
ইসরাইলকে সমর্থন করে বিশ্বব্যাপী মানবাধিকারের দীক্ষা দেয়া সংগত নয় বলে মনে করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান।
তিনি বলেন, ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় হাজার হাজার শিশু, মা, বোন হত্যার শিকার হচ্ছে। নিরীহ মানুষকে বিধ্বংসী আগ্নেয়াস্ত্রের হামলায় ছিন্ন-ভিন্ন করে দিচ্ছে তখন মানবাধিকারের প্রশ্ন আসে না। উল্টো সেই ইসরাইলি বাহিনীকে সমর্থন করে বিশ্বব্যাপী মানবাধিকারের সবক দিচ্ছেন, এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
১০ ডিসেম্বর, রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম আয়োজিত ‘আগুন সন্ত্রাস মানবাধিকার লঙ্ঘন : রুখে দাও আগুন সন্ত্রাস’ শীর্ষক সেমিনারে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপাচার্য ড. মশিউর রহমান।
দেশের প্রথিতযশা এই সমাজবিজ্ঞানী বলেন, ‘১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে চিহ্নিত অপশক্তির সঙ্গে রাজনৈতিক আপস হয় না। কারণ তাদের উত্তরসূরিরাই দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রে পরিকল্পিতভাবে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারের হত্যা করেছে। যেটি ছিল মানবাধিকারের ভয়াবহ লঙ্ঘন। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন মানবাধিকার লঙ্ঘনের দৃষ্টান্ত বিরল। সেসময় তাদের কাছে মানবাধিকার কোথায় ছিল। তখন তো তারা প্রশ্ন করলেন না। বরং তারা হত্যাকারীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিলেন। মিয়ানমারে যেদিন একরাতে লাখো মানুষ শরণার্থী হলেন আজকে যারা বিশ্বব্যাপী মানবাধিকারের সবক দিচ্ছেন তারা সেদিন কোথায় ছিলেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা তাদের আশ্রয় দিলেন। মানবাধিকারের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত দেখালেন।’
উপাচার্য ড. মশিউর রহমান আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু আধুনিক জাতিরাষ্ট্র সৃষ্টি করেছেন। চার মূলনীতির মধ্যে আমাদের যা দিয়ে গেছেন তা নিয়ে আমরা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারব। আমাদের দর্শনে কোথাও ঘাটতি নেই। যা ঘাটতি সেটি একবারের জন্য হয়েছে। সেটি ১৯৭৫ সালে। সেই খুনিদের আমরা চিনি এবং জানি। কিন্তু ১৯৭১ সালের পরাজিত শক্তি যে অংশটি বাংলাদেশ সেদিন চায়নি- তাদের কিছু উত্তরসূরি, তাদের কিছু প্রজন্ম এখনো রয়ে গেছে। একাত্তরের সেই চিহ্নিত অপশক্তির সঙ্গে আপস, সমঝোতা, রাজনৈতিক সমঝোতা কোনোটি না থাকাই শ্রেয়। সেটি যদি না থাকে তাহলে প্রিয়তম এই দেশ লাল-সবুজের পতাকাকে আলিঙ্গন করে পরবর্তী বিজয় নির্বাচনের মাধ্যমে নিশ্চিত করে বাংলাদেশের সঠিক ধারাকে অব্যাহত রাখব। আমি গভীরভাবে বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ আদর্শিক জায়গায় আগামী দিনে বিশ্বে নেতৃত্ব দেবে। বঙ্গবন্ধু হবে সেই নেতৃত্বের অনুপ্রেরণা।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। বিশেষ অতিথি ছিলেন দৈনিক ভোরের কাগজ পত্রিকার সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভুইয়া, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম, বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরামের সভাপতি কবীর চৌধুরী তন্ময়, নারী অধিকার ফোরাম বাংলাদেশের সভাপতি মাহমুদা খানম মিলি প্রমুখ। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাস, স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বঙ্গবন্ধু গবেষক মো. আফিজুর রহমান।
বিবার্তা/রাসেল/সউদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]