিটি হাটে একজন দক্ষ ভেটেরিনারিয়ানের নেতৃত্বে শিক্ষার্থীরা দায়িত্ব পালন করবেন। বড় ও গুরুত্বপূর্ণ হাটগুলোতে অতিরিক্ত মেডিকেল টিম নিয়োজিত থাকবে।

শিক্ষার্থীদের দায়িত্বের মধ্যে রয়েছে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা,অসুস্থ বা হরমোন প্রয়োগ করা পশু শনাক্তকরণ,প্রাথমিক চিকিৎসা ও পরামর্শ প্রদান,জনসচেতনতা বৃদ্ধি,ক্রেতা-বিক্রেতাদের মাঝে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ এবং অসুস্থতার লক্ষণ সম্পর্কে ধারণা প্রদান।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের কোরবানির ঈদে সারাদেশে প্রায় ৩,৬০০টি হাট বসবে এবং এসব হাটে ২,০০০টির বেশি মোবাইল ভেটেরিনারি টিম কাজ করবে। ঢাকার হাটগুলোতে শেকৃবির শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ জাতীয় প্রস্তুতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

সম্প্রতি “পবিত্র ঈদুল আযহা ২০২৫ উপলক্ষে কোরবানির হাটে ভেটেরিনারি মেডিকেল টিমের করণীয়” শীর্ষক আলোচনা সভায় শেকৃবি’র ভেটেরিনারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন,“আমাদের শিক্ষার্থীরা শুধু হাতে নয়, মন দিয়ে দেশের জন্য কাজ করতে মাঠে নামছে।”

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান এ উদ্যোগকে পশু কল্যাণ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য সময়োপযোগী পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন,
“কোরবানির ঈদ শুধু পশু জবাইয়ের উৎসব নয়, এটি ত্যাগের শিক্ষা দেয়। আমাদের পশুর প্রতি মমত্ববোধ ও মানবিক আচরণ নিশ্চিত করতে হবে। কোনো ধরনের নিষ্ঠুরতা বরদাশত করা হবে না।”

তিনি আরও বলেন, হাটে পর্যাপ্ত পানি, খাদ্য ও চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হবে এবং কোরবানির পর বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।

শিক্ষার্থীদের প্রদর্শিত সচেতনতামূলক বার্তাগুলোর মধ্যে হরমোন প্রয়োগে পরিবর্তিত আচরণ, অতিরিক্ত ওজনজনিত সমস্যা, নাক-মুখ দিয়ে অতিরিক্ত স্রাব বা লালা পড়া, দাঁড়িয়ে থাকতে না পারা, খাবারে অনীহা ইত্যাদি লক্ষণ তুলে ধরা হয়, যাতে সাধারণ মানুষ সহজে অসুস্থ পশু চিহ্নিত করতে পারেন।

বিবার্তা/ফাহিম/এসএস