রমজানের বিশেষ ইবাদত সেহরি ও ইফতার
প্রকাশ : ০১ এপ্রিল ২০২৩, ১০:৩৫
রমজানের বিশেষ ইবাদত সেহরি ও ইফতার
ধর্ম ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

রমজানের বিশেষ ইবাদত সেহরি ও ইফতারে রয়েছে বরকত, কল্যাণ ও অনেক সাওয়াব। 


রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা রমজানে সেহরি খাও, কেননা সেহরির মাঝে বরকত রয়েছে।’ (মুসলিম)। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেছেন, ‘আমাদের ও আহলে কিতাবের (বনি ইসরাইলিদের) রোজার পার্থক্য হলো সেহরি খাওয়া।’ (মুসলিম)


তাই বলা যায়, রোজার সাথে সেহরি খাওয়ার সম্পর্ক বিদ্যমান। অনেকে এমনও আছেন, যারা সেহরি না খেয়েই রোজা রাখেন, যা মোটেও ঠিক নয়। কেননা হাদিসের বর্ণনায় সেহরির মাঝে বরকত নিহিত।


হাদিসে এসেছে, ইফতারের সময় হলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম 'বিসমিল্লাহ' বলে এ দোয়া পড়তেন-


اَللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَ عَلَى رِزْقِكَ وَ اَفْطَرْتُ


উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু, ওয়া আ’লা রিযক্বিকা ওয়া আফত্বারতু।


অর্থ : হে আল্লাহ! আমি তোমারই জন্যে রোজা রেখেছি এবং তোমারই দেয়া রিযিক দ্বারা ইফতার করছি।’ (আবু দাউদ মুরসাল, মিশকাত)


হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইফতার করাকালীন বা শেষে এই দোয়া করতেন-


ذَهَبَ الظَّمَاءُ وَابْتَلَتِ الْعُرُوْقُ وَ ثَبَتَ الْأَجْرُ اِنْ شَاءَ اللهُ


উচ্চারণ : ‘জাহাবাজ জামাউ; ওয়াবতালাতিল উ’রুকু; ওয়া ছাবাতাল আঝরূ ইনশাআল্লাহ।’


অর্থ : ‘(ইফতারের মাধ্যমে) পিপাসা দূর হলো, শিরা-উপসিরা সিক্ত হলো এবং আল্লাহ যদি চান তবে প্রতিদানও স্থির হলো।’ (আবু দাউদ, মিশকাত)


রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খেজুর আর পানি দিয়ে ইফতার করতেন। তাঁর ইফতার ছিল অত্যন্ত সাধারণ ইফতার।


তিনি সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে সামান্য কয়েকটি তাজা খেজুর দ্বারা ইফতার করতেন। যদি তাজা খেজুর না পেতেন, তবে শুকনা খেজুর, আর যদি তাও না পেতেন, তবে কয়েক ঢোক পানি পান করে ইফতার করতেন।’ (বুখারি-মুসলিম)


ইফতার শুধু নিজে করলেই হবে না বরং অন্যদেরকেও ইফতার করাতে হবে। আমরা যেখানে বসবাস করি, এর আশপাশে এমন অনেক রোজাদার পাওয়া যাবে যাদের কাছে ইফতারের জন্য কিছুই নেই। খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে, যারা অসহায়-গরিব তাদের জন্য সেহরি ও ইফতারের ব্যবস্থা করতে হবে।


সেহরিতে রয়েছে কল্যাণ ও বরকতে ভরপুর। রাতের শেষ সময়ে সেহরি করতে বলেছেন প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। হাদিসের বর্ণনা এসেছে-


কেউ কেউ সেহরির সময় হওয়ার আগেই সেহরি খেয়ে ফজর নামাজ আদায় না করেই ঘুমিয়ে যান। হাদিসে বিখ্যাত গ্রন্থ বুখারিতে এসেছে-


রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সেহরি খাওয়া আর ফজরের নামাজের আজানের মাঝে সময়ের ব্যবধান ছিল- পঞ্চাশ আয়াত তেলাওয়াত করার মতো সময়।'


বিখ্যাত হাদিস গ্রন্থ মুসলিমে এসেছে, হজরত বেলাল রাদিয়াল্লাহু আনহুর আজান শুনে সেহরি খাওয়া থেকে বিরত হতে নিষেধ করেছেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। কারণ হজরত বেলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু রাত থাকতেই আজান দিয়ে দিতেন।' তাই সেহরির যে সময় নির্ধারণ করা আছে সেই সময়ই সেহরি খাওয়া উচিত।


এছাড়াও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেহরি খাওয়াতে কিছুটা বিলম্ব করতে এবং ইফতার সূর্য অস্ত যাওয়ার সাথে সাথে করাকে পছন্দ করতেন। তিনি উম্মতে মুহাম্মাদিকে এ নির্দেশই দিয়েছেন, তারাও যেন এমনটি করেন। বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশনায় ইফতার ও সেহরিতে রয়েছে কল্যাণ। হাদিসে এসেছে-


রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘লোকেরা যত দিন দ্রুত ইফতার করবে, ততদিন কল্যাণের মাঝে অবস্থান করবে।’ (বুখারি)


পুনরায় অন্য স্থানে এভাবে বর্ণিত হয়েছে, হজরত ওমর ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যখন রাত ঐ (পূর্ব) দিক হতে আসে এবং ঐ (পশ্চিম) দিকে চলে যায় আর সূর্য ডুবে যায় তখন যেন রোজাদার ইফতার করে নেয়।' (বুখারি)


তাই আসুন, সেহরি ও ইফতারের কল্যাণের প্রতি খেয়াল রেখে সময়মত সেহরি ও ইফতার করি। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করি।


বিবার্তা/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com