বাঁওড়ের ইজারা বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ
প্রকাশ : ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩:৫৪
বাঁওড়ের ইজারা বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

ঝিনাইদহে জেলেদের জলমহাল নীতিমালা লঙ্ঘন করে বাঁওড় ইজারা দেয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন মৎসজীবীরা। ইজারা বাতিল ও প্রকৃত জেলেদের মাঝে বাঁওড় ফিরিয়ে দেয়ার দাবিতে রোববার ১৯ জানুয়ারি দুপুরে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসকের অফিস চত্বরে এই মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করেন।


মানববন্ধন শেষে এক প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বাওড় মৎস্যজীবী আন্দোলন বাংলাদেশের আহবায়ক নির্মল হালদার , সদস্য সচিব সুজন বিপ্লব, নিত্য হালদার, সাজ্জাদ হোসেন, আবু তোয়াব অপু ও তোফাজ্জেল লস্কার। প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাসুদেব বিশ্বাস। প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে মৎসজীবীরা জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন।


স্মারকলিপিতে উল্লেক করা হয়, বাঁওড় ইজারা দেয়ার কারণে ঝিনাইদহের ৩০ হাজার মৎসজীবী পরিবার কর্ম হারিয়ে পথে বসেছেন। মৎস্যজীবীরা বাঁওড় জলমহাল সমূহের ইজারা পদ্ধতি পুরোপুরি বাতিল করে বাঁওড় জলমহালে জেলেদের ন্যায়সঙ্গত মালিকানার ফিরিয়ে দিতে জলমহাল ব্যবস্থাপনা আইন সংশোধন করার দাবী জানান।


বাওড় মৎস্যজীবী আন্দোলন বাংলাদেশের আহবায়ক নির্মল হালদার জানান, বাঁওড় জলমহালে মাছ চাষে রাষ্ট্রের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রীয় অর্থায়ন জরুরি হয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে জেলেদের সাথে সরকারের নায্য উৎপাদনের অংশীদারিত্ব চুক্তি থাকতে হবে। এছাড়া সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের আওতায় প্রকৃত বাঁওড় মৎস্যজীবীদের শুমারী করে তালিকাবদ্ধ করে মৎস্যজীবী কার্ড প্রদান করতে হবে।


বাওড় মৎস্যজীবী আন্দোলন বাংলাদেশের সদস্য সচিব সুজন বিপ্লব জানান, ঝিনাইদহে মহেশপুর ও কোটচাঁদপুর উপজেলার ফতেপুর, কাঠগড়া, বলুহর, জয়দিয়া বাঁওড়, কালীগঞ্জ উপজেলার মর্জাত বাঁওড় ও যশোর জেলার চৌগাছা উপজেলার বেড় গোবিন্দপুর বাঁওড়ের ইজারা চুক্তি লঙ্ঘন করে সাবলীজ দেয়া হয়েছে। যা বর্তমানে প্রচলিত জলমহাল নীতিমালার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে দাবি মৎসজীবীদের। এসব বাঁওড় ছাড়াও ঝিনাইদহ জেলার অন্যান্য সকল বাঁওড় ও জলাভূমি ইজারা দেয়ায় ভূমিহীন জেলে সম্প্রদায় জীবিকা হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।


মৎস্যজীবী নিত্য হালদার অভিযোগ করেন, প্রভাবশালী ও বাণিজ্যিক মৎসচাষীরা বাঁওড়ের ইজারা হাতিয়ে নিয়ে বাঁওড়ে দেশীয় প্রজাতির মা মাছ ও ছোট কার্প জাতীয় মাছের পোনা নিধন করছে। ফলে দেশী পুটি, শিং, কৈ, পাবদা, ফলি, মেনি, খলিসা, খয়রা, টেংরা, বাটা, গুতুম, কাকিলা, দেশী সরপুটি, বাইন, শোল, টাকি ও গজাড় মাছ বিলুপ্তি হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া বাঁওড়ে বাণিজ্যিক মৎসচাষীরা রাসায়নিক ও দ্রুতবর্ধনশীল ওষুধ প্রয়োগের ফলে বাঁওড়ের পানি দুষিত হয়ে পড়ছে।


সাধারণ জেলেরা অভিযোগ করে বলেন, শত বছর ধরে জেলে সম্প্রদায় প্রাকৃতিক উপায়ে বাঁওড়ে মাছ উৎপাদন করে আসছেন। বাঁওড় ইজারা দেয়ায় প্রকৃত মৎসজীবী ও জেলে সম্প্রদায় কর্ম হারিয়ে পথে বসেছেন।


জেলেদের অভিযোগের বিষয়ে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বকুল চন্দ্র কবিরাজ জানান, সরকারী নীতিমালা মেনেই বাওড়গুলো ইজারা প্রদান করা হয়েছে। তাই জেলে সম্প্রদায়ের এই অভিযোগ সঠিক নয়।


বিবার্তা/রায়হান/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com