উপাচার্যের কথায় সন্তুষ্ট নয় মৈত্রী হলের শিক্ষার্থীরা, চলমান থাকবে অবস্থান কর্মসূচি
প্রকাশ : ১৪ আগস্ট ২০২৩, ২২:৪২
উপাচার্যের কথায় সন্তুষ্ট নয় মৈত্রী হলের শিক্ষার্থীরা, চলমান থাকবে  অবস্থান কর্মসূচি
ঢাবি প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

আবাসন সংকট নিরসনে ৩০০ শিক্ষার্থীকে এক মাসের মধ্যে বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল থেকে অন্যান্য হলে বদলির প্রজ্ঞাপন জারির দাবি নিয়ে অবস্থানরত বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের সাথে সাক্ষাতের পর প্রেস ব্রিফিং দিয়েছে।


১৪ আগস্ট, সোমবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সাথে সাক্ষাত করেন এবং এর পরই তারা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে প্রেস ব্রিফিং করে।


শিক্ষার্থীরা প্রেস ব্রিফিং এ জানায় যে উপাচার্য তাদের প্রতিনিধির সাথে কথা বলেছেন। তিনি জানালেন যেহেতু মেয়েদের হল তাই বিষয়টি সেন্সিটিভ, স্মারকলিপি পাওয়ার পরই পরই হল পরিদর্শন করা হয়েছে। তিনি নতুন করে শিক্ষার্থীদের কুয়েত মৈত্রী হলে এলটমেন্ট দেওয়া বন্ধ করার কথা জানান এবং আশ্বাস দিয়েছেন এবছর যেসব শিক্ষার্থী এলটমেন্ট পেয়েছে তাদের একাংশকে অন্যান্য হলে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু ২৩৪জন মেয়ে যারা গণরুমে আছে তাদের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের একটি দীর্ঘমেয়াদি সমাধান দেওয়া হলেও পাওয়া যায়নি কোনো তাৎক্ষণিক সমাধান। প্রশাসনিক জটিলতার কারণে এটি সম্ভব হবে না বলে জানান তিনি।


শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক জটিলতার প্রসঙ্গে বলেন, ২০১৮ সালে ৭ই মার্চ ভবন নির্মানের পর অনেক শিক্ষার্থীকে সেখানে বদলি করা হয়। তখন প্রশাসনিক জটিলতা থাকা সত্বেও এলটমেন্ট দেওয়া যেতে পারলে এখনও সম্ভব। আর প্রশাসনিক জটিলতা প্রশাসন তৈরী করেছে সেটার ভুক্তভোগী আমরা কেন হবো! আমরা সবাই জানি মৈত্রী হলে সিট সংকট তাহলে এবছর এত শিক্ষার্থীকে এটাচ কেন দিল! ভিসি স্যার আমাদের অভিবাবক। তিনি এটা বলে দায় অস্বীকার করতে পারেন না যে তার কিছু করার নাই। আমাদের দাবি মেনে প্রজ্ঞাপন না দেওয়া পর্যন্ত আমরা এখানে অবস্থান করবো।


শিক্ষার্থীরা আরও জানান,আমাদের হলে রিডিং রুম ছিলো না যেটা ইতোমধ্যে বানানোর কাজ শুরু হয়েছে এবং ওয়াশরুম বানানোর কাজ শুরু করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। তবে রিডিং রুমের চেয়ে মাথা গুজার ঠাঁই বেশি জরুরি।


যেহেতু উপাচার্য শিক্ষার্থীদের তাৎক্ষণিক কোনো সমাধান দেননি তাই তারা ৩০০জন শিক্ষার্থীকে এক মাসের মধ্যে অন্যান্য হলে বদলি করার প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত তাদের অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলের হাউজ টিউটর ফারজানা বেগম জানান, ছাত্রীদের এই সমস্যা অনেক আগে থেকেই। তারা এটি সমাধানের জন্য এক মাস আগে থেকেই নানা সভায় এটা আলোচনা করেছে এবং কীভবে কৌশলে এই সংকট মোকাবেলা করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সমাধানটা তো আসলে হুট করে দেওয়া যায় না এটা ধীরে ধীরে হবে। তারা যে স্মারক লিপি দিয়েছে সেটা নিয়ে ভিসি স্যার তাদের প্রতিনিধির সাথে কথা বলেছেন। স্যার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোক্টোরিয়াল টিম, প্রধান প্রকৌশলী সবাইকে নিয়ে হল পরিদর্শন করেছেন।


তিনি আরো জানান, মৈত্রী হলে কোনো রিডিং রুম নেই মেইন বিল্ডিং এ সেজন্য স্যার ইন্সট্যান্ট প্রধান প্রকৌশলীকে নির্দেশ দিলেন রিডিং রুমের জন্য। এছাড়া ১০০জনের ছাত্রী দুটো মাত্র ওয়াশরুম ব্যবহার করে। স্যার নির্দেশ দিলেন জায়গা দেখে দুটো তিনটে ওয়াশরুম বানিয়ে দিতে। স্যার তাদের বললেন যে এটা একটা লং-টার্ম প্রসেস তাই চাইলেই হুট করে আল্টিমেটাম দিলে এটা করা যায় না। ওরা জানিয়েছে আমাদের শিকদার মনোয়ারা ভবন ঝুঁকিপূর্ণ তাই নতুন ভবন নির্মাণ করা হোক।


তাছাড়া তারা বলেছিল যেন কুয়েত মৈত্রী হলে নতুন কাউকে এলটমেন্ট দেওয়া না হয় সেটা উপাচার্য আমলে নিয়েছেন এবং নির্দেশ জারি করেছেন। স্যার ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গিয়েছেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলার সময় কুয়েত মৈত্রী হলের অবস্থার কথা উল্লেখ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীকে মাস্টারপ্ল্যানের যে ফাইল দেওয়া হয়েছে সেখানে টিএসসি, সেন্ট্রাল লাইব্রেরি ও কুয়েত মৈত্রী হলকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।


উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল থেকে অন্তত ৩০০ জন শিক্ষার্থীকে অন্য হলে এক মাসের মধ্যে স্থানান্তরের মাধ্যমে বৈধ আসন নিশ্চিত করা, পরবর্তীতে হলের আসনসংখ্যার সঙ্গে সমন্বয় রেখে নতুন শিক্ষার্থী অ্যালটমেন্ট দেওয়া ও হলের সার্বিক সংকট বিবেচনায় মূল ভবনের প্রতি কক্ষে ৬ জনের বেশি শিক্ষার্থী বরাদ্দ দিয়ে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট না করা।


এ ব্যাপারে তারা পূর্বে ১০৫জন শিক্ষার্থী স্বাক্ষরিত একটি স্মারকলিপি দেয় উপাচার্য বরাবর। স্মারকলিপি প্রদানের পর গত রবিবার তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে সংবাদ সম্মেলনে তাদের দাবিগুলো জানায়। দাবি বাস্তবায়নের জন্য সোমবার দুপুর একটা থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে তারা অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে৷


উপাচার্যের কাছ থেকে দাবি পূরণের লিখিত প্রজ্ঞাপন ছাড়া কর্মসূচি বন্ধ করবে না বলে জানায় তারা।


বিবার্তা /ছাব্বির/এমজে

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com