
নরসিংদী সদর উপজেলার আলোকবালী ইউনিয়ন এলাকার কৃষি জমি থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে ব্যর্থতায় জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট ৯ দপ্তরের ব্যাখ্যা চেয়েছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি থেকে বালু উত্তোলন তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন।
বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আয়নুন নাহার সিদ্দিকা সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে রোববার (২৫ মে) এ সংক্রান্ত রিট আবেদনটি শুনানির জন্য গ্রহণ করা হয়। জনস্বার্থে এলাকাবাসীর পক্ষে আলোকবালী গ্রামের মো. মুজিবুর রহমানের ছেলে মোহাম্মদ হানিফা মিয়া বাদী হয়ে হাইকোর্টে এ আবেদন করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাইকোর্টের আইনজীবী সিরাজ উদ্দিন আহমেদ।
অভিযুক্তরা হলেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব, নরসিংদীর জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (ভূমি), সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও একই ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা।
রিটে বলা হয়, ২০২৩ সালের বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) আইন এর ৭ (ক) ধারার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন করে আবেদনকারীদের ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এ বিষয়ে গত ১৯ মার্চ ২০২৫ তারিখে জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত আবেদন জমা দেওয়া হলেও, এখনো কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
আদালত রুল জারি করে সংশ্লিষ্ট ৯ জন প্রতিপক্ষকে ৪ সপ্তাহের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন যে, কেন তাদের এই নিষ্ক্রিয়তা ও অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া আইন বহির্ভূত এবং অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। একই সঙ্গে কেন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়। রুল শুনানির আগ পর্যন্ত, আদালত এক অন্তর্বর্তীকালীন আদেশে তিন মাসের জন্য ওই জমি থেকে বালু উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। এছাড়াও আদালত জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দিয়েছেন, রিট আবেদনের সঙ্গে সংযুক্ত ১৯ মার্চ ২০২৫ তারিখের আবেদনপত্রটি প্রাপ্তির ৬০ দিনের মধ্যে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করতে হবে। আদালতে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট সিরাজউদ্দিন আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) মো. বদিউজ্জামান তাপাদার ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলগণ উপস্থিত ছিলেন।
ভুক্তভোগীর আইনজীবী সিরাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, "আমরা হাইকোর্টে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে রিট করেছি। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে জেলা প্রশাসক কেন ব্যর্থ হয়েছেন, তা ৪ সপ্তাহের মধ্যে ব্যাখ্যা চেয়েছেন। পাশাপাশি লিখিত অভিযোগ গুলো সমাধানের বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরী বলেন, আমরা অফিসিয়ালি চিঠি পায় নি, তবে, রিটের স্ক্রিনশট কারো কাছে থেকে পেয়েছি। বালু উত্তোলন বন্ধে আমাদের ব্যর্থতার কারণ হলো সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আমাদের প্রয়োজনীয় এক্সপার্ট ও জনবল নাই। তাছাড়া ইজারা পায় এক স্থানে, বালু উত্তোলন করে অন্য স্থানে। আমরা অভিযান চালালে আমাদের আগেই তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। তাছাড়াও আমাদের উপর হামলার ঘটনাও আছে। রিটের কাগজপত্র হাতে পৌছালে আমরা জবাব দিব।
তিনি আরও বলেন, নরসিংদীতে এ মুহুর্তে কোনো বালু মহলের কোনো ইজারা নেই। নতুন করে বালু উত্তোলন করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিবার্তা/কামরুল/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]