অর্থ সংকটেও বন্ধ হচ্ছে না কক্সবাজার সৈকতের লাইফগার্ড সেবা, চলবে আরও ৩ মাস
প্রকাশ : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯:৪৭
অর্থ সংকটেও বন্ধ হচ্ছে না কক্সবাজার সৈকতের লাইফগার্ড সেবা, চলবে আরও ৩ মাস
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

তহবিল ফুরিয়ে গেলেও আপাতত কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে পর্যটকদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত লাইফগার্ড সেবা কার্যক্রম বন্ধ হচ্ছে না। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর তহবিলের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও জেলা প্রশাসন এবং সি সেইফ লাইফগার্ড সংস্থার যৌথ উদ্যোগে এই গুরুত্বপূর্ণ সেবাটি আরও তিন মাস চালু রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে স্থায়ীভাবে অর্থায়নের জন্য বিকল্প উৎস খোঁজা হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।


আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর কার্যক্রমটির প্রধান দাতা সংস্থা রয়্যাল ন্যাশনাল লাইফবোট ইনস্টিটিউশন (আরএনএলআই)-এর অর্থায়ন শেষ হওয়ার কথা ছিল। এতে পর্যটকদের জীবনরক্ষার এই কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়।


সি সেইফ টিমের ব্যবস্থাপক ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, আরএনএলআই-এর অর্থায় ৩০ সেপ্টেম্বর শেষ হওয়ার কথা ছিল, যার অর্থ ১ অক্টোবর থেকে পর্যটকদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত লাইফগার্ডদের কাজ বন্ধ করে দেওয়ার কথা। কিন্তু কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠকের পর, এটি আরও তিন মাস স্বাভাবিকভাবে চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।


এই সিদ্ধান্তের পর জেলা প্রশাসন কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার জন্য একটি আনুষ্ঠানিক অনুরোধপত্র দেবে। সেই চিঠি ব্যবহার করে কর্তৃপক্ষ আরএনএলআই-এর কাছে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর বা অন্য কোনো খাত থেকে তহবিল স্থানান্তরের আবেদন করবে। একই সঙ্গে, পর্যটন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, হোটেল-মোটেল-গেস্ট হাউসের মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে তহবিলের ঘাটতি পূরণের চেষ্টা করা হবে।


ইমতিয়াজ আহমেদ আরও জানান, 'মূলত, প্রকল্পটি ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল। জেলা প্রশাসকের আবেদনের ভিত্তিতে দাতা সংস্থা প্রথমে ছয় মাস ও পরে আরও তিন মাস মেয়াদ বাড়ায়, যা সেপ্টেম্বরে শেষ হচ্ছে। সি সেইফ বর্তমানে ২৭ জন প্রশিক্ষিত কর্মী দিয়ে এই কার্যক্রম পরিচালনা করে, যার জন্য প্রতি মাসে প্রায় ১৪ লাখ টাকা প্রয়োজন।'


২০১২ সালে চালু হওয়া এই সেবাটি ২০১৪ সাল থেকে পাইলট প্রকল্প হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে। লাইফগার্ডরা নিজেদের জীবন বাজি রেখে গত এক দশকে ৭৮২ জন পর্যটককে সাগর থেকে জীবিত উদ্ধার করেছেন।


তবে তাদের সব প্রচেষ্টা সফল হয়নি; এই সময়ে পানিতে ডুবে ৬৩ জনের মৃত্যু হয়। শুধু গত বছরেই ৭৮ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং ১১ জন ডুবে মারা গেছেন।


কর্মকর্তারা জানান, গত ২৭ আগস্ট বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে যুগ্নসচিব এ.কে.এম মনিরুজ্জামান স্বাক্ষরিত পৃথক দুটি স্মারক পত্রে দুটি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। যা পাঠানো হয়েছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক বরাবরে। একই সঙ্গে ৮ টি বিভাগে পাঠানো হয়েছে অনুলিপি।


একটিতে নিরাপদ পর্যটন নিশ্চিত করতে হোটেল-মোটেল ও রিসোর্ট মালিকদের নিজস্ব লাইফগার্ড নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়। অন্য নির্দেশনায় পর্যটকদের জন্য লাইফ জ্যাকেট সরবরাহ ও তার ব্যবহার নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।


এ বিষয়ে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শহীদুল আলম বলেন, 'লাইফগার্ড সেবা এখনই বন্ধ হবে না, আগামী তিন মাস এটি স্বাভাবিকভাবেই চলবে। এই সময়ের মধ্যে, আমরা দাতা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে অথবা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী হোটেল ও গেস্টহাউস মালিকদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে স্থায়ী তহবিল সংগ্রহের জন্য কাজ করব।'


বিবার্তা/ফরহাদ/এসএস

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com