
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার চকসাকোয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের এডহক কমিটি গঠনে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বিজ্ঞ আদালতে মামলা চলমান থাকা ও কমিটি গঠনের অনুমোদন না দিতে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা লিখিত ভাবে অনুরোধ করলেও সেটি আমলে নেয়নি দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড। সংক্ষুব্ধ হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন ঐ স্কুলের এক শিক্ষক।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চকসাকোয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী উপস্থিতি ও শিক্ষার পরিবেশ নিয়ে অসংগতি থাকায় দীর্ঘদিন তাদের বেতন বন্ধ ছিল। এই অবস্থায় বেতন প্রদান ও এডহক কমিটি গঠনে শিক্ষক প্রতিনিধি মনোনয়ন বিষয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন ঐ স্কুলের সহকারী শিক্ষক মো. আ. রশিদ সরকার। এই মামলার পরে আদালত খানসামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বেতন প্রদান করার নির্দেশ দিলেও শিক্ষক প্রতিনিধি মনোনয়ন বিষয়ে কোন আদেশ না দেয়ায় মামলা চলমান রয়েছে।
জানা যায়, ৬ মাসের জন্য এডহক কমিটির সদস্য সংখ্যা ৪ জন। এরা হলেন অভিভাবক সদস্য, শিক্ষক প্রতিনিধি, সভাপতি ও পদাধিকারবলে সদস্য-সচিব পদে প্রতিষ্ঠান প্রধান। অভিভাবক সদস্য পদে মনোনয়ন দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আর শিক্ষক প্রতিনিধি পদে মনোনয়ন দেন জেলা শিক্ষা অফিসার। সভাপতি নির্ধারণ করেন শিক্ষা বোর্ড।
এই অবস্থায় চকসাকোয়া উচ্চ বিদ্যালয় সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থে ও নিয়মিত কমিটি গঠন করার লক্ষ্যে ঐ স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. তহিদুল ইসলাম বুলেট দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের কাছে এডহক কমিটি গঠনের প্রস্তাব জমা দেন। এই সময়েই বাঁধে মূল বিপত্তি ও জটিলতা।
কমিটি গঠনের জন্য গত নভেম্বর মাসের ২৯ তারিখে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শিক্ষক প্রতিনিধি মনোনয়ন দিলেও পরে জানতে পারেন যে শিক্ষক প্রতিনিধি মনোনয়ন বিষয়ে বিজ্ঞ খানসামা সহকারী জজ আদালত, দিনাজপুর-এ মামলা চলমান রয়েছে তাই শিক্ষক প্রতিনিধি সদস্য মনোনয়ন বাতিলসহ এডহক কমিটি অনুমোদন না দেয়ার জন্য ১২ ডিসেম্বর দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শককে অনুরোধ করেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম।
তবে এই চিঠি উপেক্ষা করে গত ৯ জানুয়ারি এডহক কমিটি অনুমোদন দেন বিদ্যালয় পরিদর্শক মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল। এই ঘটনায় সংক্ষুব্ধ হয়ে ২৪ জানুয়ারি আদালতে মামলা দায়ের করেছেন ঐ স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. জুলফিকার রহমান।
এডহক কমিটির বৈধতা নিয়ে মামলার বাদী ঐ স্কুলের শিক্ষক জুলফিকার রহমান বলেন, শিক্ষক প্রতিনিধি সদস্য মনোনয়নের বিষয়ে সকল শিক্ষকদের সাথে কোন প্রকার আলাপ-আলোচনা ছাড়াই জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সেই সাথে মামলা চলমান থাকার পরেও এডহক কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে তাই ন্যায় বিচারের স্বার্থে আমি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। আশাকরি আমরা ন্যায় বিচার পাব আদালতে।
এই বিষয়ে ঐ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আ. রশিদ সরকার বলেন, আমরা মামলা প্রত্যাহারের আবেদন দিয়েছি। ১৩ ফেব্রুয়ারি মামলার ধার্য্য তারিখ আছে আশাকরি সেদিন এটি নিষ্পত্তি হবে।
দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, সুষ্ঠুভাবে কার্যক্রম পরিচালনার স্বার্থে এডহক কমিটি গঠন করা হয়। তবে আইনি কোন জটিলতা থাকলে কমিটি বাতিল হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এই বিষয়ে ফোনে বিস্তারিত কথা বলা সম্ভব নয়। অফিসে আসেন কথা হবে।
বিবার্তা/জামান/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]