রাজশাহীতে পদ্মার পানি বিপদসীমার মাত্র ৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রবিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ৬ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে পদ্মার পানি এখন বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। সন্ধ্যা নাগাদ পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। রাজশাহীতে পদ্মার পানির বিপদসীমার লেভেল ১৮ দশমিক ৫০ মিটার।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় পদ্মায় পানির উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছিল ১৮ দশমিক ৩১ মিটার। শনিবার সকাল ৬টায় পানির উচ্চতা বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ দশমিক ৩৮ মিটার। ওই দিন বিকেলে পানির উচ্চতা বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ দশমিক ৪০ মিটার। পরবর্তী ১২ ঘণ্টায় পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ৬ সেন্টিমিটার। পানি বৃদ্ধির ফলে নগরীর নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
গত বছর পদ্মার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত নগরীর বুলনপুর পুলিশ লাইন সংলগ্ন বাঁধের কিছু অংশ দেবে যাওয়ায় ওই অংশে শনিবার বালুর বস্তা ফেলা হয়। অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে রবিবার সকাল থেকে নগরীর শ্রীরামপুর এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের টি-বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে।
রবিবার দুপুর ১২টার দিকে সরেজমিতে গিয়ে দেখা যায়, টি-বাঁধের ফাটল ধরা অংশে বালুর বস্তা ফেলছে পাউবোর শ্রমিকেরা। ক্ষতিগ্রস্ত অংশ পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক কাজী আশরাফ উদ্দীন। তিনি এ সময় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে ভাঙন ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পানি বৃদ্ধির ফলে ইতিমধ্যে নগরীর জিয়া নগর, বুলনপুর, পঞ্চবটি ও শ্যামনগর এলাকায় পানি ঢুকে গেছে। সিমলা পার্ক, বিজিবি গার্ডেন, পদ্মা গার্ডেন, বড়কুঠি ও লালনশাহ পার্ক সংলগ্ন এলাকায় পানি বাঁধকে স্পর্শ করেছে। মূল শহর থেকে চার ফুট ওপরে রয়েছে পদ্মার পানির উচ্চতা। তবে এতে আশঙ্কার কিছু নেই বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।
তারা বলছেন, ফারাক্কা বাঁধের সবগুলো গেট খুলে দেয়ায় পদ্মায় গত এক সপ্তাহ ধরে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে আশঙ্কার কিছু নেই। দুই একদিনের মধ্যেই পানি নেমে যাবে। আর পানি বাড়লেও তা বাঁধকে প্লাবিত করতে পারবে না। বাঁধের টপ লেভেলের সর্বোচ্চ উচ্চতা ২১ দশমিক ৫০ মিটার। এর আগে গত ২০১৩ সালে ৭ সেপ্টেম্বর পদ্মার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছিল। ওই দিন পানির উচ্চতা ছিল ১৮ দশমিক ৭০ মিটার। পুরো শহর রক্ষা বাঁধ মনিটরিংয়ের মধ্যে রাখা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেসুর রহমান বলেন, দুই একদিনের মধ্যে পানি কমে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, রাজশাহীর মাটি ভালো হওয়ায় সমস্যার কিছু নেই। বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ারও কোনো আশঙ্কা নেই। প্রতদিনই বাঁধের অংশে বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে।
এদিকে পদ্মায় পানি বৃদ্ধির ফলে নগরী ছাড়াও রাজশাহীর চারঘাট, বাঘা, পবা ও গোদাগাড়ীর অনেক এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। পনিবন্দি হয়ে পড়েছে ওই এলাকার মানুষ। দেখা দিয়েছে গবাদিপশশুর খাদ্য সংকট। বন্যায় পবার হরিয়ান ইউনিয়নের মধ্যচরে নতুনভাবে স্থাপিত ২৫০টি পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। পানি উঠে গেছে চর খিদিরপুর এলাকার খানপুরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘরে। ওই এলাকায়ও দেখা দিয়েছে গবাদিপশুর খাদ্য সংকট।
বিবার্তা/রিমন/প্লাবন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]