জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ আইন সমিতি।
রবিবার (২৫ আগস্ট) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন অডিটোরিয়ামে এই আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তির প্রেতাত্মারা ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। আর এ হত্যাকাণ্ড যারা করেছে তাদের বিচার হয়েছে কিন্তু যারা করিয়েছে তাদের বিচার হয়নি। অচিরেই ট্রুথ কমিশন গঠন করে এদের বিচার করতে হবে।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সাথে জিয়াউর রহমান জড়িত ছিল দাবি করে তিনি বলেন, জিয়া অধ্যাদেশ জারি করে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের বিচার বন্ধ করেছেন। ক্ষমতায় গিয়ে জিয়া মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের কাউকে মন্ত্রী বানাননি। বানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তির লোকদের। গোলাম আযমকে দেশে ফিরিয়ে এনে জিয়া রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছেন। এসব কিছু কি প্রমাণ করে না জিয়া বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত।
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব শুধু এদেশে সীমাবদ্ধ ছিল না। তিনি ছিলেন বিশ্বের নেতা। সারাবিশ্ব বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গর্ব করতো। আজকে তারই কন্যা শেখ হাসিনাও তারই পথে হেঁটে দেশকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছেন।
সভায় মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, ১৫ আগস্ট শুধু গতানুগতিক ভাবে পালন করলে হবে না। ১৫ আগস্ট দীক্ষা নেয়ার দিন, আত্মশুদ্ধির দিন, প্রস্তুতি নেয়ার দিন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ত্যাগ-তিতিক্ষায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত এদেশ। আর এদেশে এখন বঙ্গবন্ধু না থাকলেও তারই কন্যা শেখ হাসিনা তার বাবার প্রতিচ্ছবি বা প্রতিবিম্ব।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে শেখ হাসিনাকে বারবার হত্যা করার জন্য চেষ্টা করা হয়েছিল। আল্লাহর রহমত থাকায় তিনি বেঁচে আছেন। আজকে তার নেতৃত্বে এদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
বঙ্গবন্ধুকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বলার আহবান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, অনেকে বঙ্গবন্ধুকে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বলা উচিত।
বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পরাজয় যারা মেনে নিতে পারেনি, তারাই এ হত্যাকাণ্ড করেছে, এদেশকে আবার পাকিস্তান করার জন্য। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছি। আজ উন্নয়নের মহাসড়কে এদেশ। তাই বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের শোককে শক্তিতে পরিণত করে আমাদের আরো এগিয়ে যেতে হবে।
স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোল্লা মো. আবু কাওছার বলেন, শিশু মুজিব কিভাবে জাতির পিতা হলেন? কিভাবে এদেশ সৃষ্টি করলেন? সেটা আমাদের জানতে হবে। বঙ্গবন্ধুর ত্যাগ-তিতিক্ষা, সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এদেশ সৃষ্টি হয়েছে। এতোকিছুর পরেও বিশ্বাসঘাতক কিছু কুলাঙ্গারের কারণে আমরা বঙ্গবন্ধুকে হারিয়েছি।
তিনি বলেন, যুগে যুগে যারা বঙ্গবন্ধুকে অস্বীকার করেছে, এদেশকে অস্বীকার করেছে, মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করেছে, তারাই ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। আমাদেরকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে কাজ করতে হবে।
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর জিএস গোলাম রাব্বানী বলেন, ইতিহাসের স্ক্রিপ্ট রাইটার ও মহানায়ক হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেছেন। আর সেই ছাত্রলীগ যুগে যুগে সকল যৌক্তিক আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসতে হলে তার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে তারই কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কাজ করতে হবে। ১৫ আগস্টের শোককে শক্তিতে রূপান্তর করে এগিয়ে যেতে হবে।
জাতীয় শোক দিবস উদযাপন প্রস্তুতি কমিটি, বাংলাদেশ আইন সমিতির আহবায়ক অ্যাডভোকেট মোল্লা মো. আবু কাওছারের সভাপতিত্বে এবং বাংলাদেশ আইন সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহা. মাহফুজুর রহমান আল-মামুনের সঞ্চালনায় এতে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতি এ কে এম সাহিদুল হক, বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনসহ প্রমুখ।
বিবার্তা/রাসেল/জহির
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]