
কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীদের ধাওয়ায় একটি ভবনের ৫ম তলার ছাদ থেকে পড়ে বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগকর্মী আহত হয়েছে।
আহতরা হলেন, মো. জালাল উদ্দিন জুবায়ের, আব্দুল্লাহ আল সাইমুন, ওয়াহিদুল রহমান সুজন, ইরফানুল আলম, জাহেদ অভি, মেহরাজ সিদ্দিকী পাভেল, জাবেদ ইকবালসহ ১৫ থেকে ২০ জন।
তারা চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ইয়াসির আরাফাত রিকু নামের আরেকজনকে ভর্তি করা হয়েছে বেসরকারি পার্কভিউ হাসপাতালে।
আহতদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। হাজী মুহাম্মদ মহসীন কলেজের ছাত্রলীগ কর্মী মো. জালাল উদ্দিন জুবায়ের এর হাত ও মাথায় আঘাত লেগেছে। তিনি হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে মুরাদপুরে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, সংঘর্ষের মধ্যে ধাওয়া খেয়ে ছাত্রলীগের ১৫-২০ জন কর্মী মুরাদপুর বেলাল মসজিদের পাশের ৫ তলা ভবনের ছাদে আশ্রয় নেন। পরে আন্দোলকারীরা ওই ভবনে উঠে মারধর শুরু করে। এ সময় ছাত্রলীগ কর্মীরা পাইপ বেয়ে নিচে নামার চেষ্টা করে। কয়েকজনকে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দেওয়া হয়।
কোটা আন্দোলনকারীদের দাবি, ছাত্রলীগের একটি অংশ ওই ভবনের ছাদে গিয়ে পাথর নিক্ষেপ করে। পরে আন্দোলনকারীরা গিয়ে তাদের প্রতিহত করেছে।
চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহমুদুল করিম অভিযোগ করে বলেন, ‘সংঘর্ষ চলাকালে মুরাদপুর এলাকায় চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের ১৫-২০ জন কর্মী একটি ভবনের ছাদে আশ্রয় নিয়েছিল। এ সময় আন্দোলনকারীরা ছাদে উঠে কয়েকজনকে ছাদ থেকে নিচে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। ছাদে আশ্রয় নেয়া অনেকে তখন প্রাণ বাঁচাতে ভবনের বাইরের পাইপ বেয়ে নিচে নামার চেষ্টা করে। তখন তাদের প্রতি ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে আন্দোলনকারীরা। এ ঘটনায় মো. জালাল উদ্দিন জুবায়ের, আব্দুল্লাহ আল সাইমুন, ওয়াহিদুল রহমান সুজন, ইরফানুল আলম, জাহেদ অভি, মেহরাজ সিদ্দিকী পাভেল, জাবেদ ইকবালসহ ১৫ থেকে ২০ জন আহত হয়েছেন।’
আহতদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। একজনকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে বলে জানান মাহমুদুল করিম।
মহসীন কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক আনোয়ার পলাশ অভিযোগ করেন, ছাত্রদল ও শিবিরের চিহ্নিত অস্ত্রধারী ক্যাডাররা জালালসহ তিনজনকে পিটিয়ে আহত করেছে।
চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর বলেন, শিবিরের হামলায় শতাধিক ছাত্রলীগ কর্মী আহত হয়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান আওয়ামী লীগের যুব ক্রীড়া উপ-কমিটির সদস্য নুরুল আজিম রনি ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘আন্দোলনকারীরা আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করেছে। তাদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ২০ জন কর্মী ওই পাঁচতলা ভবনের ছাদে আশ্রয় নিয়েছিল। আন্দোলনকারীর ছদ্মবেশে বিএনপি-জামায়াতের লোকজন তাদের পিটিয়ে ছাদ থেকে ফেলে দেয়। খবর পেয়ে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সদস্যরা আমাদের ১৫ জন কর্মীকে সেখান থেকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।’
এ প্রসঙ্গে কোটা বিরোধী আন্দোলনের চট্টগ্রামের সদস্য মোশাররফ হোসেন গণমাধ্যমে বলেন, ‘ওই ছয়তলা ভবনের ছাদ থেকে ছাত্রলীগের কয়েকজন উচ্ছৃঙ্খল কর্মী আমাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছিল। এতে কয়েকজন ছাত্র আহত হন। একপর্যায়ে তাদের ছাদ থেকে নামিয়ে আনা হয়। ছাদ থেকে কাউকে ফেলে দেওয়া হয়নি। তারা ভয়ে পাইপ বেয়ে নামতে গিয়ে পড়ে গিয়ে আহত হয়েছেন।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, ‘মুরাদপুরে সংঘর্ষের ঘটনায় অনেকে আহত হয়েছেন। এর মধ্যে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। ওই ভবনের ছাদে কী হয়েছিল, এখনও আমরা বিষয়টি জানি না। এ ব্যাপারে আমরা খোঁজ নিচ্ছি।’
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]