
ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের ১৩২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী তাকসিম এ খানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে করা মামলায় দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (৩০ জানুয়ারি) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. আসাদুজ্জামানের আদালত অভিযোগের বিষয়ে শুনানি শেষে দুদককে আগামী ১০ এপ্রিল প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
বাদী পক্ষের আইনজীবী মো. গাফ্ফর হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আজকে মামলাটির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। এদিন শুনানি শেষে আদালত মামলার অভিযোগ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দুদকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এর আগে গত বছরের ১০ নভেম্বর একই আদালতে ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহাব উদ্দিন সরকার আদালতে হাজির হয়ে ওই ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। ওইদিন আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে অভিযোগের বিষয়ে শুনানির জন্য আজ দিন ধার্য করেন।
মামলার আবেদনে তাকসিম ছাড়াও ঢাকা ওয়াসার প্রকৌশলী শারমিন হক আমীর, সাবেক রাজস্ব পরিদর্শক মিঞা মো. মিজানুর রহমান, প্রকৌশলী মো. আখতারুজ্জামান, রাজস্ব পরিদর্শক মো. জাকির হোসেন, প্রকৌশলী মো. বদরুল আলম, জনতা ব্যাংকের সাবেক ডিজিএম শ্যামল বিশ্বাস, উপসচিব শেখ এনায়েত উল্লাহ ও উপপ্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. সালেকুর রহমানকে আসামি করা হয়েছে।
সেখানে অভিযোগ করা হয়েছে, ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি ২০১৭ সালের ১৬ জুলাই থেকে ২০১৮ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ৯৯ কোটি ৬৫ লাখ ১৯ হাজার ১৭৩ টাকা ঢাকা ওয়াসা থেকে রাজস্ব আদায় কাজ বাবদ পায়। ২০১৮ সাল থেকে ২০১৯ অর্থবছরে একই কাজ বাবদ সমিতি আয় করে ৩৪ কোটি ১৮ লাখ ৫৭ হাজার ৭৯০ টাকা। এর মধ্যে ২০১৭ থেকে ২০১৮ অর্থবছরে সমিতির হিসাবে জমা হয় ১ কোটি ৭৯ লাখ ৫৯ হাজার ৫০৩ টাকা।
অবশিষ্ট ১৩২ কোটি ৪ লাখ ১৭ হাজার ৪৬০ টাকা ৬টি ব্যাংক থেকে বিভিন্ন চেকের মাধ্যমে আসামি তাকসিম এ খানের প্রত্যক্ষ মদদে ও নির্দেশে অপর আসামিরা টাকাগুলো উত্তোলন এবং আত্মসাৎ করে।
এছাড়া সমিতির গাড়িসহ স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি সমিতির হেফাজত থেকে স্থানান্তর করে প্রায় ২০০ কোটি টাকার সমমূল্যের সম্পদ চুরি করে আসামিরা। আসামিদের এই আত্মসাতের বিষয়টি সমবায় অধিদপ্তরের অডিট রিপোর্টে প্রমাণিত হয়েছে বলে আবেদনে উল্লেখ করা হয়।
গত ৯ জানুয়ারি একটি দৈনিকে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন হাইকোর্টের নজরে আনেন দুদকের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশিদ আলম খান।
গত বছরের ১৭ অক্টোবর প্রকৌশলী তাকসিম এ খানসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে কয়েকটি ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে নথিপত্র তলব করে চিঠি পাঠিয়েছিল দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে অনুসন্ধান কর্মকর্তা উপ-পরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলাম।
২০০৯ সালে ঢাকা ওয়াসার এমডি হিসেবে নিয়োগ পান প্রকৌশলী তাকসিম এ খান। প্রথম নিয়োগের পর থেকে মোট ছয়বার তার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।
বিবার্তা/সানজিদা/বিএম
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
পদ্মা লাইফ টাওয়ার (লেভেল -১১)
১১৫, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ,
বাংলামোটর, ঢাকা- ১০০০
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]