বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের অভিযোগ, কৃষকদল নেতা বাবা-ছেলের নামে মামলা
প্রকাশ : ০৩ মে ২০২৫, ১৬:৪১
বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের অভিযোগ, কৃষকদল নেতা বাবা-ছেলের নামে মামলা
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলা কৃষকদল নেতা ও তার ছেলের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে এক নারীকে ধর্ষণ ও জোরপূর্বক গর্ভপাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী ঝিনাইদহ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে কৃষকদল নেতাসহ চার জনের নামে মামলা দায়ের করেছেন। মামলার এজাহারে ধর্ষণ, গর্ভপাত ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়েছে ।


এদিকে শৈলকূপা থানায় নির্যাতিত ওই নারী পৃথক একটি অভিযোগ করেন। সেই অভিযোগ তদন্ত করে পুলিশ প্রাথমিক ভাবে ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সম্রাট মন্ডল।


মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগী নারী সূত্রে জানা গেছে, গত দুই বছর ধরে ওই নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন নাজমুল খন্দকার নামের এক যুবক। নাজমুল খন্দকার শৈলকূপা উপজেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব কামরুল ইসলামের ছেলে। ওই নারীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নাজমুল খন্দকার নিয়মিত শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হন। তাদের সম্পর্কের বিষয়টি নাজমুলের পরিবারের সবাই জানার পরে তারা ওই সম্পর্ক মেনে নেয়। এরপর ওই নারী নাজমুলের বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত শুরু করেন। এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী নারী গর্ভবর্তী হয়ে পড়লে নাজমুল ও তার বাবা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। তারা কৌশলে ওই নারীকে ঝিনাইদহ শহরের হামদহ এলাকার রয়েল ক্লিনিকে ভর্তি করে গর্ভপাত ঘটান।


ভুক্তভোগীর অভিযোগ, চিকিৎসা শেষ হওয়ার আগেই নাজমুল খন্দকার ও তার বাবা-মা ভুক্তভোগী নারীকে হাসপাতালে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরে নাজমুল খন্দকার ও তার বাবা-মায়ের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করেও ওই নারী কোনো সমাধান পাননি। পরে তিনি শৈলকূপা থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে থানা মামলা গ্রহণ করেনি। নাজমুল খন্দকারের বাবা কামরুল ইসলাম রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ওই নারীকে নানা ভাবে হুমকি ধামকি দিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ।


ভুক্তভোগী নারী বলেন, দুই বছর ধরে নাজমুলের সঙ্গে তার সম্পর্ক। তার বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত থাকায় তার বাবা কামরুল ইসলাম সহ পরিবারের সবাই আমাকে বিয়ের আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু আমি গর্ভবতী হয়ে পড়লে নাজমুলের পরিবারের লোকজন আমাকে মারধর করে। এক পর্যায়ে তারা জোরপূর্বক আমার গর্ভের সন্তান নষ্ট করে দেয়।


এ বিষয়ে কৃষকদল নেতার ছেলে নাজমুল খন্দকার বলেন, ওই নারীর অভিযোগ সত্য নয়। সে একজন প্রতারক। আমার নামে থানায় কোনো মামলা হয়েছে কিনা তা জানি না।


নাজমুলের বাবা শৈলকূপা উপজেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব কামরুল ইসলাম বলেন, অভিযোগকারী মহিলা সম্পর্কে আমি খুব বেশি কিছু জানি না। তবে সে আমার বাড়িতে আসা যাওয়া করত। গর্ভপাত ও হাসপাতালে ভর্তির বিষয়ে আমি কিছু জানি না। এসময় তিনি প্রতিবেদককে নিউজটি এড়িয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেন।


শৈলকূপা থানার এসআই সম্রাট মন্ডল বলেন, ওই নারীর অভিযোগ পেয়ে পারিপার্শিকতা ও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। প্রাথমিক ভাবে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।


শৈলকূপা থানার ওসি মাসুম খান বলেন, ভুক্তভোগী নারীকে বিয়ের প্রলোভনে ফেলে নানাভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে আমরা সেটা পেয়েছি। এ বিষয়ে বিজ্ঞ আদালতের আদেশ হাতে পেয়েছি। আদালত মামলা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। থানায় মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। আসামি গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।


বিবার্তা/রায়হান/এসএস

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com