
নড়াইলের তিনটি উপজেলায় মাঠের পর মাঠ সরিষার হলুদ ফুলে ভরে উঠেছে। মধু চাষিরাও ব্যস্ত হয়ে পড়েছে সরিষার ক্ষেত থেকে মধু সংগ্রহে। জেলার বিভিন্ন এলাকার ফসলের মাঠে গিয়ে এমন চিত্রই দেখা গেছে। ক্ষেতের পাশে পোষা মৌ মাছির শত শত বাক্স রেখে মধু সংগ্রহ করছেন চাষিরা।
চাষিরা সাধারণত পছন্দের একটি সরিষা ক্ষেতের পাশে খোলা জায়গায় চাক ভরা বাক্স ফেলে রাখে আর এর ভিতরে রাখা হয় একটি রানি মৌমাছি। রানি মৌমাছির কারণে ওই বাক্সে মৌ মাছিরা আসতে থাকে। মৌ মাছিরা ফুল থেকে মধু এনে বাক্সের ভেতরের চাকে জমা করে। আর চাক থেকেই মধু সংগ্রহ করেন চাষিরা।
প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মৌ-চাষিরা এসব মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করেন। মৌ-চাষের মাধ্যমে চাষিরা একদিকে যেমন আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন, অন্যদিকে দূর হচ্ছে বেকারত্ব।
সরিষা ফুলের মধু খাঁটি ও সুস্বাদু হওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থানসহ বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ও স্থানীয় মৌ চাষিরা এসেছে নড়াইল জেলার বিভিন্ন এলাকায়।
সিরাজগঞ্জ উল্লাপাড়া থেকে আসা মৌ-চাষি হাসু মিয়া বলেন, আমরা সরিষা ক্ষেত থেকে বছরে চার মাস মধু সংগ্রহ করে থাকি। অন্য আট মাস কৃত্রিম পদ্ধতিতে চিনি খাইয়ে মৌ মাছি পুষে রাখা হয়। ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সরিষা থেকে মধু সংগ্রহের উপযুক্ত সময়। তখন সর্বত্রই সরিষার ফুল ফোটে।
তিনি আরও বলেন, আকার ভেদে একটি বাক্সে ৩০ থেকে ৪০ কেজি পর্যন্ত মধু পাওয়া যায়। এখানে মৌ চাষের বিশেষ বাক্স কলোনি রয়েছে ১০০টি। প্রতিটি কলোনিতে খরচ হয় ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা। আর প্রতি কেজি মধু বিক্রি করা হয় ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা দরে। এতে প্রতি কলোনিতে লাভ হয় প্রায় ৫ হাজার টাকা। এছাড়া মধু চাষের ফলে সরিষার ফলন বৃদ্ধি পায় এবং পোকা মাকড় আক্রমণ কম করে।
নড়াইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দীপক কুমার রায় বলেন, আমরা মধু চাষিদের সরিষার জমিতে মধু সংগ্রহের উৎসাহিত করে থাকি, ফলে সরিষার পরাগায়ন যেমন ভালো হয়, এতে করে তেলের উৎপাদন বাড়ে পাশাপাশি মধুর বাজার মূল্যে ভালো হওয়ায় চাষিরা লাভবান হবে। তবে এ জেলায় আরও বেশ কয়েকটি চাষির দল এসেছে।
বিবার্তা/শরিফুল/জবা
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]