
রাজশাহীর চারঘাট সীমান্তে পাল্টাপাল্টি দুই বাংলাদেশি ও দুই ভারতীয় জেলেকে আটকের পর বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এতে করে উভয় বাহিনীই রয়েছে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে। ফলে ইলিশের ভরা মৌসুমেও আতঙ্কে পদ্মা নদীতে মাছ ধরতে নামতে পারছেন না জেলেরা।
স্থানীয় বাসিন্দা ও জেলেরা বলছেন, বাংলাদেশের সীমানায় প্রায়ই ঢুকে পড়ছে বিএসএফ। তারা সীমান্ত আইন মানছে না বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। এ অবস্থায় সীমান্তের কাছাকাছি গেলে বিপদের আশঙ্কা করছেন জানান তারা।
বিজিবি ও স্থানীয়রা জানান, গত ২ অক্টোবর রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ-সংলগ্ন পদ্মা নদীতে মাছ ধরতে যান জেলেরা। বেলা ১১টার দিকে বিএসএফের একটি টহল দল সেখান থেকে দুই বাংলাদেশি জেলেকে ধরে নিয়ে যায়।
আটকরা হলেন, চারঘাট পৌরসভার চক মোক্তারপুর গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন ও মানিক আলী। তাদের ছাড়িয়ে আনতে বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিজিবি। কিন্তু বিএসএফ সাড়া না দিয়ে উল্টো দুই বাংলাদেশিকে থানায় সোপর্দ করে মামলা করে।
একই দিন বিকেল ৫টার দিকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের অভিযোগে পদ্মা নদী থেকে দুই ভারতীয় জেলেকে আটক করে নিয়ে আসে বিজিবি।
আটকরা হলেন, ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরপাড়া থানার লালকুপ গ্রামের আইনুল হক ও শোয়েব নবী শেখ। তাদেরও বিজিবি চারঘাট থানায় সোপর্দ করে মামলা করে।
জানা গেছে, ভারতীয় দুই জেলেকে কারাগারে পাঠানোর পর পদ্মা নদীর চারঘাট-বাঘা এলাকার বিভিন্ন জায়গায় স্পিডবোট নিয়ে টহল শুরু করেছে বিএসএফ। ফলে গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে জেলেরা আতঙ্কে নদীতে নামতে পারছেন না। চর এলাকার কৃষকরা কাজে যেতেও ভয় পাচ্ছেন। নিজ দেশের সীমান্তের মধ্যে অবস্থান করতে বিজিবির পক্ষ থেকে প্রচার চালানো হচ্ছে।
এবিষয়ে চারঘাট মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি হাবিবুর রহমান বলেন, ভারতীয় জেলেরা আমাদের সীমানার ভেতরে এসে মাছ ধরে। অথচ আমরা নিজ দেশের সীমানায়ও বিএসএফের ভয়ে থাকি। দুই ভারতীয়কে আটক করার পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে।
চারঘাটের চক মোক্তারপুর এলাকার সাবেক পৌর কাউন্সিলর খোদাবক্স আলী বলেন, নিজ দেশের সীমানাতেই মাছ ধরছিলেন জেলেরা। সেখান থেকে সীমান্ত আইন অমান্য করে বিএসএফ এসে দু’জনকে ধরে নিয়ে গেছে। বিজিবির সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা সবাইকে সতর্ক থাকতে বলছে।
রাজশাহী বিজিবি-১ এর কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মতিউল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের সীমান্তের ভেতরে জেলেরা নির্ভয়ে নদীতে নামতে পারবেন। তবে কোনোভাবেই ভারতের জলসীমায় যাওয়া যাবে না। ভারতের সীমান্তের ভেতরে গেলে আমরা তাদের উদ্ধার করতে পারব না। প্রচারণার পাশাপাশি সীমান্তে বিজিবি সতর্ক অবস্থায় আছে বলেও জানান তিনি।
বিবার্তা/বাবর/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]