আখাউড়া স্থলবন্দরে সাধারণ যাত্রীদের হয়রানি অভিযোগ
প্রকাশ : ০৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬:৪৫
আখাউড়া স্থলবন্দরে সাধারণ যাত্রীদের হয়রানি অভিযোগ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরের শুল্ক স্টেশনে (কাস্টমস) সাধারণ যাত্রীদের হয়রানি এখন যেন নিত্যদিনের এক বিস্ময়কর বিষয় হয় উঠেছে। পার পেয়ে যায় লাগেজ পাটি, সাধারণ যাত্রীদের ব্যাগ হয় তল্লাশির নামে হয়রানি। আর তাই, লাগেজ স্ক্যানিং কক্ষে সাধারণ যাত্রীদের ব্যাগ তল্লাশির নামে তাদের নানা ভাবে হয়রানি করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।


ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, যারা সমঝোতা করে তারা এসব ঝামেলা থেকে ছাড় পেয়ে যান। এর সুবিধা ভোগ করে লাগেজ পার্টি নামের অবৈধ ব্যবসায়ী চক্র!


এখন স্থলবন্দর দিয়ে অবৈধভাবে সমঝোতার মাধ্যমে লাগেজ পার্টির সদস্যরা লাখ লাখ টাকার বিদেশি পণ্য দেশে নিয়ে আসেন বলে অভিযোগ রয়েছে।


ঈদ সামনে রেখে ওই পার্টি প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার শাড়ি, থ্রিপিসসহ নানা ধরনের পোশাক ও কসমেটিকস নিয়ে আসছে প্রতিদিন।


গত ১৬ মার্চ কাস্টমসের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে পিটিয়ে লাগেজ পার্টির সদস্যরা তাদের পণ্য নিয়ে যান। তল্লাশি করার সময় জোর করে চলে যাওয়া সময় তাদের ধাওয়া করেন কাস্টসমের লোকজন।


কিছু দূর গিয়ে তাদের আটক করা হলেও মারধরের শিকার হন কাস্টমস কর্মকর্তারা। এ ঘটনায় থানায় মামলা হলে পুলিশ হৃদয় নামে একজনকে গ্রেফতার করে। মূলত সমঝোতা না করেই চলে যেতে চাওয়ায় ওই লাগেজ পার্টির পণ্য যেতে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।


গত দুই সপ্তাহে একাধিকবার আখাউড়া স্থলবন্দরে গিয়ে দেখা যায়, লাগেজ পার্টির চক্র এখনো সক্রিয় হয় আছেন অবৈধভাবে মালামাল আমদানিতে। বিশেষ করে ঈদকে সামনে রেখে এই চক্রটি ভারত থেকে পণ্য আনেন।


ভারতের আগরতলা থেকে আসা মিঠু নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, গত ১৯ মার্চ পরিচিত জনের ধর্মীয় একটি অনুষ্ঠানে কাজে লাগাতে একেকটি এক রুপি মূল্যে এক হাজার কাগজের থালা নিয়ে আসেন। এগুলোর জন্য আমদানি কর দিতে হবে উল্লেখ করে তাকে প্রথমে নাস্তানাবুদ করা হয়। এরপর চা-নাশতার কথা বলে ১০০ টাকা চেয়ে নেওয়া হয়।


ভারতের আগরতলার সঞ্জিত সাহা, তার বোন ঐশি সাহা ও আরেক আত্মীয় বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে বৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। এসময় তাদের ব্যাগ তল্লাশি করে একটি বৈধভাবে আনা মদের বোতল পাওয়া যায়। এটি নিতে হলে তাদের কাছে এক হাজার টাকা দাবি করা হয়। এতে রাজি না হওয়ায় তাদের জোর করে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করা হয়।


ভুক্তভোগী ঐশি সাহা বলেন, ‘আমি বলেছি আমার বয়স ১৮ বছর পার হয়েছে। মদ খেতে হলে বাসায় খাব। আপনাদের সামনে কেন খেতে হবে। এরপর তারা নতুন কাপড় কী কী আছে জানতে চান। আমি বলেছি বেড়াতে এলে নতুন কাপড় আনা যাবে না এমন কোনো নিয়ম আছে নাকি!’


ভুক্তভোগী যাত্রী সঞ্জিত সাহা বলেন, ‘আমার বোনকে জোর করে মদ খাইয়ে দিতে চান। আমাকেও খেতে বলেন। আমি বাংলাদেশ সরকারের কাছে এই ঘটনার বিচার চাই।’


এ বিষয়ে স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. আব্দুল কাইয়ুম তালুকদার বলেন, ‘ঘটনাটা মূলত ভুল-বোঝাবুঝি ছিল। যাত্রীরা খারাপ আচরণ করেছে। তবে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানানো হলে সিপাহি রুবেলকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে।’


১৬ মার্চ হামলার প্রসঙ্গের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, অনেক সময় যাত্রীরা, ব্যাগেজের যে নিয়ম আছে সেটি মানতে চান না। এ ক্ষেত্রে তাদের নির্ধারিত নিয়ম মেনে সরকারি কোষাগারে টাকা পরিশোধ করতে হয়। এটি বলার কারণে ১৬ মার্চ হামলার ঘটনা ঘটে।


বিবার্তা/নিয়ামুল/সউদ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com