শিক্ষা ও গবেষণার উন্নয়নে ‘দ্য ঢাকা ইউনিভার্সিটি ফান্ড’ তহবিল সংগ্রহ কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে।

১৬ আগস্ট, শনিবার দুপুর ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে এই কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান প্রধান অতিথি হিসেবে এই ফান্ডের তহবিল সংগ্রহ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।

তহবিলে অর্থদান করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী, পিএইচপি গ্রুপের প্রতিষ্ঠা চেয়ারম্যান সুফি মীজানুর রহমান, পপুলার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ও ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজের চেয়ারম্যান প্রীতি চক্রবর্তী।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান দাতাবৃন্দকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, প্রাথমিকভাবে আজকে অনুদান গ্রহণের মাধ্যমে এই ফান্ডের কার্যক্রম শুরু হলো। এটি চলমান থাকবে এবং প্রতিবছরই একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই, সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিবর্গ, স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান, ধনাঢ্য, দানবীর, শিক্ষা ও গবেষণায় অনুরাগী ব্যক্তিবর্গের নিকট থেকে অনুদানের চেক গ্রহণ করা হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণাকে আরও সমৃদ্ধ করতে এই ফান্ডের তহবিল আরও বৃদ্ধি করার জন্য দেশে- বিদেশে সুপ্রতিষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাইসহ দানশীল ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের প্রতি উপাচার্য আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সানুগ্রহ উপস্থিতিতে আগামীতে একটি সাড়ম্বর অনুষ্ঠানে অনুদান গ্রহণের মাধ্যমে।

এই ফান্ডের মূলধন ১ হাজার কোটিতে উন্নীত করা সম্ভব হবে বলে উপাচার্য আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, ভারতবর্ষে আস্তে আস্তে দানের ভিত্তিতেই বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও তার বহির্ভূত নয়। এখানেও অনেক মানুষের দান রয়েছে, জমি রয়েছে। দার্শনিকরা পূণ্যকে পর্যন্ত দান করার কথা বলেছেন। কিন্তু বর্তমান সময়ে আমাদের সমাজে মানুষ সৎ না হয়ে সচ্ছল হচ্ছে প্রতিদিন, জ্ঞানী বা প্রজ্ঞাবান না হয়ে ধূর্ত হচ্ছে এবং হৃদয়বান না হয়ে বিশিষ্ট হচ্ছে। এ সমস্ত কারণে এই দর্শনগুলো ধীরে ধীরে স্তিমিত হয়ে যাচ্ছে।

গবেষণা নিয়ে তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে রিসার্চ সেটা তো আসলে একটা কাজ করেই সফল হয় না। গবেষণা করতে টাকা লাগবে আবার টাকা হলেও যে ভালো গবেষণা হবে তারও কোনো গ্যারান্টি নাই। এখন গবেষণার জন্য টাকা চাই আবার টাকা ফিরেও যাচ্ছে আমাদের ইউনিভার্সিটি থেকে। আমাদের ইউনিভার্সিটি হচ্ছে পাঠদান গ্র্যাজুয়েট তৈরির ইউনিভার্সিটি এজন্য গবেষণার কাজে আমরা এগিয়ে যেতে পারি না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেটিং বাড়ানোর জন্য আমাদের রিসার্চ, পাবলিকেশন বাড়াতে হবে। ব্যবসায় শ্রেণি যদি তাদের রিসার্চগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে প্রেস করেন তাহলে আমাদের শিক্ষার্থীরা বেশি রিসার্চ করার সুযোগ পাবে।এভাবে রেটিংটা বাড়বে। বিশ্ববিদ্যালয়কে উপরে নিয়ে যেতে হলে ব্যবসায় শ্রেণিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে এক হয়ে কাজ করতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের গবেষণা কার্যক্রম এমনভাবেই চালাতে হয় যতটুকু বাজেট গবেষণা কাজে ইউজিসি আমাদেরকে দেয়।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট কিন্তু খুবই কম।অক্সফোর্ডের অ্যানুয়াল বাজেট বাংলাদেশের বাজেটের চেয়েও বেশি। তাদের বাজেটের বড় অংশ আসে অ্যালামনাই থেকে। আমাদের যে-সব রিসোর্স আছে সেগুলো ব্যবহারের জন্য তো ফান্ডের দরকার।

ব্যবসায়ী দাতা বৃন্দকে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ডে অর্থপ্রদানের জন্য আহ্বান জানান যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা ও শিক্ষা খাতে উন্নয়ন হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন এবং বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষবৃন্দ।

বিবার্তা/ছাব্বির/সউদ