
আজ ২৩ মে। ইতনা গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে নড়াইলের লোহাগড়ার ইতনায় গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ ও মা-বোনদের সম্ভ্রমহানি করে পাক-সেনারা।
এ ঘটনার প্রত্যক্ষ মুখো-মুখি হন চর-ভাটপাড়া গ্রামের কৃষক অনিল কাপালী। কৃষক অনিল কাপালী মা-বোনদেরপ্রতি অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে খালি হাতে ঝাঁপিয়ে পড়ে এক পাক-সেনার ওপর। বীর বাঙালি অনিল কাপালী পাক-সেনার কাছ থেকে তার রাইফেল কেড়ে দৌড়ে যায় নদীর দিকে। মধুমতি নদীতে অস্ত্র ফেলে নিজে সাঁতার কেটে চলে আসে এপারে ইতনায়।
পরের দিন পাক-সেনারা অনিল কাপালীকে ধরতে চর-ভাটপাড়া গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। আত্মরক্ষার জন্য চর-ভাটপাড়া গ্রামবাসীরা বলে দেয় কাপালীর বাড়ি ইতনায়। পরের দিন ইতনায় গণহত্যার পরিকল্পনা করে। ৫ টি নৌবহর ধারা পাক-সেনারা পুরো গ্রাম ঘিরে ফেলে কাক ডাকা ভোরে। তারা ৫ ভাগে ভাগ হয়ে ঢুকে পড়ে গ্রামের ভিতর। লোকজন তখন ঘুমন্ত। কেউ কেউ ফজরের নামাজ পড়ার জন্য ঘুম থেকে উঠেছে। পাক সেনারা প্রথমেই হিমায়েত মিনাকে গুলি করে তখন সে গুলি অবস্থায় বীর দর্পনে “জয় বাংলা” বলে চিৎকার দেয়। এভাবে সে চিৎকার দিয়ে মাটিয়ে লুটিয়ে পড়ে। যতক্ষন সে জয় বাংলা বলেছে ততবার পাক-সেনারা তাকে গুলি করেছে।
এরপর আব্দুর রজ্জাক ফজরের নামাজ পড়ে কুরআন শরীফ পড়ছে এসময় তাকে গুলি করে। বানছারাম মন্ডলকে গুলি করতে উদ্যোগ নিলে আত্মরক্ষার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে। গুলিবিদ্ধ হয়ে বেঁচে যান, বজলার রহমান, আ. জলিল, হারুন শেখসহ অনেকে।
ইতনা হয়ে পড়ে ভুতুড়ে গ্রাম। লাশ আর লাশ। দাফন করার মত মানুষ লোক নেই। গ্রামবাসীরা ধর্মীয় সকল নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে কোন মতে শহিদদের দাফন করে গ্রাম ছাড়া হয়। এ আতঙ্ক সবার মধ্যে। ঐদিন কমপক্ষে ৫০ থেকে ৬০ গ্রামবাসীকে পাক-সেনারা হত্যা করে।
এ উপলক্ষ্যে ইতনায় শহিদদের স্মরণে বিকালে আলোচনা সভা ও দোয়া-মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।
বিবার্তা/শরিফুল/এমবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]