
উপজেলা পরিষদ নির্বাচন চতুর্থ ধাপে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর এক সমর্থকের ওপর হামলা চালায় দোয়াত-কলম প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকরা। এই ঘটনায় আলফাডাঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ দেন মারধরের শিকার ভুক্তভোগী মুছাব্বির হোসেন। গত ৫ জুন, বুধবার (ভোট গ্রহণের দিন) এই ঘটনার পর এখনো অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি থানা পুলিশ।
৮ জুন, শনিবার আলফাডাঙ্গা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সেলিম রেজা বলেন, ‘এটা ছোট একটা ঘটনা। অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।’ কাকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি (ওসি) কিছু সময় চুপ থাকেন। বিষয়টি পরে জানাবেন জানিয়ে ফোন কেটে দেন।
অভিযোগ উঠেছে, হামলাকারীরা সবাই স্থানীয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তাদের সঙ্গে থানা পুলিশের সু-সম্পর্ক রয়েছে। এ কারণে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না। যাদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে, তারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিন্তু পুলিশ তদন্তের নামে কালক্ষেপণ করছে।
জানা গেছে, নির্বাচনে দোয়াত-কলম প্রতীকের প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খান বেলায়েত হোসেনের সমর্থকরা মুছাব্বির হোসেনকে মারধর করে। মুছাব্বির আনারস প্রতীকের প্রার্থী আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সদস্য শেখ তাহিদুর রহমানের সমর্থক। ভোটে দুই প্রার্থীই পরাজিত হয়েছেন।
নির্বাচনের দিন মারধরের শিকার মুছাব্বির এখনও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। বর্তমানে তিনি ঢাকায় চিকিৎসা নিচ্ছে। এখনও তার শরীরের বিভিন্ন অংশে জখম আছে। ঘটনার দিন দুর্বৃত্তরা যে টাকা ও মূল্যবান জিনিস লুটে নিয়েছিল- তাও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
ভুক্তভোগী মুছাব্বির হোসেন বলেন, ‘আমাকে এতো নিষ্ঠুরভাবে পেটালো কিন্তু অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না পুলিশ। বরং আমাকেই হুমকি দিচ্ছে প্রতিপক্ষরা। তারা পুনরায় আমার ওপর হামলা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা করছি। এলাকায় তারা বলে বেরাচ্ছে- পুলিশ ম্যানেজ করেছি; আমাদের কিছুই হবে না। বাস্তবেই দেখছি, পুলিশ তাদের ধরছে না।’
মুছাব্বির জানান, শুক্রবার থানা থেকে একজন উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফোন করেছিলেন। তিনি বলেছেন, আমি লিখিত যে অভিযোগ দিয়েছি সেটা সংশোধন করতে হবে। তবে তার কথা আমি মেনে নিইনি- বলেন মুছাব্বির।
সেদিন যা ঘটেছিল
উপজেলা নির্বাচনের দিন গোপালপুর ইউনিয়নের কামারগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সকাল সাড়ে দশটার দিকে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে গুরুতর আহত হন মুছাব্বির হোসেন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়। পরে থানা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন তিনি।
লিখিত অভিযোগে মুছাব্বির বলেন, সকালে ভোট দিতে গিয়েছিলাম। ভোট দিয়ে ফেরার পথে কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকায় তার ওপর হামলা চালায় দোয়াত-কলম প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী বেলায়েত হোসেনের সমর্থকরা।
গোপালপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ইনামুল হাসানের নেতৃত্বে অন্তত ডজনখানেক ব্যক্তি আমাকে প্রথমে গালিগালাজ করে। পরে বেধড়ক মারধর করে।
লিখিত অভিযোগে তিনি হামলাকারীদের কয়েকজনের নাম উল্লেখ করেছেন। তারা হলেন- গোপালপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ইনামুল হাসান, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য এবং বিএনপির সক্রিয়কর্মী তবিবর তালুকদার ওরফে তবিবর রহমান তবি, হাদী, শামীম, রফিকুল ও সেলিম।
মুছাব্বিরের অভিযোগ, হামলাকারীরা তার হাতঘড়ি ও প্যান্টের পকেটে ৩৫ হাজার টাকাসহ মানিব্যাগ নিয়ে যায়। এছাড়াও সেখানে বেশকিছু জরুরি কাগজপত্র ছিল।
বিবার্তা/রোমেল/এমজে
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]