
ময়মনসিংহে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও পরিবহন শ্রমিক পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে আজও বন্ধ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বাস চলাচল। ঢাকায় পরিবহন মালিক-শ্রমিক-ফেডারেশনের নির্দেশনায় ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটের সকল বাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে জেলা মোটরযান মালিক সমিতি ও জেলা শ্রমিক ইউনিয়ন।
রবিবার (১২ অক্টোবর) ভোর থেকে বন্ধ রয়েছে ময়মনসিংহ হয়ে ঢাকাগামী শেরপুর, জামালপুর, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জসহ পাঁচ জেলার বাসও। এতে দুর্ভোগে পড়েছে যাত্রীরা। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস হওয়ায় ঢাকায় কর্মরত যাত্রীরা বিকল্প যানবাহনে ফেরার চেষ্টা করছেন।
পুলিশ জানায়, হালুয়াঘাটের জুলাইযোদ্ধা আবু রায়হান শুক্রবার রাতে বাসে ওঠার সময় পরিবহন শ্রমিক অরুণ ঝন্টুর শরীরে ধাক্কা লাগে। এ ঘটনায় নিজেকে জুলাইযোদ্ধা পরিচয় দিয়ে রায়হান একাধিকবার দুঃখপ্রকাশ করার পরেও অরুণ ঝন্টু তার প্রতি অশালীন আচরণ ও কটূক্তি করে বাস থেকে নামিয়ে দেন।
এরপর রাত ৯টা থেকেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা ময়মনসিংহ নগরীর মাসকান্দা এলাকার ঢাকা বাসস্ট্যান্ডের ইউনাইটেড সার্ভিসের কাউন্টারের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে ইউনাইটেড পরিবহনের শ্রমিক অরুণ ঝন্টুকে আটক করে পুলিশ।
এর জেরে শনিবার বেলা ১১টা থেকে পরিবহন শ্রমিকরা শহরের বাইপাসে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা, শেরপুর ও জামালপুর থেকে ঢাকাগামী সব বাস সেখানে আটকা পড়ে।
পাশাপাশি ঢাকা থেকে ওই চার জেলাগামী গাড়িও বাইপাস এলাকায় গিয়ে আটকা পড়ে। এতে দীর্ঘ জটের সৃষ্টি হয়। উভয়পাশের যাত্রীরা সেখানে আটকে থেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ভোগান্তির মধ্যে পড়েন। কেউ কেউ বাস থেকে নেমে গন্তব্যের পথে রওনা হন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের দাবি ছিল, দোষীদের বিচারসহ জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ সাগর হত্যা মামলার আসামি ও আওয়ামী লীগের জেলার সহসভাপতি আমিনুল হক শামীমকে গ্রেপ্তার ও তার মালিকানাধীন ইউনাইটেড সার্ভিসের সব বাস বন্ধ রাখা। এই সার্ভিসে আমিনুল হক শামীমের ১৬টি বাস আছে।
অপরদিকে পরিবহন শ্রমিকদের দাবি ছিল, আটক শ্রমিককে মুক্তি দিতে হবে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
এই অবস্থায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও পরিবহন শ্রমিক নেতাদের মধ্যে আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হয়। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে সিদ্ধান্ত হয়, আমিনুল হক শামীমের ১৬টি বাসের চলাচল বন্ধ থাকবে।
এরপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা মাসকান্দা বাস কাউন্টার থেকে সরে যান। অপরদিকে পরিবহন শ্রমিকরাও বাইপাস থেকে অবরোধ তুলে নেন। তখন সেখানে আটকে পড়া বাসগুলো গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দেয়।
পরিবহন শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এরপর ইউনাইটেড পরিবহনের ময়মনসিংহ কাউন্টারের প্রতিনিধিরা ঢাকায় মহাখালীতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তখন সেখান থেকে ইউনাইটেড ও সৌখিন পরিবহনের বাস না চালানোর সিদ্ধান্ত আসে। ফলে অন্যান্য বাস চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও এ দুটি পরিবহনের বাস চলাচল করেনি। রবিবার বিভাগের পাঁচ জেলা থেকে ঢাকাগামী সব বাসই বন্ধ রয়েছে।
বিবার্তা/এমবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]