
আজ টেডি ডে। প্রিয়জনকে টেডি উপহার ডেওয়ার দিন। টেডি বিয়ার উপহার দেওয়ার পিছনে মূল কারণটি হল প্রিয়জনের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করা, তাদের খুশি করা। আপনি দূরে রইলেও, আপনার দেয়া নরম টেডিকে জড়িয়ে ধরতে পারবেন আপনার সঙ্গী।
এই দিনে প্রিয়জনের মন জয় করতে উপহার দিন টেডি বিয়ার। সফট টয় হিসেবে দারুন জনপ্রিয় টেডি বিয়ার এক নিমেষে বদলে ফেলতে পারে আপনার গম্ভীর প্রেমিকার মেজাজ। একটা শব্দ খরচ না করেও ওই এক টেডি আপনার বার্তা বাহক হয়ে ভালোবাসার মানুষটির কাছে পৌঁছে দিতে পারে আপনার গভীরতম ভালোবাসার গোপন অনুভূতি। সব ঝগড়া, সব অভিমান ওই এক পুতুলেই ধুলোবালি হয়ে উড়ে যাবে।
কাকে দিবেন টেডি বিয়ার?
** প্রেমিকারাও পিছিয়ে থাকবেন না, সারা বছর তো প্রেমিকরাই আপনাদের নরম পুতুল উপহার দেন। আজ আপনি না হয় একটা টেডি দিয়ে ভালোবাসার অব্যক্ত ইস্তেহারটা পৌঁছে দিন প্রেমিকের কাছে। দেখবেন, আপনার প্রেমিক প্রবরটি এতে চমকে গেলেও মনে মনে খুশি হবেন বিস্তর।
** টেডি ডে-তে ছোট ভাই-বোনকেও উপহার দিতে পারেন টেডি বিয়ার। খেলনা হিসেবে টেডি বিয়ার কতটা প্রিয় হতে পারে, তা নিজের শৈশবের দিকে তাকালে যেকেউ বুঝতে পারবেন।
যা হোক, খেলনা হিসেবে টেডি বিয়ার অর্থাৎ ভালুকের পুতুলের উত্থান কীভাবে হলো তা জানা আছে কী? বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় এই সফট টয়-এর জন্মের পেছনে রয়েছে এক দারুণ গল্প।
১৯০২ সালের নভেম্বর মাসে মিসিসিপিতে শিকারে বেরিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট থিওডর রুজভেল্ট (ডাক নাম টেডি)। মিসিসিপি ও লুসিয়ানিয়ার সীমান্ত সমস্যা নিয়ে তখন জর্জরিত তিনি। অনেকক্ষণ খুঁজেও সেদিন ভালো শিকার পাননি রুজভেল্ট। এ দিকে নিশপিশ করছে রাইফেলের ডগা।
প্রেসিডেন্টকে খুশি করতে তার সঙ্গীরা ধরে আনেন এক লুসিয়ানিয়া কালো ভালুক ছানা। কিন্তু গাছের গুঁড়িতে বেঁধে রাখা ভালুক ছানার ওপর গুলি চালাতে মন সাড়া দেয়নি রুজভেল্টের। ছোট্ট ছানাটিকে ছেড়ে দেন তিনি।
পরবর্তীতে ‘ড্রইং দ্য লাইন ইন মিসিসিপি’ কার্টুনে এই গল্প তুলে ধরেছিলেন ওয়াশিংটনের প্রখ্যাত কার্টুনিস্ট ক্লিফর্ড বেরিম্যান। ছবিতে তিনি আঁকেন রুজভেল্ট রাইফেল হাতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তার পেছনে পুঁচকে এক ভালুক ছানা।
এই কার্টুন দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন ব্রুকলিনের খেলনার দোকানের মালিক মরিস মিচম। তিনি বানিয়ে ফেলেন মিষ্টি এক টেডি বিয়ার। তবে তা বিক্রি করার কোনো উদ্দেশ্য ছিল না তার। দোকানের জানালার পাশে সাজিয়ে রাখেন টেডি। পাশে বেরিম্যানের আঁকা কার্টুনের কপি। তাকে অবাক করে খদ্দেররা দোকানে ঢুকেই কিনতে চান টেডি। মিচম ছুটে যান রুজভেল্টের কাছে। তার ও তার স্ত্রীর বানানো টেডি বিক্রির অনুমতি চান। অনুমতি মেলায় খেলনা হিসেবে যাত্রা শুরু হয় টেডি বিয়ারের। ১৯০৩ সালে মিচম প্রতিষ্ঠা করেন আইডিয়াল নোভেলটি অ্যান্ড টয় কোম্পানি।
তারপর থেকে পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে টেডি বিয়ার। আদুরে এই পুতুলটি শুধু উপহার হিসেবে ব্যবহার হয়। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে টেডি বিয়ার মিউজিয়াম পর্যন্ত তৈরি হয়েছে। টেডি বিয়ার নিয়ে তৈরি হয়েছে অনেক বই এবং চলচ্চিত্র। একশ বছরের বেশি সময় ধরে ভালোবাসার মানুষকে উপহার দেয়ার সামগ্রী হিসেবে ক্রমান্বয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই পুতুলটি।
প্রতিটি রঙের টেডি বিয়ারের তাৎপর্য দেখে ঠিক করে নিন প্রিয়জনে কীরকম টেডি দিবেন?
লাল টেডি আবেগ এবং ভালোবাসার প্রতীক। পারস্পরিক সংযোগের মানসিক তীব্রতা বাড়ানোর জন্যই এই উপহার।
গোলাপি টেডি মানে আপনার সঙ্গে আপনার প্রস্তাবে সম্মত। গোলাপি টেডি মানেই তিনি আপনাকে ভালবাসেন।
নীল টেডি গভীরতা, শক্তি, প্রজ্ঞা এবং প্রতিশ্রুতির প্রতীক। নীল টেডি উপহার দিলে বুঝবেন আপনার প্রিয়জন ও আপনার ভালোবাসা সত্যিই শক্তিশালী এবং আপনারা এই সম্পর্কের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সবুজ টেডি আপনার ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে গভীর সংযোগ এবং তার জন্য অপেক্ষা করার বাসনার প্রতীক।
কমলা টেডি বিয়ার আনন্দ, আশা এবং আলোর প্রতীক।
প্রিয় মানুষের মন জয় করতে, তাকে তার প্রিয় রঙের টেডি বিয়ার উপহার দিন। বিশেষ দিনটি কাটান নিজের বিশেষ মানুষের সঙ্গেই।
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]