
প্রিয় ঘোড়া মারা যাওয়া শোকে বিহ্বল হয়ে পড়েছিল ইরাকের ৮ বছর বয়সী জকি লানিয়া ফখর। সেই ঘোড়া হারানোর শোক শিশুর শোক ভোলানোর চেষ্টা করেছেন দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম, যিনি একই সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভাইস-প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী। তিনি লানিয়াকে পুরো এক পাল ঘোড়া দিয়েছেন।
জানা গেছে, লানিয়ার পাঁচ বছর বয়সে তার বাবা জাসনো নামের ওই ঘোড়াটি উপহার দেয়। এটি তার কাছে খুবই প্রিয় ছিল। তাকে নিজ হাতে খাওয়াতো, গোসল করাতো। কিন্তু গত সপ্তাহে এটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরিবার ও পশু চিকি’সকরা ওই ঘোড়া থেকে লানিয়াকে দূরে থাকতে বলেছিল। কিন্তু সে ওই অবস্থাতেই ঘোড়াটির সেবা করেছে।
গত সপ্তাহে ঘোড়াটি মারা গেলে তার মৃতদেহের ওপর কান্নায় ভেঙে পড়ে লানিয়া। সে কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানায়, তার ঘোড়াটি সম্প্রতি অসুস্থ হয়ে পড়লে সে তার যত্ন নেওয়ার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিল। তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিল। তারপরও তাকে বাঁচানো যায়নি। জাসনোকে নিজের সবচেয়ে কাছের বন্ধু হিসেবে বর্ণনা করে লানিয়া জানায়, সে কখনোই জাসনোকে ভুলতে পারবে না।
তার এ কান্নার ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায়। সবাই তার প্রতি সহানুভূতি জানায়। এক পর্যায়ে সেটি নজরে পড়ে দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুমের। তিনি লানিয়ার প্রতি সহমর্মিতা দেখিয়ে তাকে পুরো একটি ঘোড়ার পাল দেওয়ার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে একটি অশ্বারোহী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করতে যা কিছু প্রয়োজন, তা আয়োজনের নির্দেশ দিয়েছেন।
কারণ স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো লানিয়ার ঘোড়া বিষয়ক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ছিল আন্তর্জাতিক অশ্বারোহী ইভেন্টে অংশ নেওয়া, দেশের পতাকা উঁচু করে ধরা এবং কুর্দিস্তানের তরুণদের অশ্বারোহণ শেখানো। এক সাক্ষাৎকারে সে বলে, আমার ইচ্ছা, আমি যখন বড় হব, তখন কুর্দিস্তানের যুবক-যুবতীরা আমার কাছে অশ্বারোহণ শিখবে।
দুবাই শাসক শেখ মোহাম্মদও তার ঘোড়াপ্রেমের জন্য পরিচিত। তিনি বলেছেন, তার জীবনের প্রথমদিকের যে স্মৃতিগুলো তিনি ভুলতে পারেননি, তার একটি হলো তার বাবা শেখ রশিদ আল মাকতুমের সঙ্গে ঘোড়ায় চেপে মরুভূমিতে ছুটে চলা।
লানিয়ার বাবা ফকির রসুল মোহাম্মদ জানান, দুবাই শাসকের কাছ থেকে উপহার পেয়ে খুশিতে কেঁদে ফেলে লানিয়া। পাঁচ বছর বয়স থেকেই তার স্বপ্ন ছিল ঘোড়সওয়ার হওয়া। জাসনোর প্রতি তার টান ছিল অন্যরকম। তবে নতুন ঘোড়ার পাল তার কষ্ট অনেকটা কমিয়ে দিয়েছে। এ উপহার তার শোক কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করছে।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]