
বাঙালি ঐতিহ্যের সাথে মিশে আছে পান-সুপারি বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে প্রাথমিক অতিথি আপ্যায়নের অনুষঙ্গ হিসেবে থাকে পান-সুপারি।
বাড়িতে মেহমান এলে কাঁসার তৈরি পানের বাটায় পান, সুপারী, তামাক জর্দা, চুন সাজিয়ে দেয়া হয় মেহমানের সামনে। পান খেতে খেতে চলে খোশ গল্প। পান রশিকদের জন্য রাজশাহীর পান আর পঞ্চগড়ের সুপারীর কদর রয়েছে আলাদাভাবে।
পঞ্চগড়ের মানুষের আদি ঐতিহ্য সুপারীর বাগান। অনেক সুপারী বাগান মালিক আবার সুপারীর গাছে পান চাষ করেন। এতে তাদের বাড়তি আয় হয়। জমির ধান দিয়ে সারা বছরের খাবার আর সুপারির টাকা দিয়ে চলে সাংসারিক সব খরচ । সাধারণত এপ্রিল মাস থেকে সুপারী বাজারে উঠে। এই সময়টাতে দেশের অন্য কোথাও সুপারী হয় না। তাই সুপারী ব্যবসায়ীদের নজর এখন পঞ্চগড়ের দিকে।
ইতোমধ্যে বাজারে বেচাকেনা শুরু হয়েছে পঞ্চগড়ের সুপারী। পুরোদমে সুপারী বাজারে উঠায় ব্যবসায়ীদের আনাগোনা বেড়ে গেছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা এসে পঞ্চগড় থেকে ট্রাকে সুপারী কিনে নিয়ে যাচ্ছে।
পঞ্চগড়ে চলতি মৌসুমে প্রতি পন (৮০টি) সুপারী ২৮০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। জানা গেছে,পঞ্চগড়ের মাটি অপেক্ষাকৃত উচুঁ এবং বেলে দোআঁশ হওয়ায় বংশ পরস্পরায় সুপারী চাষ করে আসছে এখানকার মানুষেরা। এক সময় বাড়িতে বাড়িতে ছিল সুপারীর গাছ। বাগান আকারের ছাড়াও বাড়ির পাশে উচু জমিতে সুপারীর বাগান করে। সুপারী বাগানে আলাদা করে পরিচর্যা করতে হয় না। মাঝখানে মড়ক লেগে শত শত এর সুপারী বাগান ধ্বংস হলেও পঞ্চগড় জেলায় সবত্র এখনও সুপারীর বাগান চোখে পড়ে। বাগান না হলেও সুপারীর গাছ আছে। লাভজনক হওয়ায় অনেকে সুপারীর বাগান করছে। বিশেষ করে সদর উপজেলার এলাকার টুনির হাট ,কামাত কাজলদীঘি,চাকলাহাট,হাড়িভাসা ও বোদা উপজেলার বোদা ,সাকোয়া ও মাড়েয়া, ময়দানদীঘি সুপারির জন্য বিখ্যাত।
সাকোয়া নয়াদীঘি এলাকার একরামুল বলেন, তিনি গত কয়েক বছর ধরে তিনি ভালো ফল পাচ্ছেন। সুপারীর দামও ভালো পেয়েছেন। পাকা সুপারী মাটিতে পুতে রাখেন মজা করানোর জন্য। স্থানীয়ভাবে এই সুপারীর চাহিদাও খুবই বেশি। এই এলাকার অনেক কৃষকের প্রধান উৎস সুপারীর বাগান। এই এলাকায় বর্ষার পানি জমে থাকে না বলে অনেকেই সুপারীর বাগান করেছে সেই সাথে বাগানে রয়েছে পান গাছ । অন্যান্য আবাদের চেয়ে সুপারী চাষে খরচ একেবারে নেই বললেই চলে।
এ ব্যাপারে পঞ্চগড় জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক জানান, পঞ্চগড়ের মাটি উঁচু এবং আবহাওয়া সুপারী চাষের জন্য অনুকুল। ৬৫০ হেক্টর জমিতে সুপারী আবাদ হচ্ছে। বছরে এ জেলায় প্রায় ৩০ কোটি টাকার উপরে সুপারী বেচাকেনা হচ্ছে। সুপারী চাষ লাভজনক হওয়ায় পঞ্চগড়ের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখছে সুপারী চাষ।
বিবার্তা/দোলন/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]