খুলনায় আশ্রয়কেন্দ্রে ১ লাখ ৩৩ হাজার মানুষ
প্রকাশ : ২৭ মে ২০২৪, ০১:৪৫
খুলনায় আশ্রয়কেন্দ্রে ১ লাখ ৩৩ হাজার মানুষ
খুলনা প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

খুলনার উপকূলীয় উপজেলা কয়রা, পাইকগাছা, দাকোপ ও বটিয়াঘাটায় অনেক জায়গায় ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধের ওপর দিয়ে আছড়ে পড়ছে পানির বড় বড় ঢেউ। রিং বাঁধ দিয়ে পানি আটকানোর চেষ্টা করে স্থানীয় বাসিন্দারা। তারপরও অনেক স্থান দিয়ে বেড়িবাঁধ উপচে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে। এতে আশপাশের মানুষ আতঙ্কিত হয়ে সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নেওয়া শুরু করেছেন। মানুষের পাশাপাশি গবাদি পশুও আনা হচ্ছে।


জানা গেছে, খুলনার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৩৩ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।


পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, খুলনার ৯ উপজেলায় (কয়রা, পাইকগাছা, বটিয়াঘাটা, দাকোপ, ডুমুরিয়া, রূপসা, দিঘলিয়া, তেরখাদা, ফুলতলা) মোট ৯৯৫ দশমিক ২৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে ঝুঁকিতে রয়েছে সাড়ে ১৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ। তবে উপকূলীয় কয়রা, পাইকগাছা, দাকোপ ও বটিয়াঘাটায় উপজেলায় ঝুঁকিতে রয়েছে ১৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ। রেমালের প্রভাবে নদীতে ভরা জোয়ারে স্বাভাবিকের থেকে ৩ থেকে ৪ ফুট পানির উচ্চতা বাড়ে। এতে বেড়িবাঁধের উপর পানি আঁচড়ে পড়ে। অনেক স্থানে পানি উপচে লোকালয়ে প্রবেশ করে। স্থানীয় বাসিন্দারা রিং বাঁধ দিয়ে পানি আটকানোর চেষ্টা করলেও অনেক স্থানে তা ঢেকানো যায়নি। যা আশপাশের মানুষদের আতঙ্কিত করে।


কয়রা উপজেলার ৪ নম্বর মহারাজপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আবু সাঈদ মোল্লা জানান, মঠবাড়ি সুতি অফিস স্লুইসগেট, লঞ্চঘাটের পাশে সরদার বাড়ি এলাকায় বেড়িবাঁধ উপচে পানি গ্রামে প্রবেশ করে।


কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আছের আলী মোড়ল জানান, গোলখালি কোস্টগার্ড অফিস, কোপাতাক্ষ ফরেস্ট অফিসের দক্ষিণ পাশ, চরামোখা খালের গোরা থেকে মেদিরচর রাস্তা পর্যন্ত, জোড়শিং বাজার হতে খাসিটানা পুলিশ ফাঁড়ি হতে গেট পর্যন্ত বাঁধ উপচে গ্রামে পানি প্রবেশ করে। রিং বাঁধ দিয়ে পানি আটকানোর চেষ্টা করে। তবে তার অভিমত রাতে আরেকটি জোয়ার সামাল দেওয়া গেলে ঝুঁকি চলে যাবে।


দাকোপ উপজেলার সাবেক পৌর মেয়র অচিন্ত কুমার জানান, কলাবাগী এলাকার শিবসা নদীর পাড়ে পুরাতন বেড়িবাঁধ জোয়ারের পানি তেড়ে ভেঙে গেছে। এখানে অন্তত এক হাজার লোক ঝুলান্তভাবে বসবাস করে। তবে কিছু দুরে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে নতুন বেড়িবাঁধ তৈরি হয়েছে। নতুন বেড়িবাঁধের ভেতরে গ্রামে পানি আসার সুযোগ নেই।


খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের-২ (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম জানান, কয়রা, পাইকগাছা, বটিয়াঘাটা ও দাকোপ উপজেলার ১৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ আছে। জোয়ারের সময় পানি আচড়ে পড়েছে বাঁধের উপর। কিছু জায়গায় উপচে গ্রামে পানি প্রবেশ করে। তবে জোয়ারের তাণ্ডব ও জলোচ্ছ্বাসের কারণে অনেক জায়গার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।


খুলনা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল করিম জানান, খুলনার বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে ১ লাখ ৩৩ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। তাদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ, চিড়া, মুড়ি, গুড় পানিসহ শুকনা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া ৮০টি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। এরমধ্যে ৪৮টি মেডিক্যাল টিম মাঠে কাজ করছে।


তিনি জানান, দুর্যোগপ্রবণ উপকূলীয় এলাকার মানুষের জন্য গত শনিবারের মধ্যেই ৬০৪টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়। এছাড়া ৩টি মুজিব কিল্লা ও ৫ সহস্রাধিক স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছে। পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) স্বেচ্ছাসেবকরাও উপকূলীয় এলাকায় কাজ করছে।


বিবার্তা/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com