মাস্টার ও ভিসা কার্ড প্রতারণা চক্রের ২ সক্রিয় সদস্য’কে গ্রেফতার করেছে সিআইডি
প্রকাশ : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২০:০৩
মাস্টার ও ভিসা কার্ড প্রতারণা চক্রের ২ সক্রিয় সদস্য’কে গ্রেফতার করেছে সিআইডি
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

হ্যালো, কমিউনিটি ব্যাংক থেকে বলছি। আপনার অ্যাকাউন্টের চার ডিজিটের পিনটি পরিবর্তন করে ছয় ডিজিটের পিন সেট করতে হবে। না হলে আমার কার্ডটি বন্ধ হয়ে যাবে- এভাবেই প্রতারণার মাধ্যমে গ্রাহকের সকল তথ্য নিয়ে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) বিকাশের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিতেন তারা।


সাম্প্রতিক সময়ে গত বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দিনাজপুর এলাকায় ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে মাস্টার কার্ড ও ভিসা কার্ডধারীদের অ্যাকাউন্টের তথ্য নিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়া প্রতারণা চক্রের ২ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে সিআইডির সাইবার ক্রাইম ইউনিট।


গ্রেফতারকৃতরা হলেন মো. রবিউল মিয়া এবং নজরুল ইসলাম। গ্রেফতারকালে তাদের কাছ থেকে সর্বমোট ৫টি মোবাইল ফোন এবং সংযুক্ত ১০টি সিম জব্দ করা হয়েছে। জব্দকৃত সিমগুলোর অধিকাংশই ভুয়া ব্যাক্তিদের নামে নিবন্ধিত।


‘বর্তমান ডিজিটাল প্রযুক্তির যুগে ভিসা ও মাস্টার কার্ড ব্যবহার করে পৃথিবীর যেকোনো দেশে ইলেকট্রনিক পেমেন্ট, কেনাকাটা, এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলন ও মোবাইল রিচার্জসহ বিভিন্ন কাজ করা যায়। এই কার্ড ব্যবহার করে বিকাশ অ্যাকাউন্টে টাকা যুক্ত বা এড করা যায়। আর এই সুযোগটিকে কাজে লাগিয়ে কার্ড ব্যবহারকারীদের একাউন্ট হ্যাক করে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে আসছিল একটি প্রতারক চক্র।


এই ধরনের কয়েকটি ঘটনায় ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা হয়েছে। সিআইডি সাইবার ইন্টেলিজেন্স টিম মামলাগুলোর ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং এ চক্রের সদস্যদের শনাক্ত করে। পরবর্তিতে দিনাজপুর জেলায় এলাকায় অভিযান চালিয়ে মো. রবিউল মিয়া এবং নজরুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। তাদেরকে দিনাজপুর জেলা হতে গ্রেফতার করা হলেও তাদের দুজনের স্থায়ী ঠিকানাই ফরিদপুর জেলার ভাংগা থানায় এবং সম্পর্কে তারা পরস্পর আত্মীয়। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিতেই তারা দিনাজপুরে বাসা ভারা নিয়ে এই প্রতারণার কাজ করে আসছিলো।


গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারণার কৌশল সম্পর্কে জানা যায়, এ চক্রের এক সদস্য বিভিন্ন কার্ডধারীদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে গ্রেফতারকৃত অপরজনের কাছে পাঠায়। গ্রেফতারকৃতরা কমিউনিটি ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ও ব্র্যাক ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংকের কার্ড ডিভিশনের কর্মকর্তা সেজে ভিসা এবং মাস্টার কার্ড ব্যবহারকারীদের নাম্বারে ফোন দিয়ে তথ্য হালনাগাদ, কার্ডের পিন নম্বর চার ডিজিটের পরিবর্তে ছয় ডিজিট ও ইমেইল আপডেট না করার কারণে কার্ডের কার্যক্রম বন্ধ হয়েছে মর্মে জানায়। অনেক কার্ডধারীর অ্যাকাউন্টে বড় অংকের ব্যালেন্স থাকায় আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পরে প্রতারকদের কথা অনুযায়ী কাজ করতে থাকে।


এভাবে সংগৃহীত তথ্য থেকে ১৬ ডিজিটের কার্ডের নম্বর, কার্ডের মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ, কার্ডের বিপরীত পাশে উল্লিখিত ৩ ডিজিটের (সিকিউরিটি পিন নম্বর) সিভিভি নম্বর সংরক্ষণ করে। পরবর্তীতে গ্রাহকদের কাছে ওটিপি (OTP) কোড পাঠায়। কৌশলে পাঠানো ওটিপি (OTP) কোড সংগ্রহ করে বিকাশ অ্যাপে ঢুকে অ্যাড মানি’ অপশনের কার্ড টু বিকাশের মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ করে নেয় তারা।


মাস্টার কার্ড বা ভিসা কার্ড প্রতারণায় একাধিক ধাপে কয়েকটি তথ্যের প্রয়োজন হয়। যেমন- কার্ড নাম্বার, মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ, নিরাপত্তা পিন নাম্বার, ওটিপি কোড ইত্যাদি। এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, নিজের পাসওয়ার্ড ও ওটিপি কোড কখনোই কারো সঙ্গে এমনকি সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও কখনোই শেয়ার করা উচিত নয়।


বিবার্তা/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com