
পাপিয়া ও আলমগীর দম্পত্তির প্রথম এবং দ্বিতীয় সন্তানও কন্যা। তৃতীয় সন্তানও কন্যা জন্ম নেয়ায় অনেকটা অভিমান করেই হাসপাতালে অন্যের কোলে তুলে দিয়ে বাড়ি ফিরেছিল পাপিয়া খাতুন।
তবে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের সহায়তায় পাপিয়ার তৃতীয় কন্যাসন্তান (পুষ্প) ফিরে পেল তার আপন ঠিকানা। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পুষ্পকে তার মা-বাবার কোলে তুলে দিয়েছেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ডা. ওয়াহিদ মাহমুদ রবিন, সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাজ্জাদ হোসেন, জেলা সমাজসেবা অফিসের প্রবেশন অফিসার সানোয়ার হোসেন ও সদর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মৌমিতা পারভীনসহ স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ভোরে প্রসব বেদনা উঠলে সকালে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার দর্শনা থানাধীন ডিহি কেষ্টপুর গ্রামের আলমগীর হোসেনের স্ত্রী পাপিয়া খাতুনকে সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানেই কন্যা সন্তান প্রসব করেন পাপিয়া।
পরে তাকে ভর্তি করা হয় গাইনি ওয়ার্ডে। তবে কিছুক্ষণ পর কন্যা সন্তানকে আলমডাঙ্গা উপজেলার ছত্রপাড়া গ্রামের বিলকিস বানু নামে এক নারীর কাছে রেখে পালিয়ে যান পাপিয়া, তার বাবা ও পরিবারের সদস্যরা।
জানা গেছে, পাপিয়া খাতুন তৃতীয়বার সন্তান সম্ভবা হলে গত নয় মাস ধরে তার বাবার বাড়িতে ছিলেন। পাপিয়া তার বাবার বাড়িতে থাকলেও আলমগীর তার স্ত্রী সন্তানদের ঠিকমতো খোঁজ নিতেন না।
গেল ২০দিন আগে মোবাইল ফোনে স্ত্রী সন্তানদের খোঁজ নিলেও বৃহস্পতিবার পাপিয়া খাতুনের সন্তান হওয়ার বিষয়ে কিছুই জানতেন না আলমগীর হোসেন।
সন্তান ফিরে পাওয়ার পর পাপিয়া খাতুন বলেন, আমার দুই মেয়ের পর আবার মেয়ে সন্তান হয়। আমি ইচ্ছে করেই তাকে হাসপাতালে অন্যের কাছে দিয়েছিলাম। তবে এখন মেয়েকে ফিরে পেয়ে আমি খুশি।
আলমগীর হোসেনের বাবা সিরাজুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে সন্তানের বিষয়ে পাপিয়ার কাছে জানতে চাইলে সে বলে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে মৃত কন্যা সন্তান হয়েছে। ওয়াশ করে ডেলিভারি করার কারণে সন্তানকে কেটে বের করা হয়েছে।
তিনি আরও আরও বলেন, শুক্রবার সকালে পত্রিকা ও টিভির খবর দেখে ঘটনা জানতে পারি তারপর আমরা জেলা প্রশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করি। পরবর্তীতে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও সমাজসেবা অফিসের মাধ্যমে আমরা পুষ্পকে ফিরে পাই।
জানতে চাইলে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা-তুজ-জোহরা বলেন, নবজাতকের আসল পরিচয় জানার পর আমরা তার মা-বাবার কাছে ফিরিয়ে দিতে পেরেছি। আমরা তার নিয়মিত খোঁজ রাখবো। প্রয়োজনে তাদের সব ধরনের সহযোগিতা দেয়ার চেষ্টা করবো।
বিবার্তা/আসিম/জবা
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]