পুরো রমজান মাস ছুটি চান প্রাথমিকের শিক্ষকরা, সিদ্ধান্ত আজ
প্রকাশ : ২২ মার্চ ২০২৩, ১৫:৩০
পুরো রমজান মাস ছুটি চান প্রাথমিকের শিক্ষকরা, সিদ্ধান্ত আজ
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

এবারের রমজান মাসে মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজ বন্ধ থাকলেও সরকারি প্রাথমিক স্কুল খোলা থাকবে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত। এ পরিস্থিতিতে রোজায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছুটির দাবি জানিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষকদের বিভিন্ন সংগঠন। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ নানা উপায়ে এ দাবির পক্ষে সরব। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অভিন্ন ছুটি নির্ধারণের দাবি সংগঠনগুলোর।


অন্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ছুটি সমন্বয় করতে সংগঠনের বাইরেও অনেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং অধিদফতরে (ডিপিই) লিখিতভাবে আবেদন করেছে। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আলোচনা হলেও চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি মন্ত্রণালয়। আজ এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে জানা গেছে।


প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ শামসুদ্দীন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব বরাবর লিখিত আবেদনে উল্লেখ করেন, রমজানে প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৪ দিন খোলা থাকবে। চৈত্র মাসের প্রচণ্ড গরমে রোজা রেখে ক্লাস নেওয়া শিক্ষকদের খুবই কষ্টসাধ্য হবে। ৮০ শতাংশ নারী শিক্ষক সেহরি প্রস্তুত করে সংসারে খাওয়া-দাওয়া করে সারাদিন স্কুল শেষে আবার ইফতারির আগে ইফতারের প্রস্তুতি, সংসার পরিচালনা খুবই কষ্টকর হবে। তাছাড়া রমজান হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জন্য পবিত্র কোরআন শিক্ষার উপযুক্ত মাস।


আবেদনে আরও বলা হয়, রমজান মাসে সকালে গাড়ি, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, রিকশা ইত্যাদি কম চলাচল করে। ফলে দূরবর্তী বিদ্যালয়গামী শিক্ষকদের যানবাহন পেতে খুবই সমস্যা হবে এবং সকাল বেলা রাস্তাঘাট নিরিবিলি থাকার ফলে নানা ধরনের ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপ্রীতিকর ঘটনার শিকার হতে পারেন। এসব বিষয় বিবেচনা নিয়ে প্রথম রোজা থেকে স্কুল বন্ধ রাখার দাবি জানাচ্ছি।


এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত বলেন, করোনায় পিছিয়ে পড়ায় শিখন ঘাটতি কাটাতে এবার রোজার ছুটি কমিয়ে আনা হয়েছে। শিক্ষকদের একাধিক সংগঠনের নেতারা লিখিতভাবে রোজায় ছুটির দাবি জানিয়েছেন।


তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে ছুটি সমন্বয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে। মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে নির্দেশনা আসলে অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয় করে ছুটি দেওয়া হবে।


তবে এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রোজার ছুটি নিয়ে মন্ত্রণালয়ের একাধিক আলোচনা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ বুধবার এ বিষয়টি নিয়ে বৈঠক হতে পারে। তবে অধিকাংশ কর্মকর্তারাই অন্যান্য শিক্ষা দফতরের সঙ্গে সমন্বয় করে ছুটি দেওয়ার পক্ষে।


রোজায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছুটি নিশ্চিত করতে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অভিন্ন ছুটি নির্ধারণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশে প্রাথমিক শিক্ষক সমাজ। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন বলেন, প্রায় ৬০ শতাংশ অভিভাবকের সন্তান প্রাথমিক, মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেন। ছুটি ভিন্ন হওয়ায় পারিবারিক ভ্রমণ, ভ্রাতৃত্বের বন্ধন ও সম্প্রীতির বিঘ্ন ঘটে। বেশ কিছু মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শাখা আছে, তাদের পাঠদানে বিঘ্ন ঘটে ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। কিছু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত চালু আছে। এসব বিদ্যালয়েও পাঠদানে সমস্যা দেখা দেয়।


তারা আরও বলেন, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অভিন্ন ছুটি নির্ধারণ খুবই জরুরি। এ দাবির পক্ষে আমাদের যুক্তিগুলো উপস্থাপন করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে লিখিত আবেদন দাখিল করা হয়েছে। ২০২৩ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫৪ দিন ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭৬ দিন ছুটি রয়েছে। তাই, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অভিন্ন ৭৬ দিন ছুটি নির্ধারণের দাবি জানিয়ে লিখিত আবেদন করা হয়েছে।


বিবার্তা / রাসেল/মাসুম

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com