ইবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্ত্রীকে নির্যাতন ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ
প্রকাশ : ০৪ জুন ২০২৪, ২০:২৪
ইবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্ত্রীকে নির্যাতন ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ
ইবি প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) এর ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক ড. সঞ্জয় কুমার সরকারের বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতন ও হত্যাচেষ্টাসহ নানা অভিযোগ করেছেন তার স্ত্রী জয়া সাহা। মঙ্গলবার (৪ জুন) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস কর্নারে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন তিনি। এছাড়া এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ড. সঞ্জয়ের স্ত্রী জয়া। সংবাদ সম্মেলনে জয়া’র পিতা-মাতা উপস্থিত ছিলেন।


সংবাদ সম্মেলনে জয়া সাহা বলেন, ২০১৫ সালে পারিবারিকভাবে ড. সঞ্জয়ের সাথে বিবাহবন্ধনের আবদ্ধ হই। বিয়ের পর থেকেই শারীরিকভাবে নির্যাতন করতেন ড. সঞ্জয়। ১০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হই। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্রীর সাথে সঞ্জয়ের অশ্লীল চ্যাটিং, ফোনালাপ ও কুপ্রস্তাব নজরে আসে। এসব বিষয়ে ধরা পড়ার ভয়ে আমাকে ক্লাসে আসতে বাঁধা দিতেন সঞ্জয়।


ড. সঞ্জয় টাকার বিনিময়ে চাকরি নিয়েছেন বলে অভিযোগ করে তার স্ত্রী জানান, টাকার বিনিময়ে চাকরি পাওয়ার বিষয়টি তাদের গ্রামে ‘ওপেন সিক্রেট’। এছাড়া বিয়ের সময় আমার বাবার কাছ থেকে ২৫ লাখ টাকা উপহার পান সঞ্জয়। এ টাকা দিয়ে চাকরির উৎকোচ পরিশোধ করেন। কিন্তু এর পরেও আমার বাবা-মাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতেন।


সন্তানসম্ভবা হওয়ার পরেও আমার উপর নির্যাতন চালাতেন অভিযোগ করে জয়া জানান, সন্তান জন্মের পর দুজনের উপরই চলে নির্যাতন। এছাড়া একদিন বটি দিয়ে আমাকে কোপ দিতে উদ্যত হলে গৃহপরিচারিকা এসে বাঁচান। এক বছর আগে নাটোরে সন্তানসহ আমাকে রেখে আসেন তিনি। এরপর আমাদের আর কোন খোঁজ নেননি তিনি। ১০ লাখ টাকা দিলে সন্তানসহ আমাকে বাসায় নিয়ে যাবে।


ভুক্তভোগী জয়া সাহা বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি। আমার প্রতি হওয়া অন্যায়ের বিচার চাই।


অভিযুক্ত শিক্ষক সঞ্জয় কুমার সরকার বলেন, এটা আমাদের পারিবারিক বিষয়। এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাচ্ছি না। তবে আমার স্ত্রী ও সন্তানের জন্য আমার দরজা সবসময় খোলা।


এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বিবার্তাকে বলেন, এসব পারিবারিক বিষয়ে আমরা কি করতে পারি? তারা আদালতে যাক। আদালত যদি তাকে দোষী সাব্যস্ত করে তাহলে আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব।


উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে উপাচার্যের কাছে ড. সঞ্জয় কুমার সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের গভীর রাতে মেসেজ দেয়া ও উত্ত্যক্ত করার বিষয়ে অভিযোগ করেন এক ছাত্রী। এ ঘটনায় তৎকালীন ভিসি ড. সঞ্জয় কুমারকে তিরস্কার ও সতর্ক করেন। অভিযোগের পেছনে হাত থাকার সন্দেহে বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে রুমে ডেকে হুমকি দেন ড. সঞ্জয়। এছাড়া সন্দেহভাজন সেই শিক্ষার্থীকে দু’টি কোর্সে ফেল করিয়ে দেয়ার অভিযোগও ওঠে তার বিরুদ্ধে। সঞ্জয়ের নির্যাতন ও চাপের কারণে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন ওই ছাত্রী। পরে ঘটনায় তদন্ত শেষে সঞ্জয়কে ওই ছাত্রীর সকল কোর্স থেকে সাসপেন্ড করা হয়।


বিবার্তা/জায়িম/রোমেল/এমজে

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com