
তিন বছর আগে দুঃসম্পর্কের চাচার দেয়া জায়গায় মাথা গোঁজার ঠাঁই হয় আব্দুল মজিদ ও এসমোতারা দম্পতির। স্বামী আব্দুল মজিদ এক পা বিকল প্রায়, করতে পারেন না কোনো কাজ। সংসারের ঘানি টানতে করেন ভিক্ষা। ভিক্ষুক এই দম্পতির তিন ছেলে ও এক মেয়ে।
অভাবের তাড়নায় বড় ছেলে আশরাফুল (১৬) পড়ালেখা করতে পারেনি। এখন সে কাজ করে সংসারের দায়িত্ব নিয়েছে। অপর দিকে ছোট মেয়ে মনি (১৪) কে বিয়ে দিয়েছেন পরিবার। বাকি আরও দুই ছেলে রয়েছে পরিবারে। তবে মেয়েকে বিয়ে দিলেও দায়িত্ব কমেনি বরং অনেক গুণ বেড়েছে দায়িত্ব। সেও থাকেন এখন বাবা-মায়ের সাথে।
ভিক্ষাবৃত্তি করে চার সন্তান ও স্ত্রীকে মুখে খারাব তুলে দেন বাবা আব্দুল মজিদ। অন্যের জায়গায় সাজানো-গোছানো সংসার নিমেষেই তছনছ হয়ে গেলো। রান্নাঘর ও থাকার ছোট্ট ঘরটি ভেঙে চুড়ে শেষ হয়ে গেছে। এখন খোলা আকাশের নিচে এই পরিবার। ঘরে মজুদ থাকা চাল-সবজি নষ্ট হয়ে গেছে।
শনিবার (২৩ মার্চ) হঠাৎ কালবৈশাখি ঝড়ে কুড়িগ্রামের চিলমারীর থানাহাট ইউনিয়নের মাচাবান্দা এলাকায় এই দম্পতির রান্না ঘর ও ছোট্ট একটি থাকার ঘর দুমড়েমুচড়ে একাকার হয়ে গেছে। এখন তারা আশ্রয় নিয়েছে পাশেই অন্যের একটি ঘরে।
বিভিন্ন মাধ্যমে খবর পাওয়ার পর ২৪ মার্চ ,রবিবার সরেজমিনে খোঁজ নেওয়া হয় ওই দম্পতির বাড়িতে। দুপুর ১২টার দিকে কথা হয় এসমোতারা বেগমের সঙ্গে। এতক্ষণে স্বামী বেরিয়েছেন ভিক্ষা করতে। এসমোতারা এই সময়ে ভাঙা ঘর টানাটানি করছেন। সব শেষ হয়েছে। কিছুই নেই। থাকার ঘরটি নড়বড়ে হওয়ায় গতকাল বাতাসের ভেঙে যায়৷
এসমোতারা জানান, গতকাল হঠাৎ ঝরে সব শেষ হয়ে গেছে। থাকার আশ্রয় টুকু আর থাকল না। অন্যের জমিতে আশ্রয় নিয়েছি, অনেক কষ্টে একটি ঘর তুলেছি। সেটাই শেষ, এখন থাকব কই?
তিনি আরও বলেন, স্বামী প্যারালাইজড ঠিক ভাবে চলতে পারেন না। কাজও করতে পারেন না। উপায় না পেয়ে ভিক্ষা করে সংসার চালান। অর্থের অভাবে ছেলে মেয়েদের পড়াতে পারি নাই। গতকাল রাতে পাশের বাড়ির লোকজন খাবার দিয়েছে খেয়ে রোজা আছি। ঘরে যে চাল ছিল সব ভিজে একাকার হয়েছে। কি করব, কি খাবো এই নিয়ে চিন্তায় আছেন বলে জানান তিনি।
সরকারি কোনো ঘর পাননি বা আবেদন করেছিলেন কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, যাদের টাকা আছে তারাই ঘর পাবে। আমরা পাবো কীভাবে? নিজের জায়গা বলতে কিছু নেই। তারপর উপজেলায় গিয়েছি ঘর চেয়েছি পাবো কিনা জানি না।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রুকুনুজ্জামান শাহীন জানান, আমি খবর পেয়েছি, উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ওই পরিবারকে সহযোগিতা করা হবে।
বিবার্তা/রাফি/সউদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]