
সারা দেশের ন্যায় কুষ্টিয়াতেও তীব্র তাপদাহ ও ভ্যাপসা গরমে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। প্রখর রোদের সাথে পাল্লা দিয়ে ভ্যাপসা গরম পড়ায় কর্মজীবী ও শ্রমজীবীসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে অস্বস্তি বিরাজ করছে। দিনের বেলায় তীব্র তাপদাহ ও ভ্যাপসা গরমের পাশাপাশি রাতেও থাকছে গরমের তীব্রতা। এরফলে বাড়ছে ডাইরিয়া, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও বসন্তরোগসহ বিভিন্ন ধরনের রোগবালাই। হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের রোগীরা ভিড় করছে প্রতিনিয়ত।
প্রখর রৌদ্রের তীব্রতার কাছে হার মেনে কৃষক ও কৃষি শ্রমজীবীরা মাঠের ক্ষেতে কাজ করতে গিয়ে গরমে অতীষ্ঠ হয়ে পড়ছেন। একটু কাজ করতেই হাঁসফাস অবস্থার সৃষ্টি হওয়ায় ছুটে যাচ্ছেন গাছের ছায়ায়। আবার অনেকে মাথায় পানি ঢেলে বা পানির পরশ নিয়ে স্বস্তি ফেরাচ্ছেন। ফসলের মাঠের আবাদি জমির মাটি ফেটে চৌচির অবস্থার সৃষ্টি হওয়ায় কৃষকদের প্রতিদিন স্যালো ইঞ্জিন ব্যবহার করে ক্ষেতে পানি সরবরাহ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
বাড়তি খরচের বোঝা মাথায় নিয়ে পাটক্ষেত, ধান ক্ষেত, সবজি ক্ষেত সহ বিভিন্ন ফসলের জমিতে প্রতিদিন সেচকাজে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে তাদের। কৃষকের পাশাপাশি দিনমজুরাও পড়েছেন সংকটে। কাজের সন্ধানে বের হয়েও প্রখর রোদ আর ভ্যাপসা গরমে কাজ না পেয়ে তাদের খালিহাতে ফিরতে হচ্ছে বাড়িতে। ভ্যানচালক, রিক্সাচালকরাও দুর্বিষহ জীবপন যাপন ও সময় পার করছেন। তীব্র গরমে দিনের বেলায় ভ্যান ও রিক্সা চালাতে না পেরে কর্মহীন সময় পার করছেন। আবার রৌদ্রের তীব্রতার কারণে যাত্রী সংখ্যাও কমে গেছে শহর বা হাটে-বাজারের বিভিন্ন সড়কে।
প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে ভ্যাপসা গরমের সাথে পাল্লা দিয়ে বিদ্যুতের লোডশেডিং রয়েছে নিয়মিত। আবার সুযোগ সন্ধানী ইলেকট্রনিক্স ব্যবসায়ীরা সুযোগ বুঝে বৈদ্যুতিক পাখা বা চার্জার ফ্যান বিক্রয় করছেন দ্বিগুন দামে। শিশুরা অসহ্য গরমে ছটফট করতে থাকায় প্রয়োজনের তাগিদে পরিবারের সদস্যদের ব্যবসায়ীদের হাকা দামেই কিনতে হচ্ছে সন্তানদের সুরক্ষার জন্য। আর এমন চিত্র এখন নিত্যদিনের। বৃষ্টির দেখা না মেলায় গ্রামের উত্তপ্ত ধুলো বালির রাস্তায় চলতে গিয়েও বিপাকে পড়তে হচ্ছে পথচারীদের। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা সময়মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে না পারায় তাদের শিক্ষা কার্যক্রমও ব্যহত হচ্ছে। বাইসাইকেল বা মোটরসাইকেল চড়ে ধুলো-বালির রাস্তা পাড়ি দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত, শহর বা হাটে বাজারে যেতেও পড়তে হচ্ছে নানা সমস্যায়। ধুলো-বালিতে শরীর আচ্ছন্ন হওয়ার ফলে শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন শিক্ষার্থীসহ গ্রামের মানুষ। এমন বৈরী আবহাওয়ার কারনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠনেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হারও কমে এসেছে।
এমন দুর্বিষহ অবস্থায় হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তীব্র তাপদাহ ও ভ্যাপসা গরমে কারনে নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে রোগীরা চিকিৎসা নিতে আসছেন প্রতিদিন। এরমধ্যে শিশু রোগীর সংখ্যাই বেশী। এই পরিস্থিতিতে ভ্যাপসা গরম ও রোদ্র পরিহার করার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। বৃষ্টির দেখা না পাওয়া পর্যন্ত এমন অবস্থা চলতে থাকবে এমনটাও জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
বিবার্তা/শরীফুল/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]