
ঢাকার ধামরাইয়ে বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন ফ্রেম হাউস ফুটওয়্যার লিমিটেড নামে একটি জুতা কারখানার শ্রমিকরা। এতে মহাসড়কটিতে প্রায় ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
১০ ফেব্রুয়ারি, শনিবার সকাল ৮টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ধামরাই থানা বাসস্ট্যান্ডের ঢাকাগামী লেন অবরোধ করে ওই কারখানার প্রায় দুই হাজার শ্রমিক। এসময় মহাসড়কের প্রতিটি লাইনের দুপাশেই ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।
পরে শিল্প পুলিশ এসে শ্রমিক ও মালিক উভয়পক্ষের সঙ্গে কথা বলে শ্রমিকদের কারখানায় ফেরত পাঠায়।
এসময় শিল্প পুলিশের পাশাপাশি ধামরাই থানা পুলিশের একাধিক অফিসার একাধিকবার কথা বলেও আন্দোলনরত শ্রমিকদের কাজে ফেরাতে পারেনি। এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত আন্দোলনে অংশ নেয়া শ্রমিকদের কাজে ফেরাতে পুলিশের পাশাপাশি কারখানা কর্তৃপক্ষের লোকজন চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জানান, প্রতি মাসে মাত্র ৭,১০০ টাকা বেতন পান শ্রমিকরা। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে এই বেতনে তাদের স্বাভাবিক জীবন পরিচালনা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। শ্রমিকরা সর্বনিম্ন ১২,৫০০ টাকা বেতনের দাবি জানিয়ে আসছেন। বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাধিকবার কথা বললেও তারা দাবি মেনে নেননি। এরই জেরে শনিবার শ্রমিকরা কারখানা সংলগ্ন মহাসড়কে অবরোধ করেন।
শ্রমিকদের দাবি, বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের দাম অনেক বেশি, তার তুলনায় আমাদের বেতন অতি নগন্য। বর্তমান বাজারে ৭ হাজার টাকা বেতনে আমাদের কি হয়? আমরাও তো সঠিক নিয়মে কাজ করি তবে কেন আমাদের বেতন এতো কম। বেতন বৃদ্ধি না করলে আমরা কেউ কাজে যোগ দিবনা।
সহকারী জেনারেল ম্যানেজার (এজিএম প্রোডাকশন) জামাল বসুনিয়া বলেন, পোশাক কারখানার শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির গেজেট হলেও জুতা কারখানা শ্রমিকদের বিষয়ে গেজেট হয়নি। এরপরও শ্রমিকরা দাবি জানিয়েছেন। কর্তৃপক্ষ আগামী মাসেই বর্ধিত বেতন দেওয়ার কথা ভাবছে। বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
এবিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ জানায়, সরকার বেতন বাড়িয়ে যে গেজেট করেছে সেই গেজেট পোশাক কারখানার জন্য প্রযোজ্য। তাই জুতা তৈরির শ্রমিকদের যখন গেজেট দেয়া হবে তখন নিয়ম মেনে বেতন বৃদ্ধি করা হবে।
শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) আনোয়ার হোসেন খান বলেন, পোশাক কারখানায় যে নূন্যতম বেতন দেওয়া হয়েছে। জুতা কারখানা শ্রমিকরা তা পাননি। একইভাবে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিকরা আন্দোলনে নামে।
অবরোধের কারণে মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে বিভিন্ন অফিসগামী যাত্রীবাহি বাস ও মাইক্রোবাসে থাকা যাত্রীরা চরম ভোগান্তীতে রয়েছেন।
মোশাররফ হোসেন নামে এক স্কুল শিক্ষক বলেন, স্কুলে ৯টায় পৌঁছানোর কথা। যথাসময়ে রওয়ানা দিয়েছি কিন্তু এই আন্দোলনের ফলে যে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে তাতে ১২টা বেজে যাবে স্কুলে পৌঁছাতে।
এক ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, রাস্তার যে অবস্থা তাতে দুপুর হয়ে যাবে কর্মস্থলে পৌঁছাতে। বিকল্পভাবে যাওয়ারও কোন অবস্থা নাই।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]