
ফেনীর ছাগলনাইয়ায় টাকা চুরির অভিযোগ তুলে মাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নূর মোহাম্মদ (১৮) নামে এক ছেলেকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ব্যাংক কর্মকর্তার পরিবারের বিরুদ্ধে। মরদেহ উদ্ধারের পর ওই ব্যাংক কর্মকর্তাকে আটক করেছে পুলিশ।
১৩ এপ্রিল, শনিবার বিকালে উপজেলার পাঠান নগর ইউনিয়নের বাথানিয়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। এঘটনায় নিহতের মা খাতিজা আক্তার বাদি হয়ে ৭ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ৫/৬ জনের নামে থানায় মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ এজহারভুক্ত ১ আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছে।
নিহত নুর মোহাম্মদ নোয়াখালীর সুধারাম থানার আন্দার চর গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে। সে ওই বাড়িতে দীর্ঘদিন যাবত কেয়ারটেকার হিসেবে কাজ করতেন।
নুর মোহাম্মদের মা বিবি খতিজা জানান, অভাবের কারণে চার বছর আগে নুর মোহাম্মদকে ব্যাংক কর্মকর্তা মঈন উদ্দিনর বাড়িতে কেয়ারটেকার হিসেবে দিয়ে যান তিনি। ছেলেটির মাসিক বেতন ধরা হয়েছিল দুই হাজার টাকা। চার বছরে তাকে কখনো ছুটি দিত না ওই পরিবার। সেই ক্ষোভে ২৭ রমজান ওই বাসা থেকে ৮০ হাজার টাকা ভর্তি একটি খাম নিয়ে নিজ বাড়ি চলে যান নুর মোহাম্মদ।
এরপর থেকে মোবাইল ফোনে হুমকি দিতে থাকেন ব্যাংক কর্মকর্তার পরিবারের সদস্যরা। তাদের অব্যাহত হুমকিতে ঈদের পরদিন ছেলেকে নিয়ে ব্যাংক কর্মকর্তার বাড়িতে হাজির হন তিনি। একইসথে চুরি করে নেওয়া টাকাগুলোও ফেরত দেন।
বিবি খতিজার অভিযোগ, বাড়ি ঢোকা মাত্রই ব্যাংক কর্মকর্তার চারভাই মিলে তাঁর ছেলেকে মারধর শুরু করেন। বাধা দিলে তাঁকেও মারধর করে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন। এরপর সারা রাত দফায় দফায় এবং পরদিনও তাঁর ছেলেকে মারধর করা হয়। তাদের মারধরের একপর্যায়ে শনিবার বিকেলে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে নুর মোহাম্মদ। বিবি খতিজা বলেন, ‘আমার ছেলের যদি কোনো অন্যায় থাকতো, তাহলে তারা তাকে পুলিশে দিত। আমি তাদের কাছে আমার ছেলের জীবন ভিক্ষা চেয়েছি। তবু তাদের মন গলেনি। এভাবে নির্যাতন করে, আমার চোখের সামনেই ছেলেটিকে মেরে ফেলল। আমি এ হত্যার বিচার চাই।’
বিষয়টি নিশ্চিত করে ছাগলনাইয়া থানার ওসি হাসান ইমাম বলেন, নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। মরদেহের পিঠ, কোমর, হাত-পাসহ পুরো শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের মা বাদি হয়ে ৭ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ৫/৬ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এজহারভুক্ত আসামি ব্যাংকার মঈন উদ্দিনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। আটককৃত মঈন উদ্দিন ব্যাংক কর্মকর্তা ও বাথানিয়া গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মারধরের কথা স্বীকার করেছেন তিনি।
বিবার্তা/এমজে
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]