সিংগাইরে সেতু নির্মাণ প্রকল্পে অনিয়ম, তদারকিতে নেই প্রকৌশলী
প্রকাশ : ২৪ জুন ২০২৫, ১৩:৫৮
সিংগাইরে সেতু নির্মাণ প্রকল্পে অনিয়ম, তদারকিতে নেই প্রকৌশলী
সিংগাইর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলা এলজিইডি (স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর) কার্যালয়ের প্রকৌশলী মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে একাধিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অফিসে দক্ষ ও যোগ্য জনবল থাকা সত্ত্বেও তিনি নিয়ম বহির্ভূতভাবে অফিসের ইলেকট্রিশিয়ান ও নক্সাকার দিয়ে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প তদারকির কাজ করিয়ে থাকেন। এতে প্রকল্পের গুণগতমান প্রশ্নের মুখে পড়েছে।


সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার বাইমাইল থেকে বলধারা বাজার সড়কের ২৪ মিটার দীর্ঘ গার্ডার ও ৭ মিটার স্লাবের একটি সেতু নির্মাণ প্রকল্পে (ব্যয়— প্রায় ১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা) প্রকৌশলী বা ওয়ার্ক অ্যাসিস্ট্যান্ট ছাড়াই ইলেকট্রিশিয়ান মোয়াজ্জেম হোসেন ও নক্সাকার শাহরিয়ার ইমনকে তদারকিতে দেখা গেছে। সময়মতো কাজ শেষ না হলেও প্রকল্পের সময় বাড়ানো বা বিলম্বের বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই।


এদিকে এলজিইডির গাফিলতিতে এর আগেও চান্দহর ব্রিজের একটি পিসি গার্ডার নির্মাণাধীন অবস্থায় ভেঙে পড়ে। এছাড়া জয়মন্টপ ইউনিয়নের দশানী এলাকার সেতু, রামনগর থেকে মানিকনগর রাস্তা এবং গোলাইডাঙ্গা থেকে বাঙ্গালা বাজার রাস্তা নির্মাণেও অনিয়ম ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে।


সূত্র জানায়, প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান থেকে আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করেন— নিজে ১%, তদারকি কর্মকর্তা ১% এবং অন্যান্যরা ০.৫% হারে। স্থানীয় ঠিকাদাররা জানান, তিনি এলটিএম (সীমিত দরপত্র) বাদ দিয়ে ওটিএম (ওপেন টেন্ডার মেথড) চালু রাখায় স্থানীয় ঠিকাদাররা কাজ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। টেন্ডার প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা না থাকা, অনেক প্রকল্প কাজে স্কিম বোর্ড না লাগানো ও ঘনিষ্ঠদের পছন্দমতো দায়িত্ব দেওয়ার অভিযোগে অফিসের ভেতরে ও বাইরে ক্ষোভ বিরাজ করছে।


উল্লেখ্য, আশরাফুল ইসলাম গত বছর ঘিওর উপজেলা থেকে বদলি হয়ে সিংগাইরে যোগ দেন। দুইবার বদলির আদেশ হলেও তদবিরের মাধ্যমে তা ঠেকিয়ে রয়েছেন বহালতবিয়তে।


সিংগাইর উপজেলা এলজিইডি ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, নির্মাণকাজে ঠিকাদারদের নিয়মিত তাগিদ দেয়া হয়। মালামাল খারাপ হলে রিমুভ করে দেই। বাস্তা থেকে বাঙ্গালা পর্যন্ত রাস্তার কাজে অভিযোগ হয়েছিল। দুদকের প্রতিবেদনের অপেক্ষায় কাজটি থমকে আছে। টেন্ডার নিয়ে তিনি বলেন, ওটিএম স্বচ্ছ একটি পদ্ধতি। কমিটি যদি মনে করে রেজুলেশন করে পরিবর্তন আনতে পারে। টেন্ডারের কাজ শতভাগ স্বচ্ছতার সঙ্গে করা হয়। এছাড়া তার বিরুদ্ধে অন্যান্য অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।


এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কামরুল হাসান সোহাগ বলেন, আগের বছরগুলোর ধারাবাহিকতা দেখে কাজগুলো করা হয়েছে। পরবর্তী কাজে এলটিএম রাখবো। সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়া অনুযায়ী এটা কোনো ত্রুটি হয় নাই । অন্য কাজগুলো আমার চ্যানেলে হয় না।


বিবার্তা/হাবিবুর/এমবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com