
ইসলামের দৃষ্টিতে সত্য প্রকাশই মানব্জীবনের অবশ্য-পালনীয় নীতি হওয়া উচিত। সত্যকে গোপন না করা মহান আল্লাহর নির্দেশ। আল্লাহ সূরা বাকারার ৪২ নম্বর আয়াতে ইরশাদ করছেন, ‘এবং তোমরা সত্যকে মিথ্যার সঙ্গে মিশিও না এবং জেনে-বুঝে সত্য গোপন কোরো না।’ রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘মিথ্যা সংবাদ প্রচার করা, মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া কবিরা গুনাহ।’ বুখারি, মুসলিম।
কোরআনের মহা সত্য বাণীর তথ্য গোপনকারীদের ভয়াবহ পরিণাম সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা কঠোর ভাষায় ইরশাদ করেন-
اِنَّ الَّذِیۡنَ یَکۡتُمُوۡنَ مَاۤ اَنۡزَلۡنَا مِنَ الۡبَیِّنٰتِ وَ الۡهُدٰی مِنۡۢ بَعۡدِ مَا بَیَّنّٰهُ لِلنَّاسِ فِی الۡکِتٰبِ ۙ اُولٰٓئِکَ یَلۡعَنُهُمُ اللّٰهُ وَ یَلۡعَنُهُمُ اللّٰعِنُوۡنَ
‘যারা আমার অবতীর্ণ উজ্জল শিক্ষাবলী ও বিধানসমূহ গোপন করে অথচ বিশ্ব মানবতাকে (সঠিক) পথের সন্ধান দেবার জন্য আমি সে (নিদর্শন তথা আয়াত)গুলো আমার কিতাবে বর্ণনা করেছি। নিশ্চিতভাবে জেনে রাখ, আল্লাহ তাদের (সত্য গোপনকারীদের) ওপর অভিশাপ বর্ষণ করেন এবং সব অভিশাপ বর্ষণকারীরাও তাদের ওপর অভিশাপ বর্ষণ করে।’ (সুরা বাক্বারা : আয়াত ১৫৯)
নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি সত্যবাণীর ব্যাপারে যারা সন্দেহ পোষণ করবে বা কুরআনের সত্যবাণী বা বিধানকে গোপন করবে; তাদের পরিণতি আগের সব নবি-রাসুলদের অনুসারী তথা ইহুদি, খ্রিস্টান, নাসারাসহ সব আসমানি কিতাবের তথ্য গোপনকারী সে সব অনুসারীদের ভয়াবহ পরিণতির ভাগ্য বহন করতে হবে।
আল্লাহ তা্আলা কুরআনুল কারিমে এ আয়াত উল্লেখ করে মুসলিম উম্মাহকে সত্য জ্ঞানের তথ্য কোরআনের সঠিক দিক-নির্দেশনা গোপন করার বিষয়ে সতর্কতা প্রদানে ধমক প্রদান করেছেন। কেননা কোরআনে বলা হয়েছে-‘যারা সত্যকে গোপন করে তারা অভিশপ্ত।’
কোরআনের অন্য আয়াতে সত্য গোপনকারীদেরকে অভিশপ্ত করে আল্লাহ তাআলা কঠোর ভাষায় আরো ঘোষণা করেন-
اِنَّ الَّذِیۡنَ یَکۡتُمُوۡنَ مَاۤ اَنۡزَلَ اللّٰهُ مِنَ الۡکِتٰبِ وَ یَشۡتَرُوۡنَ بِهٖ ثَمَنًا قَلِیۡلًا ۙ اُولٰٓئِکَ مَا یَاۡکُلُوۡنَ فِیۡ بُطُوۡنِهِمۡ اِلَّا النَّارَ وَ لَا یُکَلِّمُهُمُ اللّٰهُ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ وَ لَا یُزَکِّیۡهِمۡ وَ لَهُمۡ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ
‘আল্লাহ যে কিতাব অবতীর্ণ করেছেন, যারা তা গোপন করে এবং তার বিনিময়ে স্বল্প মূল্য গ্রহণ করে, তারা কেবল আগুন দিয়ে নিজেদের পেট পূর্ণ করে। শেষ বিচারের দিন আল্লাহ তাআলা তাদের সঙ্গে কথা বলবেন না এবং তাদেরকে (পাপ-পংকিলতা থেকে) পবিত্রও করবেন না। আর তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।’ (সুরা বাক্বারা : আয়াত ১৭৪)
হাদিসে পাকে এসেছে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সত্য তথ্য গোপনকারীদের বিষয়ে কঠিন আজাবের কথা বর্ণনা করেছেন। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
‘যে ব্যক্তি ইসলামি শরিয়তের কোনো জিনিস সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হয় এবং উত্তর প্রদানে সে তা (সত্য) গোপন করে; কেয়ামতের দিন তাকে (সত্য গোপনকারীকে) আগুনের লাগাম পরানো হবে। (নাউজুবিল্লাহ)
এছাড়াও, আল কোরআনে বলা হচ্ছে, ‘কিন্তু সীমালঙ্ঘন কোরো না। নিশ্চয় আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীদের ভালোবাসেন না।’
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কোরআনের বিধানসহ সব সত্যবাণী প্রকাশের তাওফিক দান করুন। ছোট হোক বা বড় হোক ইসলামি শরিয়তের যে কোনো সত্য গোপন করা থেকে হেফাজত করুন। কোরআন-সুন্নাহ মোতাবেক জীবন পরিচালনা করার তাওফিক দান করুন।
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]