
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে পানি নিষ্কাশনের ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতে বাজারে জলাবদ্ধতা ও কাদা সৃষ্টি হয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় ব্যবসায়ী, ক্রেতা, পথচারী ও শিক্ষার্থীদের। বলছি উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের বয়ড়া বাজারের কথা। দীর্ঘদিন ধরে একমাত্র বাজারটিতে জলাবদ্ধতার এমন বেহাল দশা থাকলেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়নি কেউ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন বয়ড়া বাজারটিতে পানি নিষ্কাশনের কোন ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতে ময়লা-আবর্জনা, কাদাযুক্ত ও দূঘন্ধ জলাবন্ধতার সৃষ্টি হয় বাজারের অলিগলিতে। ফলে ব্যবসায়ী, ক্রেতা ও এ বাজারে চলাচলকারী সাধারণ মানুষেরা পড়েছে চরম ভোগান্তিতে। ময়লা পানির ভ্যাপসা গন্ধে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। বিশেষ করে সপ্তাহের শনিবার ও বুধবার হাটের দিনে বাজারের মাছ, মাংস, পান, সুপাড়ি, মুরগি, লবন, অস্থায়ী মুদি দোকান ও বাঁশের তৈরি ধারি হাটিতে পানি জমার কারনে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে ব্যবসায়ীরা।
ফলে পাশের পাকা সড়কের উপর মাছ নিয়ে বসতে হয় ব্যবসায়ীদের। প্রায় ১ বছর আগে ৩ লক্ষ ৫ হাজার টাকা ব্যয়ে পোগলদিঘা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে পানি নিষ্কাশনের জন্য নামমাত্র সরু একটি ড্রেন নির্মাণ করা হয়। যাতে কোথাও দেয়া হয়নি কোন সংযোগ ফলে খোলা ড্রেনে পানি জমে আরও দুর্গন্ধ হয়ে মশার বংশবিস্তার বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে মশাবাহিত রোগের ঝুঁকি বাড়ছে। নামমাত্র এ ড্রেন জনগণের কোনো কাজেই আসেনি।
জলাবদ্ধতায় থাকা ফার্মেসি মালিক সোহাগ হোসেন, চা বিক্রেতা জুলহাস উদ্দিন, হাফিজ মিয়া বলেন, সামান্য বৃষ্টি হলেই আমাদের এখানে জলাবন্ধতার সৃষ্টি হয়। এখানে শনিবার ও বুধবার হাটের দিনে পান, সুপাড়ি ও কিছু অংশে মাছ বিক্রি হয়। আমাদের দোকানের সামনে ছোট একটি ড্রেন থাকলেও কোথাও সংযোগ না থাকায় ড্রেনটিতে বিভিন্ন ময়লা ও মাছের পানি জমে চরম দৃর্গন্ধের সৃষ্টি হয়। দৃর্গন্ধের কারনে আমাদের এদিকে মানুষ আসে না। বাধ্য হয়েই আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে রাখতে হয়। দ্রুত নালা ব্যবস্থা করলে দুর্ভোগ কমে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পেতাম।
বয়ড়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি চাঁন মিয়া চানু মন্ডল বলেন, ‘অল্প বৃষ্টি হলেই এ বাজার ও কিছু রাস্তায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে কর্দমাক্ত হয়ে যায়। যানবাহন তো দুরের কথা মানুষও চলাচল করতে পারে না। ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হয় বাজারে আসা ক্রেতাদের। বিশেষ করে শনিবার ও বুধবার হাটের দিনে চরম ভাবে ভোগান্তিতে পড়তে হয় দুর থেকে আসা ব্যবসায়ীদের। অনেকে আবার এমন ময়লা পানি ও কাদাযুক্ত রাস্তার কারণে বাজারে আসেন না। তখন বেচাকেনা কমে গিয়ে ব্যবসায়ীদের লোকসান হয়। নালা ব্যবস্থা না থাকায় বাজার কর্তৃপক্ষ এ সমস্যা সমাধানে হিমশিম খাচ্ছেন। বাজারে আসা ক্রেতারা ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত পানি মাড়িয়ে বাজারে যেতে চান না। দ্রুত নালা ড্রেনেজ ব্যবস্থার উদ্যোগ নিলে ক্রেতা, ব্যবসায়ী ও পথচারীরা এ ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাবে।
বয়ড়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম রঞ্জু বলেন, উপজেলার হাতেগোনা কয়েকটা বাজারের মধ্যে বয়ড়া বাজার অন্যতম। পোগলদিঘা ইউনিয়ন পরিষদ এই বাজারে অবস্থিত। কিন্তু অবহেলায় দিনের পর দিন উন্নয়নবঞ্চিত রয়েছে বয়ড়া বাজার। ঐতিহ্যবাহী এই বাজারের এমন দৃশ্য বেমানান। জনপ্রতিনিধিরাও এই দুর্ভোগ দেখেও দেখেন না। বাজারের কোথায় পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই। এতে হালকা বৃষ্টি হলেই পানি জমে বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। ফলে এই বাজারের ব্যবসায়ীরা ভোগান্তি ও অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে।
বিবার্তা/মনির/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]