
পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে কোরবানির জন্য গবাদিপশু প্রস্তুত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার খামারিরা। পশু কিনতে সাধ্যমত অর্থের যোগানে ব্যস্ত ক্রেতারা। আবার ভাগে কোরবানি দেওয়ার জন্য সমমনা ভাগিদারের খোঁজে ছুটছেন অনেকে। বাজারে গো খাদ্যের দাম বাড়লেও ভিড় কমেনি দোকানে। ভালো দামের আশায় গবাদি পশুকে হৃষ্টপুষ্ট করতে দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করছেন খামারিরা।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, প্রতিবছরের মত এবারেও উপজেলায় ৯৭ হাজার ৮৯৪টি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করেছেন খামারিরা। কোরবানির চাহিদা ধরা হয়েছে ৪৭ হাজার ৯৭০টি পশু। তবে চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত ৪৯ হাজার ৯২৪টি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। উদ্বৃত্ত পশু উপজেলার বাইরেও বিক্রি করতে পারবেন খামারিরা। তবে মোবাইলে ও অনলাইনে নিরাপদ ভালো হাটের খোঁজে আছেন খামার মালিকরা। যোগাযোগ করছেন বেপারিদের সাথে। ইতিমধ্যেই আগাম দরদাম ঠিক করে বায়না দিয়ে চুক্তিবদ্ধ হচ্ছেন অনেক খামারি ও বেপারি। এবার প্রায় ৬০০ কোটি টাকা বাজারমূল্যের অন্তত ১ লাখ পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত বলে জানা গেছে।
উপজেলার বেড়গঙ্গারামপুর গ্রামের খামারি রেজাউল করিম জানান, তিনি কোরবানির জন্য উন্নত জাতের ২০টি ষাঁড় প্রস্তুত করছেন। কিন্তু বাজারে গো খাদ্যের দাম এবং রাখালের মজুরি বেড়ে যাওয়ায় খামার ব্যবস্থাপনার খরচ অস্বাভাবিক বেড়ে গেছে। ফলে লাভের চেয়ে লোকসানের আশঙ্কায় রয়েছেন।
চাঁচকৈড় মধ্যমপাড়ার খামারি জুমির মন্ডল জানান, বর্তমানে ১ কেজি গমের ভূষি বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। খুদ, ভুট্টা, খৈলসহ অন্যান্য খাদ্য ও ব্যবস্থাপনা খরচ অনেক বেড়েছে। তাই খামার পরিচালনার ব্যয় বহন করা অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে। তার এই বক্তব্যের সাথে একমত পোষন করেন খামারি হাজি সাখাওয়াত হোসেন সহ আরো কয়েকজন।
প্রতিবছর ঢাকা, চট্রগ্রাম, সিলেটসহ বিভিন্ন এলাকায় গরু-ছাগল বিক্রি করেন গুরুদাসপুরের খামারিরা। চট্র্রগ্রাম থেকে আগাম আসা বেপারী আমান উল্লাহ চৌধুরী বলেন, আমরা প্রতিবারই এখান থেকে পশু কিনে থাকি। পশু কিনে খামারির বাড়িতে রাখা হচ্ছে। ঈদের এক সপ্তাহ আগে চট্রগ্রাম নিয়ে যাওয়া হবে।
এদিকে প্রাণিসম্পদ অফিস জানায়, গো খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় কৃষক ও খামারিদের গবাদি পশুকে কাঁচা ঘাস খাওয়ানোর উপড় জোর দিতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কোরবানির পশুর স্বাস্থ্য, খাবার, রক্ষনাবেক্ষন, পরিবেশগত সার্বিক ব্যবস্থাপনা মনিটরিং করছেন প্রাণিসম্পদ অফিসের ডাক্তার ও মাঠপর্যায়ের কর্মিরা।
উপজেলা প্রানিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রোকনুজ্জামান জানান, উপজেলায় ২ হাজার ৭৫০ জন খমারি (বাণিজ্যিক খামার নিবন্ধিত ২০টি এবং অনিবন্ধিত ৫২০টি) তাদের খামারে ৯৭ হাজার ৮৯৪টি কোরবানিযোগ্য পশু প্রস্তুত করছেন। এরমধ্যে গরু ৩৪ হাজার ২১১টি মহিষ ৮৫৪টি, ছাগল ৫৬ হাজার ৭৪৮টি, ভেড়া ৬ হাজার ৫২টি এবং অন্যান্য ২৯টি। এসব পশুর বাজারমূল্য অন্তত প্রায় ৬০০ কোটি টাকা।
বিবার্তা/জনি/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]