শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ২০১০ থেকে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত ১৪ বছরে ৪৩৪ কোটি ৪৫ লাখ ৮০ হাজার ২১১ কপি বই ছাপিয়ে বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। এটি পৃথিবীর যেকোনো জায়গার জন্য একটি অচিন্তনীয় ব্যাপার। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে, তার নির্দেশনায় প্রতি বছর আমরা কাজটি করে চলেছি। তার মধ্য দিয়ে আমরা শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার রোধ করতে পেরেছি। কারণ বাবা-মায়ের ওপর বই কেনার ভারটি আর থাকছে না।
রবিবার (১ জানুয়ারি) দুপুরে গাজীপুরের কাপাসিয়ায় কাপাসিয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মাধ্যমিক স্তরের বই উৎসবের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী। এর আগে তিনি বেলুন উড়িয়ে বই উৎসবের উদ্বোধন করেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন- কেউ আমাদের দাবিয়ে রাখতে পারবে না’। ঠিক সেভাবেই কেউ যেন বাংলাদেশকে আর দাবিয়ে রাখতে না পারে, বঙ্গবন্ধুকন্যা আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে তৈরি করে দিয়েছেন, এখন স্বপ্ন দেখিয়েছেন স্মার্ট বাংলাদেশের। এই বাংলাদেশের স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সরকার ও সমাজ গড়বার জন্য দরকার স্মার্ট শিক্ষা। বঙ্গবন্ধু কন্যার সার্বিক দিক নির্দেশনায় আমরা নতুন শিক্ষাক্রম তৈরির মাধ্যমে সে দিকেই এগিয়ে চলেছি।
তিনি বলেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষাবিদ, বিশেষজ্ঞ সকলের পরামর্শ নিয়ে, সকলের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে আমরা এমন শিক্ষাক্রম তৈরি করেছি, যেখানে শিক্ষা হবে আনন্দময়। শিক্ষার্থীদের মধ্যে পরীক্ষাভীতি থাকবে না।
দীপু মনি বলেন, শিক্ষার্থীদের সুক্ষ্ম দক্ষতা অর্জন করতে হবে, সমস্যা সমাধানের দক্ষতা অর্জন করতে হবে। দক্ষ, যোগ্য, মানবিক, সৃজনশীল মানুষ হতে হবে। সোনার বাংলা গড়তে সত্যিকারের সোনার মানুষ হতে হবে।
তিনি বলেন, এতো সুন্দর সবুজ দেশের যেদিকে তাকাই শুধু প্লাস্টিক আরও পলিথিন। এই জঞ্জাল পরিবেশের বিপর্যয় ডেকে আনছে যা আমাদেরই তৈরি। আমরা সচেতন হলে, প্লাস্টিক ও পলিথিন নির্দিষ্ট জায়গায় ফেললে এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সঠিকভাবে নিয়ে যাওয়া গেলে বাংলাদেশকে পরিবেশ বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করা যাবে।
শিক্ষকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমে শুধু পড়িয়ে যাওয়া নয়, শিক্ষার্থীদের পথপ্রদর্শক ও সহায়ক হিসেবে দাঁড়াতে হবে। শিক্ষার্থীরা যাতে ভালো মানুষ হয়ে উঠে, সেদিকেও নজর দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, আমরা শপথ নেব, নিজেদের ভবিষ্যৎ নিজেরাই গড়ব। আজকে বই পেয়েছো, বিদ্যালয়ে গিয়ে পড়বে, শিখবে, জানবে। শুধু এই বই নয়, গল্পের বই পড়বে, পশু পালন, কৃষিকাজ, মিল কারখানায় কিভাবে কাজ করতে হবে সেটা শিখবে। আমরা নতুন কারিকুলামে শ্রেণিকক্ষের বাইরে জীবন থেকে শেখার প্রচেষ্টা জাগ্রত করার চেষ্টা করছি।
স্বাগত বক্তব্যে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম বলেন, বই উৎপাদনের পিক টাইমে বিদ্যুৎ, কাগজ সংকট ছিল। তারপরও মন্ত্রীর আশ্বাসে পেপার মিল মালিক, মুদ্রাকরদের সাথে আমরা বৈঠক করে সংকট নিরসনের চেষ্টা করেছি।
তিনি বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমের নতুন বইগুলোতে কিছু সংশোধনের বিষয় থাকতে পারে। আমরা এসব বই সংস্করণ হিসেবে দিয়েছি। কোনো সংস্কার প্রয়োজন হলে আগামীতে শুদ্ধ করে দিব।
এসময় আরও বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সিমিন হোসেন রিমি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. কামাল হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমানসহ মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের চেয়ারম্যানসহ প্রমুখ।
বিবার্তা/রাসেল/এসএফ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]