ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নববধূকে গলা কেটে হত্যা
প্রকাশ : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৪:৫৩
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নববধূকে গলা কেটে হত্যা
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

মাস সাতেক আগে মোবাইল ফোনে বিয়ে। স্ত্রীকে ঘরে তুলবেন বলে সপ্তাহ তিনেক আগে দেশে আসেন আব্দুল হামিদ। চার দিন আগে ঘরে তুলেন নববধূকে। বাসর রাতে ফুলে সাজানো খাট এখনো অক্ষতই আছে, আর সেখানেই মিলল নববধূর রক্তাক্ত মরদেহ।


ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের হীরাপুর গ্রামের মধ্যপাড়ায় মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। হত্যার শিকার নববধূ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বাসুদেব গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে তাসলিমা আক্তার। ঘটনার পর ঘাতক প্রবাসী স্বামী পালিয়েছে।


ঘাতক স্বামীর নাম আব্দুল হামিদ। সে হীরাপুর গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে।


তবে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা ছুরি উদ্ধার করেছে।


এদিকে এ ঘটনার পর তাসলিমার পরিবার শোকে স্তব্ধ। কি কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে তারা বুঝে উঠতে পারছেন না। এলাকার লোকজনও হত্যাকাণ্ডের সম্পর্কে কিছু বলতে পারছেন না।


তবে এ ঘটনায় আহত আব্দুল হামিদের ভাই হানিফের কাছ থেকে ঘটনা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।


নিহত তাসলিমার লাশ আখাউড়া থানায় রয়েছে। ১৪ ফেব্রুয়ারি, বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে তার লাশের ময়না তদন্ত হওয়ার কথা রয়েছে।


এ ঘটনায় তাসলিমার পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। ঘাতককে গ্রেফতারের চেষ্টা করছে পুলিশ।


এলাকাবাসী ও নববধূর স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, হীরাপুর গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফ মিয়ার প্রবাসী ছেলে আব্দুল হামিদের সঙ্গে সাত-আট মাস আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলার বাসুদেব ইউনিয়নের বাসুদেব গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে তাসলিমা আক্তারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে বিয়ে হয়। গত শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে তাসলিমাকে স্বামীর বাড়িতে তুলে আনা হয়। পরে বিয়ের অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতাও শেষ করা হয়।


সূত্র জানায়, মঙ্গলবার দুপুরে হঠাৎ আশেপাশের লোকজন হৈচৈ শুনে হামিদের বাড়িতে এসে দেখে হামিদ গলা কেটে স্ত্রীকে হত্যা করেছে। এসময় তাকে বাঁচাতে গিয়ে হামিদের ভাই হানিফ আহত হয়। আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।


তাসলিমার বড় ভাই আব্দুল কুদ্দুছ ঘটনাস্থলে এসে বোনের লাশ দেখে বার বার মুর্ছা যাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, ‘এমন কি হলো বুঝতে পারছি না। সুখের আশায় বোনকে বিয়ে দিয়েছি। আমি বোনের হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।’


স্থানীয় কয়েকজন জানান, হামিদ প্রায় ছয় বছর ধরে প্রবাসে ছিল। ১৫-২০ দিন আগে সে দেশে ফিরলেও মানুষের সঙ্গে খুব একটা মিশত না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও তাকে দেখা যেত না বলে স্থানীয় অনেকে জানিয়েছেন।


ঘটনাস্থলে আসা আখাউড়া থানার উপ-পরিদর্শক (সাব ইন্সপেক্টর) মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘সোয়া ২টার দিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে দেখি বিছানায় গলা কাটা রক্তাক্ত অবস্থায় নববধূ পড়ে আছে।’


আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নূরে আলম বলেন, ‘কি কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে আমরা কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না। আহত ব্যক্তির কাছ থেকে জানার চেষ্টা করা হবে। পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দিলে সে অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’


বিবার্তা/নিয়ামুল/এমজে

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com