শিরোনাম
চোরের শাস্তির বিধান
প্রকাশ : ১১ মার্চ ২০২৩, ০৮:০০
চোরের শাস্তির বিধান
ধর্ম ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

অন্যের মাল হেফাজতকৃত ও সংরক্ষিত স্থান থেকে বিনা অনুমতিতে গোপনে নিয়ে যাওয়াকে ইসলামের পরিভাষায় চুরি বলা হয়।


আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমরা অন্যায়ভাবে একে অপরের সম্পদ ভোগ করো না এবং জনগণের সম্পদের সামান্য অংশও জেনে-শুনে পাপ পন্থায় আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে শাসন কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিও না।’ (সুরা বাকারা : ১৮৮)


ইসলামে চুরির শাস্তি প্রদানে ধনী ও গরিবের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। সবার জন্য একই ধরনের শাস্তি নির্ধারণ করা হয়েছে। 


হজরত আয়েশা (রা.) একটি ঘটনা বর্ণনা করেন, ‘মাখজুম গোত্রের একজন নারীর চুরির ঘটনা কুরাইশের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের অত্যন্ত উদ্বিগ্ন করে তুলল। এ অবস্থায় তারা বলাবলি করতে লাগল, এ ব্যাপারে আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে কে আলাপ করতে পারে? 


তারা বলল, একমাত্র রাসুল (সা.)-এর প্রিয় পুত্র উসামা বিন জায়েদ (রা.) এ ব্যাপারে আলোচনা করার সাহস করতে পারেন। উসামা (রা.) নবী (সা.)-এর সঙ্গে কথা বললেন। 


নবী (সা.) বললেন, তুমি কি আল্লাহর নির্ধারিত সীমালঙ্ঘনকারিণীর সাজা মাওকুফের সুপারিশ করছ? 


অতঃপর নবী (সা.) দাঁড়িয়ে খুতবায় বললেন, ‘তোমাদের আগের জাতিগুলোকে এ কাজই ধ্বংস করেছে যে, যখন তাদের মধ্যে কোনো বিশিষ্ট লোক চুরি করত, তখন তারা বিনা সাজায় তাকে ছেড়ে দিত। অন্যদিকে যখন কোনো অসহায়-গরিব সাধারণ লোক চুরি করত, তখন তার ওপর শাস্তি প্রয়োগ করত। আল্লাহর কসম, যদি মোহাম্মদ (সা.)-এর কন্যা ফাতিমা চুরি করত তা হলে আমি অবশ্যই তাঁর হাত কেটে দিতাম।’ (বুখারি : ৩৪৭৫)


কেউ যেন অন্যের ধন-সম্পদ চুরি করার সাহস না পায় এজন্য ইসলামে চোরের জন্য শাস্তি নির্ধারণ করা হয়েছে।


চোরের জন্য ইসলামে হাতকাটার শাস্তি নির্ধারণ করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘যে পুরুষ চুরি করে এবং যে নারী চুরি করে তাদের হাত কেটে দাও তাদের কৃতকর্মের শাস্তি হিসেবে। আল্লাহর পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি। আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী, মহাজ্ঞানী।’ (সুরা মায়িদা : ৩৮)


তবে চুরি করলেই ইসলামে হাত কেটে দেওয়ার বিধান দেওয়া হয়নি, বরং হাত কাটার শাস্তি প্রয়োগের ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি শর্ত রয়েছে।


প্রথমত, চুরি হয়ে যাওয়া জিনিসটি অন্যের মালিকানাধীন হতে হবে। তাতে চোরের ন্যূনতম মালিকানা ও মালিকানার সন্দেহও থাকতে পারবে না। এবং মালটি এমন বস্তু হতে পারবে না, যাতে জনগণের সমান অধিকার রয়েছে। 


দ্বিতীয়ত, চুরি হয়ে যাওয়া জিনিসটি সংরক্ষিত ও হেফাজতের জায়গায় থাকতে হবে। অরক্ষিত স্থান থেকে কোনো জিনিস চুরি হলে তার জন্য হাত কাটা যাবে না। 


তৃতীয়ত, মালটি বিনা অনুমতিতে নিতে হবে। যে মাল নেওয়ার বা ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়, সে যদি তা একেবারেই নিয়ে যায়, তাহলে চুরির 'হদ' জারি হবে না। 


চতুর্থত, মালটি গোপনে নিতে হবে। কেননা অন্যের মাল প্রকাশ্যে নিলে তা চুরি নয়, ডাকাতি। 


পঞ্চমত, তার চুরির ব্যাপারটি সব ধরনের সংশয়হীন ও সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হতে হবে। উপরোক্ত শর্ত পাওয়া না গেলে সমকালীন বিচারকের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাকে শাস্তি দেওয়া হবে, কিন্তু তার হাত কাটা যাবে না।


বিবার্তা/এসবি

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com