রান্নাঘর বাসার অতি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। রান্নাঘরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে খাওয়াদাওয়া দূরে থাক, দুর্ঘটনার কবলে পড়ে জীবন হতে পারে বিপন্ন।
সেক্ষেত্রে, রান্নাঘরে কাজ শুরুর আগে এবং কাজের শেষে রোজ কিছু বিষয় নজরে আনতে হবে।
এদিকে, রান্না ঘরের চুলা জ্বালানোর পূর্বে ১৫ মিনিট দরজা জানালা খুলে অপেক্ষা করার আহবান জানিয়েছে তিতাস গ্যাস।
তিতাস থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রান্না ঘরের চুলা জ্বালানোর আগে দরজা জানালা খুলে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। নির্ভয়ে ও নির্বিঘ্নে রান্না করুন। এ ছাড়া যে কোনো প্রয়োজনে তিতাসের হট লাইন ১৬৪৯৬ নম্বরে কল করার অনুরোধ জানানো হয়।
সোমবার (২৪ এপ্রিল) মধ্যরাতে রাজধানীর মগবাজার, মালিবাগ, নয়াটোলাসহ কয়েকটি এলাকা থেকে গ্যাসের গন্ধ বেরুতে থাকে। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর তিতাসের পক্ষ থেকে নোটিশ করে কারণ জানিয়ে দেওয়া হয়। তার পরের দিন জ্বালানি মন্ত্রণালয় থেকেও কারণ উল্লেখ করা হয়। সেখানে বলা হয়, শিল্পাঞ্চল বন্ধ থাকায় গ্যাসের চাপ বেড়ে যায় ফলে কোথাও কোথাও লিকেজের সৃষ্টি হলে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
রান্নাঘর–সংক্রান্ত কিছু বিষয়
১। কাজ শুরুর আগে সব জানালা-দরজা খুলে দিতে হবে। দরজা, সম্ভব হলে জানালার পাল্লাও বেশ কয়েকবার এদিক-ওদিক করে নেওয়া ভালো। এতে জমাট বাতাস সরে যাবে। ভেন্টিলেশন ফ্যান থাকলে চালু করে দিন। কিচেন হুড থাকলে চালিয়ে দিন।
২। রোজ কাজ শেষে শুকনা কাপড় দিয়ে চুলা মুছে রাখা জরুরি। প্রয়োজন হলে কাপড়টিকে ভিনেগার দিয়ে ভিজিয়ে নেওয়া যেতে পারে। তবে পানি দিয়ে ভেজানো যাবে না।
৩। ভালো মানের চুলা ব্যবহার করুন। কিছু অর্থ সাশ্রয় করতে গিয়ে নিম্নমানের চুলার কারণে জীবন সংশয়ও হতে পারে।
৪। মাসে একবার বার্নারের ছিদ্র এবং ক্রেট পরিষ্কার করুন ।
৫। লাইনের গ্যাস এবং গ্যাস সিলিন্ডারের চুলা আলাদা। পিউরিফায়েড ন্যাচারাল গ্যাস (পিএনজি) এবং লিকুইফায়েড পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) জন্যও আলাদা চুলা ব্যবহার করতে হয়। একটির জন্য নির্দিষ্ট চুলা অন্যটিতে ব্যবহার করা উচিত নয়।
৬। গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার এবং এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নেওয়ার সময় সতর্ক থাকুন। নিরাপত্তার নিয়মগুলো মেনে না চললে সহজেই সিলিন্ডার থেকে ভয়াবহ বিস্ফোরণ হতে পারে।
৭। চুলায় সমস্যা হলে অভিজ্ঞ ব্যক্তির সাহায্য নিন। অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটাতে পারে, এমন কাজ অন্যকে করতে দেখলে তাঁকে বিষয়টির গুরুত্ব বুঝিয়ে বলুন।
৮। ধূমপান করবেন না। করলেও জ্বলন্ত সিগারেট কোথাও ফেলবেন না।
৯। জ্বলন্ত ম্যাচের কাঠিও এদিক-ওদিক ফেলা যাবে না।
১০। বাড়িতে দাহ্য বস্তু (যেমন কার্পেট) না রাখাই ভালো। ছোটখাটো অগ্নিদুর্ঘটনা দাহ্য বস্তুর উপস্থিতিতে মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে।
গ্যাস সংযোগ
সংযোগ লাইন বসানোর সময় জাতীয় ভবন নির্মাণ বিধিমালা মেনে চলা আবশ্যক। বিধিমালা অনুসারে গ্যাসের লাইন অবশ্যই ভবনের দেয়াল থেকে অন্তত আধ ইঞ্চি, বৈদ্যুতিক লাইন থেকে আড়াই ইঞ্চি এবং উত্তপ্ত স্থান থেকে ৬ ইঞ্চি দূরত্বে স্থাপন করতে হয়। গ্যাসের লাইন কোনো দেয়াল বা স্ল্যাবের ভেতর করা যাবে না। খেয়াল রাখতে হবে, যাতে সংযোগ পাইপে সরাসরি রোদ না লাগে। ভালো মানের যন্ত্রাংশ ব্যবহার করলে এবং সংযোগ পাইপের নিরাপত্তার জন্য নির্ধারিত কালো আবরণ থাকলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে না।
গ্যাসসংযোগের নিরাপত্তায় করণীয়
সপ্তাহে একবার গ্যাস লিকেজ শনাক্তকরণ যন্ত্র দিয়ে গ্যাসলাইন পরীক্ষা করুন। তেল-গ্রিজ জমছে কি না, দেখুন।
গ্যাসলাইনের খুব কাছাকাছি জায়গায় ড্রিল করবেন না বা এমন কিছু করবেন না, যাতে লাইনের ক্ষতি হতে পারে।
গ্যাসলাইনের কাজ করাতে হলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সহায়তা নিন।
অবৈধ সংযোগ নেওয়া থেকে বিরত থাকুন।
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]