
সেন্টমার্টিন থেকে ফেরার পথে নাফ নদীর নাইক্ষ্যদীয়া মোহনার ঘোলার চরে ফের একটি যাত্রীবাহী ট্রলারে মিয়ানমার থেকে গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এতে কেউ হতাহত হয়নি। তবে ট্রলারটির বিভিন্ন স্থানে গুলি লেগেছে। ট্রলারটির মালিক আব্দুর রশিদ বলে জানা গেছে।
১০ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার সকালে এই ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার সকালে আব্দুর রশিদের মালিকাধীন যাত্রীবাহী ট্রলারটি নাফনদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনায় পৌঁছলে– এই গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন, সেন্টমার্টিন ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর।
তিনি জানান, সকালে সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফ ফেরার পথে যাত্রীবাহী সার্ভিসের একটি ট্রলারকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এতে ট্রলারে থাকা লোকজন প্রাণ বাঁচাতে শুয়ে পড়ে, ফলে এ ঘটনায় কেউ হতাহত না হয়নি, যদিও ট্রলারটির বিভিন্ন স্থানে গুলি লেগেছে। পরে নৌযানটি শাহপরীর দ্বীপ জেটিঘাটে ভীড়ে যাত্রীদের নামিয়ে দেয়। তবে মিয়ানমার থেকে সেদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি) নাকি বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি গুলি চালিয়েছে– তা জানা যায়নি। যদিও রাখাইন রাজ্যের অধিকাংশ এখন আরাকান আর্মির দখলে বলে শোনা যাচ্ছে।
এ ঘটনার পর আবারও টেকনাফ-সেন্টমাটিন নৌরুটে আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে জানান তিনি।
ট্রলারে থাকা যাত্রী নাছির উদ্দিন বলেন, সেন্টমার্টিন থেকে অসুস্থ মাকে নিয়ে কক্সবাজারে চিকিৎসার জন্য সার্ভিস ট্রলারে করে টেকনাফের উদ্দেশে রওনা করি। মাঝপথে শাহপরীর দ্বীপের ঘোলার চরের কাছাকাছি পৌঁছলে হঠাৎ মিয়ানমার থেকে গুলি বর্ষণ করে। এতে ট্রলারে থাকা ৫০-৬০ যাত্রী চিৎকার শুরু করেন। অনেকে কান্নাকাটি করে ট্রলারে শুয়ে পড়েন। অন্তত ৫০ রাউন্ডের মতো গুলি ছোড়ে। এতে ট্রলারের একটি কাঠ ভেঙে পরে। মাঝখানে অনেক দিন বন্ধের পর টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ রুটে ফের গুলির ঘটনা ঘটে।
জলসীমায় ট্রলার লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ার বিষয়টি খোঁজখবর নেওয়া বলে জানিয়েছেন বিজিবির টেকনাফ ব্যাটালিয়ন-২ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আদনান চৌধুরী বলেন, ‘ট্রলারে গুলি করার বিষয়টি শুনেছি। খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে’।
তবে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী নাকি বিদ্রোহী আরাকান আর্মি গুলি চালিয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, এর আগে মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের জেরে এবছরের ১ জুন বিকেলে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে রওনা হওয়া পণ্যসহ ১০ যাত্রীর এক ট্রলার লক্ষ্য করে নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকা থেকে প্রথমবারের মতো গুলিবর্ষণ করা হয়।
এরপর ৫ জুন সেন্টমার্টিনের স্থগিত হওয়া একটি কেন্দ্রে টেকনাফ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদের ফলাফল নির্ধারণের জন্য ভোটগ্রহণ হয়। আনুষ্ঠানিকতা শেষে ফেরার পথে দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেটসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ট্রলারকে লক্ষ্য করে একই পয়েন্টে ফের গুলি করা হয়।
৮ জুন আরও একটি ট্রলারকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয় একই পয়েন্টে। ১১ জুন একটি স্পিড বোটকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ হয়। সর্বশেষ গত ১৭ জুলাই টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ বদরমোকাম এলাকার অতিক্রমের সময় ট্রলার দুটিকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করা হয়েছিল। প্রতিটি গুলিবর্ষণের ঘটনাই বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ জলসীমায় ঘটেছে।
বিবার্তা/জেনি/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]