হুমকির মুখে শহর রক্ষা বাঁধ
টাঙ্গাইলে পাউবো’র উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ
প্রকাশ : ০৪ মে ২০২৫, ১৪:২৫
টাঙ্গাইলে পাউবো’র উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবোর) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রাখিল রায়হানের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে টাঙ্গাইলের শহর রক্ষা বাঁধের পাশ থেকে মাটি কেটে রাতের আঁধারে বিক্রি করছে একটি মহল। সেই মহলের সাথে আঁতাত করে শহররক্ষা বাঁধ দিয়ে দেদারসে চলছে দশ চাকার গাড়ি। এতে শহর রক্ষা বাঁধটি খানাখন্দে পরিণত হয়েছে, হুমকি রয়েছে শহর রক্ষা বাঁধ।


সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে টাঙ্গাইলে যোগদান করেন উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রাখিল রায়হান। যোগদানের পর থেকেই বেপরোয়া হয়ে উঠেন তিনি। কালিহাতী উপজেলার পৌলি শহর রক্ষা বাঁধ ঘেঁষে মাটি কাটার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অর্থ গ্রহণ, যমুনা নদীর পাড়ে বোয়ামারো এলাকার পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গার উপর দিয়ে দশ চাকার বালু ভর্তি ট্রাক চলাচলে বালু ব্যবসায়ীদের থেকে অর্থ গ্রহণ, মোনায়েম কোম্পানির কাজ শেষ হলেও যমুনা নদী থেকে অবৈধভাবে ড্রেইজিংকারীদের
সহায়তা ও আওয়ামী দোসরদের দিয়ে বালু উত্তোলন কাজে সহায়তা। এসব করে তিনি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।



জানা যায়, পৌলি গুচ্ছ গ্রামের পাশ দিয়ে সরকার কোটি-কোটি টাকা ব্যয়ে শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করেছেন। নিয়ম রয়েছে শহর রক্ষা বাঁধের একশ ফিটের মধ্যে কোন প্রকার বালু উত্তোলন ও মাটি কাটা যাবে না। এর তত্ত্বাবধানে রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। সেই পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা হয়ে অবৈধভাবে মাটি কাটার ব্যবসায়ীদের যোগসাজশে করে ও অর্থের বিনিময়ে মাটি কাটার বাঁধা প্রদান
না করে মৌখিক অনুমোদন দেন তিনি। অভিযোগ রয়েছে উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মোটা টাকার বিনিময়ে মৌখিক অনুমোদন দিয়েছেন। ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়লে তা টপ অব দ্যা টাউনে পরিণত হয়।


সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, কালিহাতী উপজেলার পৌলি গ্রামের মাটি ব্যবসায়ীরা শহর রক্ষা বাঁধ ঘেঁষে ছয়টি মাটির ঘাট করেছেন। ছয়টি ভেকু মেশিন দিয়ে বালু মাটি কাটছে। শতাধিক দশ চাকার
ড্রাম ট্রাক দিয়ে শহররক্ষা বাঁধের উপর দিয়ে চলাচল করছে। শহর রক্ষা বাঁধের উপর দিয়ে বালু ভর্তি ট্রাক চলাচলের কারণে বিভিন্নস্থানে খানাখন্দ হয়ে পড়েছে। এছাড়াও কালিহাতী উপজেলার আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই আকন্দ ভাতিজার সাথে আঁতাত করে মোনায়েম কোম্পানির দোহাই দিয়ে বেয়ারামারো পানি উন্নয়নের জায়গার উপর দিয়ে দশ চাকার ড্রাম ট্রাক চালাচ্ছে।


সূত্র মতে জানাজায় ওই দশ চাকার ড্রাম ট্রাকগুলো চলাচলের মৌখিক অনুমতি দেন ওই প্রকৌশলী।


স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার পৌলিতে দিনের বেলায় তোফাজ্জল ঘাট চালাতো। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বন্ধ হয়ে যায় কিন্তু রাতের বেলায় বারেক কমিশনার বালু ঘাট চালিয়ে যাচ্ছে। কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সেনাবাহিনী কয়েক দফায় ভেকু নষ্ট করে দেয়। পরে ভেকু মেশিন ঠিক করে পুনরায় রাতের বেলায় বারেক কমিশনারের লোকজন বালু মাটি বিক্রি করে।


পৌলি মাটি ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি জানান, আমরা উন্নয়নমূলক কাজের স্বার্থে নিজেদের জমি থেকে মাটি কেটে বিক্রি করছি। সেখানে পানি উন্নয়ন বোর্ডে এক কর্মকর্তা
টাকা দাবি করে। প্রথমে তার সাথে যোগাযোগ করি। পরবর্তীতে তিনি মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করলে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিদের জানালে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে।


এ বিষয়ে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রাখিল মুঠোফোনে বলেন, পৌলি শহর রক্ষা বাঁধের উপর দিয়ে ট্রাক চলাচল বন্ধের জন্য বিভিন্ন দফতরে চিঠি দিয়েছি। এছাড়াও প্রশাসনের সাথে অভিযানে গিয়ে তিনবার বন্ধ করে দিয়েছি। টাকার বিনিময়ে মাটি ব্যবসায়ীদের মৌখিক অনুমোদনের বিষয়টি মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।


টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবোর) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মতিউর রহমানের ফোনে একাধিকবার ফোন দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।


বিবার্তা/বাবু/এমবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com