
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় মো. নাঈম (২৪) নামে এক কিশোরকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে।
জানা গেছে নিহত নাঈম এলাকায় চিহ্নিত মাদকসেবী হিসেবে পরিচিত। এলাকাবাসীর দাবি, দীর্ঘদিন ধরে নাঈমের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে তারা এই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছেন। তবে বিষয়টি পূর্ববিরোধের জেরে ঘটতে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) দুপুরে উপজেলার কড়িহাতা ইউনিয়নের বেহাইদুয়ার গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত নাঈম স্থানীয় মাদক কারবারি হিসেবে পরিচিত মো. রাজু মিয়া ওরফে নাজুর ছেলে। এলাকাবাসীর ভাষ্যমতে, নাঈম ও তার ভাই কাইয়ুম দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক বেচাকেনা ও ছিনতাইয়ে জড়িত ছিলেন। প্রায় প্রতিরাতে তারা স্থানীয় লোকজনকে হুমকি দেওয়া এবং মোবাইল ও টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার মতো অপরাধমূলক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকতেন।
নাঈমের প্রতিবেশী চাচী ফেরদৌসি বেগম জানান, প্রায় দুই মাস আগে তার ছেলে সোহেল রানা (৩৫) গভীর রাতে আড়াল বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে নাঈম ও কাইয়ুম তার কাছে টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে তারা সোহেলকে কুপিয়ে আহত করে এবং রাস্তার পাশে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা সোহেলকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে রেফার করেন। এ ঘটনায় সোহেলের মেয়ে রুমানা সানী থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর থেকেই নাঈমের পরিবারের সদস্যরা পলাতক ছিলেন।
দীর্ঘ চিকিৎসার পর গত রোববার সোহেল বাড়ি ফেরেন। মঙ্গলবার দুপুরে নাঈম চাপাতি হাতে সোহেলের বাড়িতে গিয়ে তাকে হত্যার হুমকি দেয়। এ সময় সোহেল দরজা বন্ধ করে আত্মরক্ষা করেন এবং স্বজন ও প্রতিবেশীদের ফোনে ঘটনাটি জানান। খবর পেয়ে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে নাঈমকে ঘিরে ফেলে। এক পর্যায়ে তারা তাকে ধরে ফেলে এবং গণপিটুনি দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু ঘটে।
এ বিষয়ে কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল জানান, দুই পক্ষের মধ্যে পূর্ববিরোধের জেরে এই ঘটনার সূত্রপাত। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, স্থানীয়দের গণপিটুনিতেই নাঈমের মৃত্যু হয়েছে।
তিনি আরও জানান, নিহত নাঈমের নামে কাপাসিয়া থানায় একটি মামলা রয়েছে এবং মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর মর্গে পাঠানো হয়েছে। নাঈমের পরিবারের কেউ বর্তমানে গ্রামে না থাকায় তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। স্বজনদের পক্ষ থেকে আবেদন এলে এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান ওসি।
বিবার্তা/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]