শুক্রের কাঁধে বাজারের শনি
প্রকাশ : ১০ নভেম্বর ২০২৩, ১৫:১১
শুক্রের কাঁধে বাজারের শনি
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

ঊধর্বমুখী দ্রব্য মুল্যের বাজারে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে (শুক্রবার) বাজারে দাম বৃদ্ধির এক প্রকার প্রতিযোগীতা লেগে যায়। প্রতিদিনের বাজার দামের চেয়ে বেড়ে যায় কয়েক গুন। তার মধ্যে গত সপ্তাহের তুলনায় বাজারে বেড়েছে চাল, চিনি ও পেঁয়াজসহ নিত্যপণ্যের দাম। এদিকে ৬০ টাকা কেজি দরের নিচে মিলছে না কোনো সবজি। এমন বাড়তি দামের প্রবণতায় খুব বেশি খুশি নন সাধারণ ক্রেতারা।


শুক্রবার (১০ নভেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, ঢাকার বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা দরে। যা গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ১০ টাকা কমেছে। তবে স্বাভাবিক সময়ে বছরজুড়ে এ আলুর দাম থাকে ২৫ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে। খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছে মৌসুম শেষ হওয়ার কারণে বাজারে আলুর সরবরাহ কম। এরমধ্যে ভারত থেকে আলু আমদানি হচ্ছে। তবে যে পরিমাণে আলু এসেছে, তা চাহিদার তুলনায় খুব সীমিত। ফলে বাজারে তেমন প্রভাব রাখতে পারছে না। দাম কিছুটা কমে এলেও নাগালের মধ্যে আসেনি।


অন্যদিকে ভারত থেকে ডিমও আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। তারও কিছুটা প্রভাব বাজারে রয়েছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে এখন প্রতি পিস ডিম ১২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ প্রতি হালি ৪৮ টাকা। এ এক হালি ডিম দুই সপ্তাহ আগে ৫৫ টাকার বিক্রি হয়েছে। এদিকে, বড় বাজারে ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি ডজন ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা দরে।


পাশাপাশি বাজার শীতকালীন সবজিতে ভরপুর। এতে দামও কিছুটা কমছে। দুই-তিনটি ছাড়া বেশিরভাগ সবজি পাওয়া যাচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকার মধ্যে। যেখানে ২-৩ সপ্তাহ আগে সবজি যেন আকাশ চড়া দামে উঠেছিল। সে সময় বেশিরভাগ সবজির দর ছিল ১০০ টাকার আশপাশে।


বাজারে ইলিশ মাছের সরবরাহ ভালো সব ধরনের মাছের দামই বাড়তি যাচ্ছে বলে অভিযোগ জানাচ্ছেন বাজারে আসা সাধারণ ক্রেতারা। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি তেলাপিয়া মাছ ২০০ থেকে ২২০ টাকা, পাঙাস মাছ ২২০ থেকে ২৪০ টাকা, চাষের কই ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, টাকি মাছ ৪০০ টাকা, পাবদা মাছ ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা, শিং মাছ ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, রুই মাছ ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা, কাতল মাছ ৩০০ থেকে ৩৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর এক কেজি সাইজের ইলিশ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকায়।


এছাড়া, প্রতি কেজি গলদা চিংড়ি ১১০০ টাকা ও সাইজে একটু ছোট চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকায়। প্রতি কেজি আইড় মাছের দাম ৭০০ টাকা, টেংরা মাছ ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা, বোয়াল মাছ ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা ও রুপচাঁদা আকৃতিভেদে ৮০০ থেকে ১১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর ছোট কাঁচকি মাছ প্রতি কেজি ৪৮০ টাকা, ছোট সাইজের বাইম মাছ প্রতি কেজি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা, মাঝারি শোল মাছ প্রতি কেজি ১২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।


অন্যদিকে মাংসের বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায়। সোনালি মুরগি প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৩১০ টাকা, লেয়ার প্রতি কেজি ৩৩০ টাকা, কক প্রতি কেজি ৩০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মুরগির লাল ডিম প্রতি হালি (৪ পিচ) বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। পাশাপাশি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭৮০ টাকায় ও খাসির মাংস প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকায়।


তবে বাজারে আবারও উত্তাপ শুরু হয়েছে চিনির দামের কারণে। ৮ থেকে ১০ দিনের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকার মতো বেড়েছে পণ্যটির দাম। খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, ডিলার পর্যায়ে (পাইকারি) প্রতি কেজি চিনির দাম রাখা হচ্ছে ১৩৬-১৩৮ টাকা। খুচরায় প্রতি কেজি ১৪০ টাকা দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। তাও লাভ হচ্ছে না। যে কারণে অনেকে এখন চিনি বিক্রি বন্ধ রেখেছেন।


অন্যদিকে বাজারে ২৮ চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৫ টাকায়। আগে কেজি ছিল ৪৮ থেকে ৫০ টাকা। মিনিকেট চালের দাম কেজিতে ৩ থেকে ৪ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬৮ থেকে ৭০ টাকা। পাইজাম চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকায়, যা আগে বিক্রি হয়েছে ৫০-৫২ টাকায়। নাজিরশাল চালের কেজি ৬৮ টাকা, আগে বিক্রি হত ৬৫ টাকায়। ভালো মানের নাজিরশাল চালের কেজি এখন বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকায়, আগে কেজি ছিল ৭০ টাকা। পোলাওয়ের চালের কেজি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকার মধ্যে।


বিবার্তা/মাসুম

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com