
ওয়াসার পানির মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত এখনো চূড়ান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন ঢাকা ওয়াসার উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (বাণিজ্য) উত্তম কুমার রায় বলেন, পানির মূল্য নির্ধারণের জন্য শ্রেণিভিত্তিক যে পরিকল্পনা তার জন্য একটি বিদেশী প্রতিষ্ঠান কেবলমাত্র সমীক্ষা করেছে। এ ব্যাপারে নাগরিক সমাজ, গণমাধ্যম এবং সরকারের বিভিন্ন স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে সেই সঙ্গে সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
১৪ ফেব্রুয়ারি, বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজ আয়োজিত ‘শ্রেণিভিত্তিক পানির মূল্য ও সুপেয় পানির অঙ্গীকারের বাস্তবতা- আমাদের মতামত’ শীর্ষক নাগরিক মতবিনিময় সভায় তিনি এ তথ্য জানান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিনিয়র সচিব (অব.) মো. মফিজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ সরকার এখন পর্যন্ত নিরাপদ এবং আগামী প্রজন্মের জন্য পানির নিরাপত্তা ও নিশ্চয়তার মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারেনি।
তিনি ঢাকা ওয়াসার উদ্দেশে বলেন, ঢাকা ওয়াসা প্রথমে শীতলক্ষ্যা ও পরে মেঘনা নদী থেকে পানি সরবরাহের প্রকল্প গ্রহণ করে। অথচ ঢাকার মধ্যে থাকা বুড়িগঙ্গা ও তুরাগ নদীর পানি কীভাবে ব্যবহার করা যায় তার পরিকল্পনা করেনি। তাদেরকে বললে তারা জানায় যে এই দুই নদীর পানি এরই মধ্যে দূষিত হয়ে গেছে। তাহলে প্রশ্ন হলো আগামীদিনে পদ্মা, শীতলক্ষ্যা এবং মেঘনা নদীর পানি যে দূষিত হবে না তার নিশ্চয়তা কী? পানি অমূল্য সম্পদ। তাই পানির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে মহাপরিকল্পনা নেয়া দরকার।
মূল্য বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শ্রেণিভিত্তিক না করে উচ্চ শ্রেণির জন্য করের হার বৃদ্ধি করা যায় কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা ওয়াসার উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (বাণিজ্য) উত্তম কুমার রায় বলেন, পানির মূল্য নির্ধারণের জন্য শ্রেণিভিত্তিক যে পরিকল্পনা তার জন্য একটি বিদেশি প্রতিষ্ঠান কেবল সমীক্ষা করেছে। এ ব্যাপারে আমরা নাগরিক সমাজ, গণমাধ্যম এবং সরকারের বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে সেইসঙ্গে সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। পানির মূল্য বৃদ্ধির কথা যেভাবে সংবাদমাধ্যমে আসছে যে মূল্য বৃদ্ধি হচ্ছে জুন মাস থেকে তা সঠিক নয়। কারণ এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত শুধু আমাদের একার নয়, সরকারের সিদ্ধান্ত সবার আগে। তাই এ বিষয়ে এখনো আলোচনা হয়নি।
সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, একটি গণশুনানীর ভিত্তিতে পানির মূল্য নির্ধারণ করা হোক। কারণ উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি কেন হচ্ছে আর প্রকল্পের নামে যে অনিয়ম আছে বলা হয় তার জন্য গণশুনানী করে সঠিক সিদ্ধান্ত ওয়াসাকে নিতে হবে।
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান মুশতাক হাসান মুহা. ইফতেখার বলেন, পানির মূল্যের চাইতে সুপেয় পানি এবং আগামী প্রজন্মের জন্য সকল নাগরিকের পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করার তাগিদ দেন।
সমকালের স্পেশাল করসপন্ডেন্ট অমিতোষ পাল বলেন, ঢাকা ওয়াসা বর্তমানে লাভে রয়েছে। অথচ পানির মূল্য বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। বিভিন্ন প্রকল্পের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে অনেক প্রকল্পে লোকসান হচ্ছে। ঢাকা ওয়াসাকে লাভজনক করতে চায় সরকার। কিন্তু ঢাকা ওয়াসা একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান একথাটি ভুলে গেলে চলবে না।
ইউটিলিটি রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনের (ডুরা) সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মোল্লা বলেন, পানির মূল্য কোনভাবেই সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় যাতে ব্যাঘাত সৃষ্টি না করে সেদিকে নজর রেখেই ঢাকা ওয়াসাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। উচ্চবিত্তদের পানির মূল্য বৃদ্ধির যে সিদ্ধান্ত সেটি সঠিক বলে আমি মনে করি।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]