তাপমাত্রা বেড়েও চুয়াডাঙ্গায় বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ
প্রকাশ : ২৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১০:০৫
তাপমাত্রা বেড়েও চুয়াডাঙ্গায় বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রার পারদ প্রতিদিনই নামা ওঠা করছে। চলতি শীত মৌসুমে তিন দফায় পাঁচ দিন মৃদু শৈত্যপ্রবাহের পর গতকাল মঙ্গলবার মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ শুরু হলেও আজ আবার তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে।


বুধবার (২৪ জানুয়ারি) সকাল ৬টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৬ শতাংশ। আর সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৫ শতাংশ।


এর আগে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৬ টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সকাল ৯ টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা এ মৌসুমে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।


আজ সকালে দেখা মিলেছে সূর্যের। তাছাড়া গতকালের তুলনায় তাপমাত্রা বেড়েছে। তবে উত্তাপহীন সূর্য ও উত্তর থেকে ধেয়ে আসা কনকনে ঠান্ডা বাতাসে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। তীব্র শীতে নিম্ন আয়ের মানুষেরা পড়েছেন চরম বিপাকে। টান পড়ছে আয়-রোজগারে।


দিনমজুর রবজেল হোসেন বলেন, কাজের আশায় তীব্র শীতের মধ্যেই শহরে আসতে হয়। এই শীতে কাজ পাবো না জেনেও আসি৷ যদি কোনো একটা কাজ পেয়ে যায়। কাজ না করলে সংসার তো চলবে না।


শহরের ভ্যান ও অটোভ্যান চালকেরা জানান, প্রচণ্ড শীতে মানুষ তেমন প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হচ্ছে না। ঠান্ডা বাতাসের কারণে খোলা ভ্যানে কেউ উঠতে চাচ্ছে না। এতে আমাদের আয় রোজগার অনেক কমে গেছে।
তারা আরও বলেন, যারা মহাজনের কাছ থেকে ভাড়ায় অটোভ্যান ও ভ্যান চালায় তারা সব চেয়ে বেশি বিপদে আছি। ভাড়ার টাকা আয় না হলেও ভ্যান ভাড়ার টাকা মহাজনকে পরিশোধ করতেই হবে।


চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান জানান, গতকাল চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে। আজ তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও মৃদু শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে।


এদিকে, তীব্র শীতের কারণে চুয়াডাঙ্গা জেলা সদর হাসপাতাল, ৩টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বেসরকারি হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের চেম্বারে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত মানুষের ভিড় বাড়ছে। বিশেষ করে সদর হাসপাতালের শিশু ও মেডিসিন ওয়ার্ডগুলোয় ধারণক্ষমতার কয়েক গুণ বেশি রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।


চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, শীতে শিশু এবং বয়স্ক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কয়েকদিন ধরে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। তীব্র শীতে বেশি নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। এসব রোগীদেরকে চিকিৎসা এবং সবাইকে সচেতন থাকার পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। টাটকা ও গরম খাবার খাওয়াতে হবে। কোনো ধরনের বাসি খাবার খাওয়া যাবে না। পানি ফুটিয়ে পান করাতে পারলে ভাল। আর শিশুদের সকাল সন্ধ্যায় গরম পোশাক দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে।


চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, জেলার ছিন্নমূল ও শীতার্ত মানুষদের শীতের তীব্রতা থেকে রক্ষা পেতে দুই ধাপে ২৪ হাজার ৩০০টি কম্বল বরাদ্দ এসেছে। প্রথম ধাপে ১৭ হাজার ৬০০ এবং দ্বিতীয় ধাপে ৬ হাজার ৭০০ টি কম্বল পাওয়া গেছে।


এসব কম্বল ইতোমধ্যে জেলার চারটি উপজেলা ও পৌরসভায় পাঠানো হয়েছে। কম্বল বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। ছিন্নমূল ও অসহায় মানুষ যেন বঞ্চিত না হয় সে জন্য সরজমিনে ঘুরে ঘুরে দেখছেন জেলা প্রশাসক।


বিবার্তা/আসিম/মাসুম

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com